ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এক যাত্রীর প্রসব বেদনায় দুই ফ্লাইটের জরুরী অবতরণ

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২৬ এপ্রিল ২০১৮

এক যাত্রীর প্রসব বেদনায় দুই ফ্লাইটের জরুরী অবতরণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এক যাত্রীর প্রসব বেদনায় পরপর দুদিন দুই এয়ারলাইন্সের দুটি ফ্লাইট জরুরী অবতরণ করতে হয়েছে। অনামিকা খাতুন নামের গর্ভবতী এই যাত্রীর কারণে প্রথমে সৌদি এরাবিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি ও পরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট জরুরী অবতরণ করে। এ নিয়ে চলে তোলপাড়। সৌদি থেকে ঢাকা আসার পথে ঘটে এ ঘটনা। জানা গেছে, গত বুধবার ২৬ বছরের গর্ভবতী অনামিকা খাতুন সৌদি আরবের জেদ্দা থেকে সৌদি এরাবিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করেন। ফ্লাইটটি মাসকটের আকাশে পৌঁছে পর হঠাৎ তার প্রসব বেদনা শুরু হয়। এতে তার প্রাণ রক্ষার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে ওমানের মাসকাটে জরুরী অবতরণ করে ফ্লাইট। তাকে নামিয়ে এনে নেয়া হয় মাসকাট এয়ারপোর্ট থেকে সরাসরি হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে ৫ দিন থাকলেও সন্তান প্রসব হয়নি তার। এ অবস্থায় চিকিৎসার পর তিনি সোমবার রাতে আবার মাসকাট থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ালাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করেন। ফ্লাই গ্লোবাল থেকে লিজে নেয়া বিমানের ফ্লাইটটিতে অনামিকা ওঠার পর বিমানের নিজস্ব ক্রুরা প্রথমে তাকে নিয়ে ফ্লাই করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। কিন্তু ফ্লাই গ্লোবালের ক্রুরা পাইলটের অনুমতি নিয়ে ৩৩ সপ্তাহের গর্ভবতী অনামিকাকে নিয়ে উড্ডয়নে সম্মত হন। মাসকাটের স্থানীয় সময় রাত ২টা ২০ মিনিটে বিজি জিরো টু টু ফ্লাইটটি অনামিকাসহ টেক অফ করে। ওই ফ্লাইটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত এয়ার মার্শাল ইনামুল বারী এবং বিমানের কেবিন ক্রু এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম দস্তগীরও ছিলেন। এক ঘণ্টার বেশি সময় আকাশে ওড়ার পর বোয়িং ৭৭৭-৩০০ এয়ারক্র্যাফটের ৩৫/এফ নম্বর সিটে বসা ওই যাত্রীর আবার প্রসব বেদনা শুরু হয়। এতে বিপাকে পড়েন কেবিন ক্রুরা। যদিও ফ্লাইটে বিমানের দুই নারী কেবিন ক্রু প্রসব বেদনা কমানোর চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে তারা ফ্লাইটের ভেতরে প্রসবের সব প্রস্তুতিও নিয়ে ফেলেন। কিন্তু অনামিকা খাতুনের অবস্থা বেশি খারাপ হলে পাইলটকে বিষয়টি জানানো হয়। এমনকি ফ্লাইটে উপস্থিত বিমান চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করে পাইলট দ্রুত আশপাশের কোন এয়ারপোর্টে ফ্লাইটটি জরুরী অবতণের সিদ্ধান্ত নেন। তবে কাছাকাছি আরব সাগর থাকায় বিমানের ঢাকাগামী ফ্লাইটটি ঘুরিয়ে আবার মাসকাটে নিয়ে যাওয়া হয়। মাসকাট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার পর অসুস্থ অনামিকাকে আবার এ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নেয়া হয়। আর প্রায় ৪ ঘণ্টা পর বিমানের ফ্লাইটটি মাসকাট থেকে অনামিকাকে ছাড়াই রওনা করে মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা এসে পৌঁছে। এ বিষয়ে বিমান কেবিন ক্রু এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক দস্তগীর জনকণ্ঠকে বলেন- এ ঘটনায় প্রমাণ হলো যাত্রীদের জানমাল রক্ষায় বিমান সব সময়েই সজাগ ও সতর্ক। ওই যাত্রী মেডিক্যাল সার্টিফিকেট নিয়েই বিমানে যাত্রা করেছিলেন। কিন্তু আকাশে ওঠার পর প্রেসারে তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এতে জীবন বাঁচানোর স্বার্থেই বিমানের জরুরী অবতরণ করানো হয়েছে। এটি আন্তর্জাতিক আকাশ আইন মেনেই করা হয়েছে।
×