ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নাজিরের পটচিত্র প্রদর্শনী বাঘের দেশে বৈশাখ

প্রকাশিত: ০৬:০১, ২৫ এপ্রিল ২০১৮

নাজিরের পটচিত্র প্রদর্শনী বাঘের দেশে বৈশাখ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলার বাঘের সঙ্গের দীর্ঘদিন করেই সখ্য গড়েছেন পটুয়া নাজির হোসেন। দীর্ঘদিন ধরেই এই শিল্পীর ক্যানভাসে আশ্রয় নিয়েছে বাঘমামা। তবে হিংস্রতা নয় নাজিরের পটচিত্রে বাঘ ধরা দিয়েছে মানুষের বন্ধু হয়ে। সেসব ছবিতে বাঘের পিঠে চড়ে ঘুরে বেড়ায় গ্রাম বাংলার জনগোষ্ঠী। কোথাও বা সাপুড়ের সঙ্গী হয়ে সাপখেলা দেখায় বাঘ। তাই আগমনের ভয়ে ভীত হওয়ার পরিবর্তে ডোরাকাটা বাঘ হয় মানবসমাজের আনন্দের সঙ্গী। এমন মনোমুগ্ধকর পটচিত্রগুলো এখন শোভা পাচ্ছে ধানম-ির আঁলিয়স ফ্রসেসে। এই ফরাসী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের গ্যালারি জুমে মঙ্গলবার থেকে শুরু এই শিল্পীর পটচিত্র প্রদর্শনী। শিরোনাম বাঘের দেশে বৈশাখ। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে বৈশাখী বিকেলে টাইগার নাজিরখ্যাত এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয়। প্রদর্শনীর উ™ে^াধন করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী এ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক হায়াৎ মামুদ। নিজের একক প্রদর্শনী প্রসঙ্গে নাজির হোসেন বলেন, বাংলার ডোরাকাটা বাঘ হচ্ছে বিজয়ের প্রতীক। তবে পটচিত্রগুলোতে ব্যবহƒত ছবিতে বাঘ কেবল একক আইকন হিসেবে চিত্রিত হয়নি, সব ছবিতেই একটা গল্প আছে। বাঘকে বিভিন্নভাবে ও বিভিন্ন রূপে উপস্থাপন করা হয়েছে কল্পনার আশ্রয়ে। পটুয়া শিল্পীর চিত্রপটে বাঘের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে লোকজশিল্পের অনুষঙ্গ। রংয়ের বৈভব ছড়ানো প্রতিটি ছবিতে উপস্থাপিত হয়েছে প্রিয় এই প্রাণীটির প্রতি বিশেষ মমত্ব। শিল্পীর কিছু ছবির ভাবনায় আছে হাস্যরসের খোরাক। সেসব ছবিতে বাঘ জমিতে হাল চাষ করে, একতারায় সুর তোলে, ঢাক-ঢোল বাজায়। কখনও বা বাঘ রেলগাড়ি কিংবা বিমান চালায়। এভাবেই রঙে-রেখায় সুখ-দুঃখ ও আনন্দ-ভালবাসায় বন্ধুর মতো পাশে থাকে বাঘমামা। পটচিত্রে আমাদের জাতীয় পশু রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সঙ্গে আরও স্থান পায় কামার, কুমার, জেলে, তাঁতী, বাউল, ফকির, মাঝি ইত্যাদি। প্রদর্শনীতে ঠাঁইপ্রাপ্ত পটচিত্রে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সঙ্গে হাজির হয়েছে কামার, কুমার, জেলে, তাঁতী, বাউল, ফকির, মাঝি ইত্যাদি নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ। আগামী ৭ মে পর্যন্ত চলবে এই প্রদর্শনী। সোম থেকে বৃহস্পতিবার বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা এবং শুক্র ও শনিবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টা এবং বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। রবিবার সাপ্তাহিক বন্ধ। বই দিবসে আজীবন সম্মাননা পেলেন হাজেরা নজরুল ॥ সোমবার ছিল বিশ্ব বই দিবস। এ উপলক্ষে সোমবার বিকেলে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আলোচনাসভার সঙ্গে গল্প-কবিতাপাঠ, সঙ্গীত পরিবেশনা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ লেখক পরিষদ। সেই আয়োজনে অশীথিপর কথাসাহিত্যিক-কবি এবং গবেষক ও শিক্ষাবিদ মুক্তিযোদ্ধা হাজেরা নজরুলকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিষদ সভাপতি সৈয়দ মাজহারুল পারভেজ। মাহমুদ বুলবুল ও ফাতেমা সুলতানা সুমির উপস্থাপনায় বই ও কপিরাইট নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় সরস আলোচনা। কবিতাপাঠে অংশ নেন কথাসাহিত্যিক মঈনুদ্দিন কাজল, বাচিকশিল্পী বদরুল আহসান খান, ড. ডি এম ফিরোজ শাহ, কবি এবিএম সোহেল রশিদ, ছড়াকার আতিক হেলাল, কবি আবু হানিফ হৃদয়, কবি ইমন ভদ্রে ও সৈয়দ আসাদুজ্জামান সোহান প্রমুখ। পরিষদ ২০১৬ সাল থেকে প্রতিবছরই রাষ্ট্রীয় সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত ষাটোর্ধ কোন এক খ্যাতিমান সাহিত্য ব্যক্তিত্বকে আজীবন সম্মাননা দিয়ে আসছে। সেই ধারাবাহিকতায় এ বছর আজীবন সম্মাননা ভূষিত হলেন কথাসাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ ও মুক্তিযোদ্ধা হাজেরা নজরুল।
×