ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আইজলকে ফের হারাতে চায় আবাহনী

প্রকাশিত: ০৭:০৩, ২৫ এপ্রিল ২০১৮

আইজলকে ফের হারাতে চায় আবাহনী

রুমেল খান ॥ গত ১১ এপ্রিল প্রতিপক্ষের মাটিতে দাপটের সঙ্গে খেলে দুর্দান্ত জয় (৩-০ গোলে) কুড়িয়ে নেয়া। এবার সেই একই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে হোম ম্যাচ। জিতে ফলাফলটা কি আগের মতোই নিজেদের অনুকূলে নিতে পারবে ঢাকা আবাহনী লিমিটেড? সেই প্রশ্নের উত্তরই জানা যাবে আজ বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টায় ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে, এএফসি কাপের ‘ই’ গ্রুপের খেলায়। স্বাগতিক আবাহনী আজ আতিথ্য দেবে ভারতের আইজল ফুটবল ক্লাবকে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) জানিয়েছে স্কুল ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আইডি কার্ড প্রদর্শন সাপেক্ষে স্টেডিয়ামের গ্যালারির ৫ নম্বর গেট উন্মুক্ত রাখা হবে। ম্যাচ উপলক্ষে মঙ্গলবার বাফুফে ভবনের কনফারেন্স রুমে আবাহনী এবং আইজল দলের প্রধান প্রশিক্ষক ও দলের অধিনায়কের অংশগ্রহণে এক প্রি ম্যাচ প্রেস কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত থেকে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন আবাহনীর কোচ সাইফুল বারী টিটু ও ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক শহীদুল ইসলাম সোহেল; আইজলের কোচ সন্তোষ কেশোয়ার ও অধিনায়ক আলফ্রেড কিমা জারোয়ান। ‘ই’ গ্রুপে টানা তিন ম্যাচ হেরে পয়েন্টে তলানিতে থাকা আইজল এখন ‘পচা শামুক’। সেই পচা শামুকেই পা কাটার ভয়ে আছে আবাহনী। কারণ তারুণ্য ভরসা করছে আইজল। তাছাড়া তাদের হারানোর কিছুই নেই। তাই আবাহনীকে মরণ কামড়ও দিয়ে বসতে পারে। এটাই বড় ভয় আবাহনীর। আবাহনীর কোচ টিটু বলেন, ‘আইজলের বিপক্ষের দুটি ম্যাচকে আমরা ঘুরে দাঁড়ানোর ম্যাচ হিসেবে দেখেছি। একটা ম্যাচে ভাল ফল করলে স্বাভাবিকভাবেই একটা আত্মবিশ্বাস চলে আসে। আর সেটাই অনেক সময় বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই আমি এ ক’দিন সেটপিস, ডিফেন্সের চাইতে খেলোয়াড়দের মানসিকতা নিয়ে বেশি কাজ করেছি। পহেলা বৈশাখের কারণে আমাদের অনুশীলন একটু দেরিতে শুরু করতে হয়েছে। তবে সেটাকে কোন অজুহাত হিসেবে দাঁড় করাতে চাইছি না। আমি বলতে চাই যে দলের সবাই মানসিকভাবে অনেক ভাল অবস্থায় আছে।’ ১১ এপ্রিল আইজলের মাঠে এ্যাওয়ে ম্যাচে আবাহনী তাদের বিপক্ষে পোস্টে ৯টা শট নিয়েছিল যেগুলো ছিল পেনাল্টি বক্স থেকে। আর তারা ১৭টা শট নিয়েছিল যেগুলোর বেশিরভাগ ছিল পেনাল্টি বক্সের বাইরে থেকে। তার মধ্যে ৩টা মাত্র লক্ষ্যে ছিল। এ প্রসঙ্গে টিটু বলেন, ‘তাই বলে আমি তাদের মোটেও সহজ প্রতিপক্ষ বলব না। এটা আমাদের মনে রাখতে হবে তাদের হারানোর কিছুই নেই। আর আমাদের ৩ পয়েন্ট লাগবেই।’ ?এক ম্যাচে ৩ পয়েন্ট পেলেও আগে দুই ম্যাচ হেরেছে আবাহনী। তাই পরের রাউন্ডে গ্রুপ চ্যম্পিয়ন হয়ে নাম লেখানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ। গ্রুপ রানার্সআপ হতে এখন বাকি ম্যাচগুলোতে পয়েন্ট পাওয়া খুবই জরুরী আকাশী-নীলদের। তবে আজকের ম্যাচে জয় পেলে সে পথে নিজেদের এগিয়ে রাখতে পারবে ‘দ্য স্কাই ব্লু ব্রিগেড’। টিটু বলেন, ‘আমি একদিক থেকে খুশি যে আগের তিন ম্যাচে আমরা মাত্র ২টি গোল রিসিভ করেছি। আগামীকাল (আজ) আমরা যদি তিন পয়েন্ট পাই আর রেডিয়েন্টকে যদি ব্যাঙ্গালুরু হারায় তাহলে ২ মে মালদ্বীপের রেডিয়েন্টের সঙ্গে আমাদের দারুণ লড়াই হবে। এখন আজ দলের প্লেয়াররা কি করে সেটাই দেখার বিষয়।’ টিটু জানালেন ঘরের মাঠে বাড়তি এ্যাডভান্টেজ পেলেও প্রতিপক্ষকে তারা মোটেই সহজভাবে নিচ্ছেন না, ‘প্রথমেই বলেছি অধিক আত্মবিশ্বাস বিপদের কারণ হতে পারে। প্রতিপক্ষকে কঠিন হিসেবে দেখলে ম্যাচে ফোকাস থাকে।’ আবাহনী অধিনায়ক-গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেল বলেন, ‘আমাদের প্র্যাকটিস যেমন হয়েছে সে অনুযায়ী ফলাফল ভাল হবারই কথা। টিটু ভাই সেটপিস, কর্নার কিক নিয়ে অনেক কাজ করেছেন। গত ম্যাচটার মতো যদি আগে গোল পাই তাহলে তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করা সহজ হবে।’ কোচ টিটু গোলের জন্য সানডে চিজোবা আর ইমন বাবুর ওপর বিশেষভাবে নির্ভরশীল। আইজলের কোচ সন্তোষ কেসা বলেন, ‘আমরা আগের ম্যাচগুলো হারলেও সেগুলোতে ডমিনেট করে খেলেছি। শেষ ম্যাচেও কিন্তু আবাহনীর বিপক্ষে পুরো দ্বিতীয়ার্ধ প্রাধান্য বিস্তার করে খেলেছি। দলের তরুণ ফুটবলারদের জন্য ম্যাচটা একটা বড় সুযোগ। আশা করছি একটা উপভোগ্য ম্যাচ হবে।’ অধিনায়ক আলফ্রেড বলেন, ‘আমাদের দলটা তারুণ্যনির্ভর যা কোচ ইতোমধ্যে বলেছেন। আবাহনী ভাল এবং ঐতিহ্যবাহী দল। তবে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য থাকবে নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে জয় আদায় করে নেয়া।’ উল্লেখ্য, ভারতের পেশাদার ফুটবল লীগ ‘আই লীগে’ গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আইজল এফসি। আবাহনীর বয়স ৪৬। সবধরনের ট্রফি জিতেছে তারা ৩৭ বার। এএফসি কাপে এ নিয়ে দু’বার অংশ নিচ্ছে। গতবার গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায়। কখনই দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে পারেনি। পক্ষান্তরে আইজলের বয়স ৩৪। সবধরনের ট্রফি জিতেছে তারা ৪ বার। এএফসি কাপে এবারই প্রথম অংশ নিচ্ছে। এখন দেখার বিষয় আজকের ম্যাচে আবাহনী আইজলকে আবারও হারের স্বাদ ‘উপহার’ দিতে পারে কি না।
×