ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিসিএলে রাজ্জাকের বোলিং ঝলক অব্যাহত

প্রকাশিত: ০৬:৫৯, ২৫ এপ্রিল ২০১৮

বিসিএলে রাজ্জাকের বোলিং ঝলক অব্যাহত

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ক্রিকেট লীগের (বিসিএল) ষষ্ঠ বা শেষ রাউন্ডের প্রথমদিনেই জমে উঠেছে লড়াই। বিসিবি উত্তরাঞ্চল ও প্রাইম ব্যাংক দক্ষিণাঞ্চল শিরোপা পেতে লড়াই করছে। আবার দক্ষিণাঞ্চল, ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল ও ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চল রানার্সআপ হওয়ার জন্য লড়াই করছে। শিরোপা এবং রানার্সআপ হওয়ার লড়াই পুরোদমে জমে উঠেছে। প্রথমদিনই দক্ষিণাঞ্চলের স্পিনার আব্দুর রাজ্জাকের ঘূর্ণির সামনে বিপাকে পড়েছে উত্তরাঞ্চল। প্রথমদিনে ৫ উইকেট নিয়ে ঘরোয়া প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে একাধিক রেকর্ডও গড়েছেন রাজ্জাক। একইদিনে পূর্বাঞ্চলের বিপক্ষে আব্দুল মজিদ ও সাদমান ইসলামের জোড়া সেঞ্চুরিতে দুর্দান্ত ব্যাটিং নৈপুণ্য দেখিয়েছে মধ্যাঞ্চল। বিপাকে উত্তরাঞ্চল ॥ উত্তরাঞ্চলের ৬০ ও দক্ষিণাঞ্চলের ৪৭ পয়েন্ট রয়েছে। পয়েন্ট পার্থক্য ১৩। যদি ষষ্ঠ রাউন্ড শেষে উত্তরাঞ্চল থেকেও বেশি পয়েন্ট পেয়ে যায় দক্ষিণাঞ্চল, তাহলেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে। সেই পথেই এগিয়ে চলেছে দক্ষিণাঞ্চল। দক্ষিণাঞ্চলকে সেই পথ দেখাচ্ছেন অভিজ্ঞ স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক। একাই ৫ উইকেট নিয়ে উত্তরাঞ্চলের প্রথম ইনিংস ধসে দিয়েছেন। উত্তরাঞ্চলকে ১৮৭ রানের বেশি করতে দেননি রাজ্জাক। সোহরাওয়ার্দী শুভ অপরাজিত ৫৯ ও নাজমুল হোসেন শান্ত ৫০ রান করা ছাড়া বাকিরা ব্যাটিং নৈপুণ্য দেখাতে পারেননি। দশম উইকেটে সোহরাওয়ার্দী ও শফিউল (১৪) মিলে যদি ৪২ রানের জুটি গড়তে না পারতেন তাহলে এত রানও হতো না উত্তরাঞ্চলের। রাজ্জাকের ঘূর্ণির সামনে পড়ে শেষ পর্যন্ত বিপাকে আছে উত্তরাঞ্চল। রাজ্জাক ৫ উইকেট নিয়ে ঘরোয়া প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ৫০০ উইকেট নেওয়ার সঙ্গে ৩৩ বার ৫ উইকেট নেওয়ার রেকর্ডও গড়েছেন। উত্তরাঞ্চলকে দ্রুত অলআউট করে দেয়ায় যে এরই মধ্যে বোনাস ৩ পয়েন্ট পেয়ে গেছে দক্ষিণাঞ্চল। তাতে পয়েন্ট পার্থক্য দাঁড়িয়ে গেছে ১০। আবার দক্ষিণাঞ্চলের প্রথম ইনিংসে লিড নেয়ার খুবই ভাল সম্ভাবনা তৈরি হয়ে গেছে। দলটি ১ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রান করে ফেলে। এনামুল হক বিজয় (৫২*) ও ইমরুল কায়েস (৫১*) মিলে দলকে লিড নেয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। প্রথম ইনিংসে লিড নিলেই আরও ১ পয়েন্ট যুক্ত হয়ে যাবে। তখন পয়েন্ট পার্থক্য দাঁড়াবে ৯। আর যদি স্কোরবোর্ডে রান চার শ’ বা তার বেশি যুক্ত করতে পারে দক্ষিণাঞ্চল তাহলে আরও ৫ পয়েন্ট বোনাস পাবে। সেক্ষেত্রে পয়েন্ট পার্থক্য ৪-এ দাঁড়াবে। তখন দক্ষিণাঞ্চলকে জিততে হবে। জেতা ছাড়া দক্ষিণাঞ্চলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কোন পথ নেই। তবে উত্তরাঞ্চলের যে অবস্থা তাতে দক্ষিণাঞ্চল বাজিমাতও করতে পারে। দক্ষিণাঞ্চলকে যদি ঠেকিয়ে দিতে পারে উত্তরাঞ্চল, কোনভাবে ম্যাচ ড্র করতে পারে তাহলেই চ্যাম্পিয়ন হওয়া সম্ভব। ড্র করলে যে ৩ পয়েন্ট পাওয়া যায়। আর ৩ পয়েন্ট মিললেই যে উত্তরাঞ্চল শিরোপা জিতে যেতে পারে। তবে রাজ্জাকের ঘূর্ণিতে উত্তরাঞ্চল প্রথম ইনিংসেই বিপাকে পড়েছে। ম্যাচটিতে দক্ষিণাঞ্চলের হয়ে খেলছেন আবার মাশরাফি বিন মর্তুজা। নিজেকে ফিট রাখতেই শেষ রাউন্ডে খেলছেন মাশরাফি। তবে ১২ ওভারে ২ মেডেনসহ ৪৯ রান দিয়ে ১ উইকেটের বেশি নিতে পারেননি। মজিদ, সাদমানের সেঞ্চুরিতে আশায় মধ্যাঞ্চল ॥ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ আগেই হাতছাড়া হয়েছে। এখন সামনে রানার্সআপ হওয়ার সুযোগ আছে। দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সেই লড়াইয়ে আছে মধ্যাঞ্চল। খেলা যদিও পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে হচ্ছে কিন্তু রানার্সআপ হতে হলে দক্ষিণাঞ্চলের চেয়ে বেশি পয়েন্ট থাকতে হবে মধ্যাঞ্চলের। দক্ষিণাঞ্চলের যেখানে ৪৭ পয়েন্ট সেখানে মধ্যাঞ্চলের ৪২ পয়েন্ট আছে। ৫ পয়েন্টের পার্থক্য। এরই মধ্যে দক্ষিণাঞ্চল প্রথমদিনেই ৩ পয়েন্ট পেয়ে গেছে। লিড নিলে আরও ১ পয়েন্ট পাবে। সেখানে মধ্যাঞ্চলও পিছিয়ে নেই। প্রথমদিনেই দলটি ৫ পয়েন্ট বোনাস পেয়ে গেছে। পূর্বাঞ্চলের বিপক্ষে মজিদের ১৫৯ ও সাদমানের ১১২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ৪০৬ রান করে ফেলেছে। চার শ’ বা তার বেশি রান করলে ৫ পয়েন্ট বোনাস মিলে। সেই বোনাস পয়েন্ট মিলে গেছে। তাতে প্রথমদিনে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে পয়েন্ট পার্থক্য হয়ে দাঁড়িয়েছে ৩। আবার প্রথম ইনিংসে লিড নিলেও ১ পয়েন্ট পাবে মধ্যাঞ্চল। আর যদি প্রতিপক্ষকে দ্রুত গুঁড়িয়ে দিতে পারে, তাহলে আরও ৩ পয়েন্ট পাবে। দক্ষিণাঞ্চল যদি দ্বিতীয় ইনিংসে খারাপ করে আর মধ্যাঞ্চল যদি নৈপুণ্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারে তাহলে রানার্সআপও হয়ে যেতে পারে মধ্যাঞ্চল। শুরুতে মধ্যাঞ্চল বিপাকে পড়লেও সাদমান ও মজিদ মিলে দলকে বহুদূর নিয়ে যান। মজিদ ১৮২ বলে ১৮ চার ও ৬ ছক্কায় ১৫৯ রান করে স্বেচ্ছা অবসরে যান। আর সাদমান ১৫৭ বলে ১১ চার ও ৩ ছক্কায় ১১২ রান করে আউট হন। এরপর শেষদিকে শুভাগত হোম (৫০*) ও মোশাররফ হোসেন রুবেল (৭*) আর উইকেট যেতে দেননি। আজ এ দুইজন স্কোরবোর্ড আরও মজবুত করতে ব্যাট হাতে নামবেন। স্কোর ॥ দক্ষিণাঞ্চল-উত্তরাঞ্চল ম্যাচ-খুলনা উত্তরাঞ্চল প্রথম ইনিংস ॥ ১৮৭/১০; ৫৮.৩ ওভার (সোহরাওয়ার্দী ৫৯*, শান্ত ৫০; রাজ্জাক ৫/৫৩, সাকলায়েন ২/২০)। দক্ষিণাঞ্চল প্রথম ইনিংস ॥ ১১৫/১; ২৯ ওভার (বিজয় ৫২*, ইমরুল ৫১*; শফিউল ১/২৮)। মধ্যাঞ্চল-পূর্বাঞ্চল ম্যাচ-রাজশাহী মধ্যাঞ্চল প্রথম ইনিংস ॥ ৪০৬/৪; ৮৯ ওভার (মজিদ ১৫৯, সাদমান ১১২, শুভাগত ৫০*, মোশাররফ ৭*; সোহাগ ৩/১৪০)।
×