ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ায় স্নানোৎসবে হাজারো ভক্তের ঢল

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ২৫ এপ্রিল ২০১৮

বগুড়ায় স্নানোৎসবে হাজারো ভক্তের ঢল

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ বগুড়ার মহিষবাথানে সম্প্রীতির তীর্থ সরোবরে দশ হাজার মানুষের মহোৎসবে পুণ্য স্নান হয়ে গেল মঙ্গলবার। যে সরোবরে পুস্কর, গঙোত্রী, হরিদ্বার, কন্যাকুমারী তীর্থস্থানসহ বাংলাদেশ ও ভারতের ২৪ টি নদীর জলের মিশ্রণ ঘটানো হয়েছে এই দিন ভোরে। মাতৃ সরোবর নামের এই জলেই পুণ্যস্থান করেছে ভক্ত, পুণ্যার্থী ও অভ্যাগতরা। বগুড়া নগরী থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার পূর্বে ৮ বছর আগে গড়ে উঠেছে শ্রীঅরবিন্দ মীরা শক্তিপীঠ। বগুড়ার শ্রী অরবিন্দ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগ ও প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ডাঃ বিপুল চন্দ্র রায়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এই তীর্থস্থান গড়ে তোলা হয়। এই পীঠে প্রায় ৪০ একর জায়গা জুড়ে তৈরি হয়েছে এক সরোবর। যা দেখে মনে হবে কোন ছোট বিল। নন্দন শিল্পকলায় তৈরি এই সরোবরের ভেতরে স্থাপিত হয়েছে একটি মন্দির। চারদিক থেকে নৌকা করে সেই মন্দিরে গিয়ে পূজা অর্চনা করে ভক্তরা। কর্তৃপক্ষ এই সরোবরের নামকরণ করে মাতৃ সরোবর। শ্রীঅরবিন্দের রেলিক স্থাপনের ৮ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সেখানে আয়োজন করা হয় মহোৎসবের। উৎসবে যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসে হাজারও নারী-পুরুষ ভক্ত ও পুণ্যার্থী। ভোরে অগ্নি প্রাজ্বলনের মাধ্যমে দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। সকাল সাতটায় মাতৃ সরোবরে গঙ্গাসহ বিভিন্ন তীর্থস্থানের জল ঢেলে দিয়ে মিশ্রণ করা হয়। এর আগে প্রতিটি তীর্থস্থানের জলের কলসি মাথায় নিয়ে বর্ণাঢ্য র‌্যালি করে মেয়েরা। সকাল ৮ টা থেকে শুরু হয় পুণ্য স্নান। এরপর দিনভর পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, সমবেত প্রার্থনা ও ধ্যান, সাবিত্রী পাঠ ভক্তিমূলক সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। এই মহোৎসবে খুলনা থেকে এসেছিলেন প্রফুল্ল চন্দ্র রায় ও তার স্ত্রী। বললেন, অনেক তীর্থস্থানে তারা ঘুরে এসেছেন। বগুড়ার মহিষবাথানের মতো এমন শান্ত স্নিগ্ধ পরিবেশের মতো তীর্থভূমি তাদের চোখে পড়েনি। চট্টগ্রাম থেকে এসেছিলেন জয়তী দেবী। বললেন, গত বছর এই মাতৃ সরোবর পুণ্যার্থীদের জন্য খুলে দেয়ার উদ্বোধনী দিনে তিনি এসেছিলেন। এবার পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে এসেছেন। মহিষবাথান গ্রামের রফিকুল্লাহ স্থানীয় কথায় যা বললেন তার সারমর্ম হলো- এই সরোবর সম্প্রীতির এক বন্ধনে পরিণত হয়েছে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা আসে পুণ্যস্থান, পূজা অর্চনার উদ্দেশে। অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা আসে দর্শনীয় স্থান দেখতে। সরোবরে ঘুরে দেখার জন্য ছোট ছোট নৌকার ব্যবস্থা আছে।
×