ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চালকের হাতে জিম্মি;###;আজহার মাহমুদ

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ বেপরোয়া যন্ত্রদানব

প্রকাশিত: ০৪:০৪, ২৬ এপ্রিল ২০১৮

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ বেপরোয়া যন্ত্রদানব

ঢাকা সরকারী তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীবের পরপারে চলে যাওয়া নিয়ে অনেকেই লিখেছে। গত ১৭ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চিরতরে বিদায় নেয় এই কষ্টের ফেরিওয়ালা। গত ৩ এপ্রিল কাওরান বাজার মোড়ে বিআরটিসি বাসে দাঁড়ানো অবস্থায় বিপরীত দিক থেকে আসা অন্য একটি গাড়ির প্রচ- চাপে রাজীবের ডান হাত কষে পড়ে তার শরীর থেকে। রাজীব সম্পর্কে এর চেয়ে আরও বেশি হয়তো অনেকেই জানে। কিন্তু আমাদের হয়তো জানা নেই প্রতিদিন এরকম কত রাজীব প্রাণ হারাচ্ছে এসব গাড়ি চালকের কারণে। এভাবে নিত্যনতুন আমাদের সামনে ঘটে যাচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনার ভয়াবহ চিত্র। আমরা রাজীবকে নিয়ে হয়তো পরে গবেষণা করতে পারব, কিন্তু আর যেনো কোনো রাজীবের প্রাণ হারাতে না হয় সে ব্যপারে কিছু কর্মসূচী এবং পদক্ষেপ এখনই নিতে হবে আমাদের। তাই আমাদের যেতে হবে এর মূলে। আসল কথা হচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা। আর এর জন্য সর্বপ্রথম ঠিক হতে হবে গাড়ির ড্রাইভারদের। ড্রাইভারদের খামখেয়ালী গাড়ি চালানো, একটি গাড়ির সঙ্গে অন্য একটি গাড়ির প্রতিযোগিতা, মোবাইলে কথা বলে গাড়ি চালানো, নেশা যাতীয় দ্রব্য খেয়ে করে গাড়ি চালানো, অনভিজ্ঞ এবং অল্প বয়স্ক ড্রাইভার দিয়ে গাড়ি চালানো, রাস্তায় গাড়ি পার্কিং করাসহ আরও নানান কারণ রয়েছে। এ সকল কারণে সড়ক দুর্ঘটনা হয়ে থাকে বর্তমানে। এসকল দুর্ঘটনা কিন্তু আসলেই দুর্ঘটনা নয়। যে গাড়ি চালাবে তার অবশ্যই জানা থাকবে কিভাবে গাড়ি চালালে দুর্ঘটনা হবে না। কিন্তু এরা জেনেশুনেই এসব করছে। তাই এগুলোকে নিছক দুর্ঘটনা বলাটাও ভুল হবে। রাস্তায় ট্রাফিক থাকা সত্ত্বেও এসকল গাড়ির ড্রাইভাররা আইনকে কোন তোয়াক্কাও করে না। ট্রাফিক ব্যবস্থার এমন বেহাল অবস্থাও আমাদের কাছে নতুন কোন বিষয় নয়। দেশ আধুনিক হলেও এই সেক্টর এখনও পরে আছে এক যুগ পেছনে। জনগণ পারে এই অনিয়মকে নিয়মে আনতে। এ সকল দুর্ঘটনার নামে মৃত্যুর মিছিল থামাতে হবে জনসচেতনতার মাধ্যমে। চাই শুধু সচেতনতা। জনসচেতনতাই পারে সকল সমস্যার সমাধান দিতে। গাড়ির ড্রাইভার বেপরোয়া গাড়ি চালালে সর্বপ্রথমে আমাদের প্রতিবাদ করতে হবে। অল্প বয়স্ক ড্রাইভারের গাড়ি আমাদের বর্জন করতে হবে। অন্য গাড়ির সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক গাড়ি চালালে আমাদের থামাতে হবে এই মরণ খেলা প্রতিযোগিতা। প্রয়োজনে আইনের সহায়তা নিতে হবে আমাদের। সরকারের কাছে দাবি এই সড়ক দুর্ঘটনা রোধে জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশে এই সড়ক দুর্ঘটনার হার অনেকটাই বেশি। পরিশেষে বলতে চাই, সড়কে যেনো আর কোন রাজীবের প্রাণ দিতে না হয় সেই ব্যবস্থা বাস্তবায়ন হোক। ওমর গনি এমইএস বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, চট্টগ্রাম থেকে
×