ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চলে গেলেন কবি বেলাল চৌধুরী ॥ আজ শহীদ মিনারে নাগরিক শ্রদ্ধাঞ্জলি, ফেনীর শর্শদীতে দাফন

‘ঠাণ্ডা চোখে দেখছি আমি, নীল কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে আমার দেহ’

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২৫ এপ্রিল ২০১৮

‘ঠাণ্ডা চোখে দেখছি আমি, নীল কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে আমার দেহ’

মনোয়ার হোসেন ॥ আমি আছি ব্যাপ্ত হয়ে তোমার রৌদ্রছায়ায়/ এই তো তোমার ঘামে গন্ধে তোমার পাশাপাশি ...। এভাবেই ছায়ার মতো স্বদেশের সঙ্গে জড়িয়েছিলেন কবি। অনিবার্য নিয়তির প্রতি স্বগতোক্তি করে লিখেছিলেন- ঠাণ্ডা চোখে দেখছি আমি/নীল কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে আমার দেহ। অবশেষে সেই দেখাটাই সত্য হলো। কবিতার কমলবন থেকে চলে গেলেন অনন্তলোকে। ঘটলো প্রিয় পৃথিবী থেকে প্রস্থান। যে জীবনে স্রোতধারার মতো লিখেছেন কবিতা সেই জীবনের সঙ্গেই দীর্ঘ কয়েকটি মাস ধরে চলছিল বোঝাপড়া। সুস্থ জীবনে ফেরার সংগ্রামে লিপ্ত ছিলেন কবি। লড়াইয়ের অন্তিম পর্যায়ে লাইফ সাপোর্টের আশ্রয়ে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে টিকেছিলেন কাব্যস্রষ্টা। থেমে গেল সেই লড়াই। শেষ হলো বর্ণবহুল জীবনের পরিভ্রমণ। চলে গেলেন সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ বোহেমিয়ান স্বভাবের সেই কবি বেলাল চৌধুরী। মঙ্গলবার পাড়ি জমালেন অদেখার ভুবনে। অহর্নিশি কবিতা লেখা, আড্ডায় মশগুল থাকা কিংবা মৎস্য শিকারের নেশাকে চিরবিদায় জানিয়ে এদিন বেলা ১২টা ১ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি...রাজিউন)। প্রায় আট মাস ধরে চিকিৎসাধীন থাকা ধানমন্ডির আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালেই মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেন একুশে পদকজয়ী এই কবি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। রেখে গেছেন দুই ছেলে আব্দুল্লাহ প্রতীক ইউসুফ চৌধুরী ও আব্দুল্লাহ নাসিফ চৌধুরী পাবলো এবং মেয়ে সাফিয়া আক্তার চৌধুরী মৌরীসহ অগণন ভক্ত-অনুরাগী ও সুহৃদ। মঙ্গলবার রাতে বেলাল চৌধুরীর শবদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের হিমাগারে। সেখান থেকে আজ বুধবার মরদেহ নিয়ে আসা হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। বেলা ১১টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের তত্ত্বাবধানে জানানো হবে নাগরিক শ্রদ্ধাঞ্জলি। সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে বাদ যোহর অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় জানাজা। এরপর ফেনীর শর্শদীর পৈতৃক ভিটার পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হবে বেলাল চৌধুরীকে। মঙ্গলবার দুপুরের পর আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতাল থেকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় মোহাম্মদপুরের মারকাজুল ইসলামে। সেখানে লাশের গোসল সম্পন্ন করে নিয়ে যাওয়া হয় পল্টন কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটির বাসভবনে। সেখানেই আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা জানান কবির প্রতি ভালবাসা। প্রিয় মানুষকে হারানোর বেদনায় ভিজে যায় স্বজন আর প্রতিবেশীর দুই চোখ। পারিবারিকভাবে শ্রদ্ধা-ভালোবাসা নিবেদন শেষে বাদ মাগরিব পল্টন জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম জানাজা । বেলাল চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পীকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদসহ বিভিন্ন ব্যক্তি এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। শোকাবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, কবিতার মধ্য দিয়ে তিনি মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। তাঁর লেখা আমাদের অনুপ্রেরণা যোগাবে। কবিকে যারা নিবিড়ভাবে ভালবাসতেন সেই শুভাকাক্সক্ষীরা গত কয়েকদিন ধরেই সময়ে-অসময়ে ছুটে গিয়েছেন হাসপাতালে। মঙ্গলবার মৃত্যুব খবরটি যখন নিশ্চিত হলে সেই শুভাকাক্সক্ষীদের অন্তরে বয়ে যায় বেদনার বিষাদগাথা। প্রিয়জনকে হারানোর শোকাচ্ছন্ন হৃদয়ে হাসপাতালে ছুটে যান। কবি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেন নিজেদের বেদনাকে। হাসপাতালে ছুটে যান সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী, ইতিহাসবিদ ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, কবি কামাল চৌধুরী, জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি মুহাম্মদ সামাদ ও সাধারণ সম্পাদক তারিক সুজাত, আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলামসহ অনেকে। সেখানে তখন উপস্থিত ছিলেন অসুস্থতার পর সার্বক্ষণিকভাবে কবির দেখভাল করা ছেলে আব্দুল্লাহ প্রতীক ইউসুফ চৌধুরী। বেদনার্ত কণ্ঠে আব্দুল্লাহ প্রতীক ইউসুফ চৌধুরী জনকণ্ঠকে বলেন, আসলে গত কয়েকদিন ধরেই বাবা মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছিলেন। তাঁকে ধরে রাখার জন্য আমরাও আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টাটা চালিয়েছি। মনে হয়েছে একটি দিনও যদি তিনি বেশি বাঁচেন, সেটাই হবে আমাদের অনেক পাওয়া। তিনি জানান, গত বছরের আগস্ট মাস থেকেই শুরু হয় কবির অসুস্থতা। মাঝে শুধু একদিনের জন্য বাসায় গিয়ে আবার ফিরতে হয়েছে হাসপাতালে। ক্রমশ বেড়ে চলা সেই অসুস্থতার মাঝে গত ১৯ এপ্রিল রাতে অবস্থার অবনতি হলে কেবিন থেকে হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেয়া হয়। ২০ এপ্রিল সকালে অবস্থার আর অবনতি হলে নিয়ে যাওয়া হয় লাইফ সাপোর্টে। সোমবার রাতেও তার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা সর্বশেষ বৈঠকে বসেন। সেখানে তারা কিছুটা আশার আলো দেখতে পান। তবে মঙ্গলবার সকালের পর তার শারীরিক অবস্থার চূড়ান্ত অবনতি ঘটে। শরীরের নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ একে একে অকার্যকর হয়ে পড়ে। অবশেষে বেলা ১২টা এক মিনিটে খুলে ফেলা হয় লাইফ সাপোর্ট। মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্য কবি হারিসুল হক বলেন, ২০১৭ সালের ৩০ আগস্ট থেকে বেলাল চৌধুরী আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এর আগে তিনি ২০১৪ সালের ৯ মে কলকাতা সাহিত্য আকাদেমির এক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেই সময় তার স্পাইনাল কর্ডের অপারেশন করা হয়। অপারেশন পরবর্তী প্রতিক্রিয়া হিসেবে কবির রক্তে সংক্রমণ ঘটে। সেই সংক্রমণই ধীরে ধীরে কবির কিডনি, মস্তিষ্ক, যকৃতসহ নানা অঙ্গে আক্রমণ করে। তখন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানান, তার কিডনিতে সমস্যা হয়েছে। মূত্রনালিতে ইনফেকশনের কারণে ভুগছিলেন ‘সেফটিসেমিয়া’ রোগে। এছাড়া উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের সমস্যাও ছিল। সব মিলিয়ে শরীরের মাল্টি অর্ডার ডিসঅর্ডার ফাংশনে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। বেলাল চৌধুরীর মৃত্যুর খবর শুনে অনেকের মতোই হাসপাতালে ছুটে যান সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতি কবির দায়বোধের কথা উল্লেখ করে সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, কবিদের সকল সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকার পাশাপাশি এদেশে যত প্রগতিশীল আন্দোলন হয়েছে, তার সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন। তিনি নিজের কথা না ভেবে অন্যদের কথা ভাবতেন। বেলাল চৌধুরীর সৃষ্টিকর্ম সংরক্ষণের জন্য সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নেবে বলে জানান মন্ত্রী। বেলাল চৌধুরীর বর্ণবহুল জীবনের কথা উঠে আসে হাবীবুল্লাহ সিরাজীর কথা। তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, বিস্তৃত পরিসরের এক জীবনযাপন করেছেন বেলাল চৌধুরী। জীবনটাকে তিনি দারুণভাবে উপভোগ করতেন। ছিলেন দারুণ আড্ডাবাজ। তাই তিনি থাকতেন কোন আড্ডা আসরের মধ্যমণি। অন্যদিকে খুব কম মানুষকেই তাঁর মতো এত বেশি পড়তে দেখেছি। জানার পরিধি ব্যাপক হওয়ায় আলাপ করতে পারতেন যে কোন বিষয়ে। সেই আলাপে উঠে আসতো কুমির চাষ থেকে যৌবনবতী নারীর কথা। সব মিলিয়ে যেন পাকা একা মানুষ ছিলেন। বোহেমিয়ান স্বভাবের কারণে ষাটের দশকে হুট করে ঢাকা থেকে চলে গেলেন কলকাতায়। সেখানে কাটিয়ে দিলেন দশটি বছরেরও বেশি সময়। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় থেকে শক্তি চট্টোপাধ্যায়Ñসেখানকার সাহিত্যভুবনের সকলেরই প্রিয় মানুষ হয়ে উঠেছিলেন। যুক্ত হলেন পত্রিকার সম্পাদনায়। বর্ণাঢ্য চরিত্রের অধিকারী এই মানুষটিই আবার দেশে জড়িয়ে গেলেন সমাজ পরিবর্তনের প্রগতিশীল আন্দোলনে। কবির পাশাপাশি একজন সংগঠক হিসেবেও রয়েছে তাঁর অনন্য ভূমিকা। সেই মানুষ যাদের নেতৃত্বেই গড়ে উঠেছিল জাতীয় কবিতা পরিষদ। প্রথম দিকে তিনি এই পরিষদের সভাপতিরও দায়িত্ব পালন করেছেন। মানুষকে কাছে টেনে নেয়ার বেলাল চৌধুরীর অসাধারণ গুণাবলির কথা ওঠে আসে তারিক সুজাতের বয়ানে। সেই প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের মতো অনুজদের তিনি হাতে ধরে লেখা শিখিয়েছেন। আর এতটাই জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন যে তাঁর সংস্পর্শে একটি দিন কাটাতে পারলেও নিজেকে আরেকটু বেশি শাণিত করা যেত। কবিতা লেখার পাশাপাশি অনুবাদেও ছিলেন অনবদ্য। গোলাম কুদ্দুছ বলেন, বেলাল চৌধুরীর মাধ্যমেই বাংলাদেশের কবি-সাহিত্যিকদের সঙ্গে ওপার বাংলার কবি-সাহিত্যকদের মেলবন্ধটা দৃঢ় হয়েছে। কবির জীবনকথা ॥ বোহেমিয়ান স্বভাবের কবি বেলাল চৌধুরী যাপন করেছেন এক বিচিত্র ও বর্ণিল জীবন। তুমুল আড্ডাবাজ মানুষটি কবিতা লেখার পাশাপাশি প্রবলভাবে রাজনৈতিক সচেতন ছিলেন। সেই সুবাদে বামপন্থী রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে অংশ নিয়ে জেল খেটেছেন। অন্যদিকে এই বাউন্ডুলে কবিই মাছ শিকারের নেশায় চলে গেছেন গভীর সমুদ্রে। বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী এই কবি ১৯৩৮ সালের ১২ নবেম্বর ফেনীর শর্শদিতে জন্মগ্রহণ করেন। রফিকউদ্দিন আহমদ চৌধুরী ও কবি মনিরা আখতার খাতুন চৌধুরী দম্পতির নয় সন্তানের মধ্যে তিনি সবার বড়। পৃথিবীর পাঠশালাই ছিল স্বশিক্ষিত এই কবির অধ্যয়নশালা। সাংবাদিকতা, জেলখাটা, গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার বিচিত্র পর্ব পেরিয়ে ১৯৬৩ সালে কলকাতায় পাড়ি জমান বেলাল চৌধুরী। সেখানেই পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হয় তাঁর সাহিত্য ভুবন। কলকাতায় বসবাসের সময় সাহিত্য পত্রিকা কৃত্তিবাস সম্পাদনায় যুক্ত হয়ে পড়েন তিনি। পরে তিনি বিভিন্ন সময় সম্পাদনা করেছেন পল্লীবার্তা, সচিত্র সন্ধানী, ভারতবিচিত্রা। সম্পাদনা করেছেন কবিবন্ধু সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বিবাহ উপলক্ষে প্রকাশিত স্মরণিকারও। ১৯৭৪ সালে কলকাতা থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসেন বেলাল চৌধুরী। এরপর থেকেই প্রগতিশীল রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন সক্রিয়ভাবে। জাতীয় কবিতা পরিষদ ও পদাবলি কবিতা সংগঠনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি। স্বনামের পাশাপাশি তিনি বল্লাল সেন, ময়ূরবাহন, সবুক্তগীন ছদ্মনামেও লিখেছেন। বল্লাল সেন ছদ্মনামে দৈনিক জনকণ্ঠে তাঁর লেখা ঢাকা ডায়েরি শীর্ষক কলামটি ছিল তুমুল পাঠকসমাদৃত। কবির রচিত এই প্রবন্ধ পাঠককে পাঠকের মনোজগতে ছড়িয়েছে বিচিত্র স্বাদ। কবিতা, গদ্য, অনুবাদ, সম্পাদনা, শিশুসাহিত্য মিলে তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা অর্ধশতাধিক। তার কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ ‘নিষাদ প্রদেশে’, ‘বেলাল চৌধুরীর কবিতা’, ‘আত্মপ্রতিকৃতি’, ‘স্থির জীবন ও নিসর্গ’, ‘জলবিষুবের পূর্ণিমা’, ‘সেলাই করা ছায়া’, ‘কবিতার কমলবনে’, ‘বত্রিশ নম্বর’, ‘যে ধ্বনি চৈত্রে শিমুলে’, ‘বিদায়ী চুমুক’ ইত্যাদি। তার অন্যান্য বইয়ের মধ্যে রয়েছেÑ ‘স্ফুলিঙ্গ থেকে দাবানল’, ‘ডুমুরপাতার আবরণ’, ‘চেতনার রঙ চন্দ্রশিলা’, ‘লাকসাম দাদা ও অন্যান্য গল্প’, ‘কাগজে কলমে’, ‘মিশ্রচিত্রপট’, ‘নিরুদ্দেশ হাওয়ায় হাওয়ায়’, ‘জীবনের আশ্চর্য ফাল্গুন’ ইত্যাদি। গদ্য-পদ্যের পাশাপাশি বেলাল চৌধুরী পাশ্চাত্যের কবি হোর্হে লুইস বোর্হেস, পাবলো নেরুদা, ডিলান টমাস, অক্টাভিও পাজের মতো কবিদের লেখার অনবদ্য অনুবাদ করেছেন। সম্পাদনা করেছেন বেশকিছু স্মারকগ্রন্থ। বৈভবময় সাহিত্যজীবনের স্বীকৃতি হিসেবে অর্জন করেছেন একুশে পদক, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার, জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার, জাতীয় কবিতা পরিষদ সম্মাননা, জাতীয় প্রেসক্লাব সম্মাননা, কৃত্তিবাস ষাট বছর পূর্তি সম্মাননা, মযহারুল ইসলাম কবিতা পুরস্কারসহ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মাননা। সংসার জীবনে বেলাল চৌধুরী গাঁটছড়া বাঁধেন কামরুন্নেসা চৌধুরীর সঙ্গে। ১৯৯৬ সালে তিনি প্রয়াত হন। এ দম্পতির দুই ছেলে আব্দুল্লাহ প্রতীক ইউসুফ চৌধুরী ও আব্দুল্লাহ নাসিফ চৌধুরী পাবলো এবং এক মেয়ে সাফিয়া আক্তার চৌধুরী মৌরী।
×