ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

নিহত ১০ ॥ সন্ত্রাসী তৎপরতার আলামত মেলেনি

টরন্টোয় গাড়ি হামলা

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ২৫ এপ্রিল ২০১৮

টরন্টোয় গাড়ি হামলা

কানাডার টরন্টো শহরে সোমবার দুপুরের ব্যস্ত সড়কের পাশে ফুটপাথের ওপর গাড়ি উঠিয়ে দিলে ১০ পথচারী নিহত এবং অন্তত ১৫ জন আহত হয়। প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো একে মর্মান্তিক কা-জ্ঞানহীন হামলা হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ঘটনাস্থল থেকে অল্প দূরে এ্যালেক মিনাসিয়ান নামের ২৫ বছর বয়সী গাড়িচালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এএফপি ও বিবিসি। টরন্টোর পুলিশ প্রধান মার্ক সন্ডার্স সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ঘটনার ধরন দেখে তারা নিশ্চিত যে পথচারীদের ওপর ইচ্ছাকৃতভাবে ভ্যান তুলে দেয়া হয়েছিল। তবে হামলার কারণ তারা জানতে পারেননি। তবে এটি সন্ত্রাসী হামলা নয় বলেই তারা মনে করছেন। কানাডার সবচেয়ে বড় শহর টরন্টোর উত্তরাংশে দুপুর দেড়টার সময় এই হামলার ঘটনা ঘটে। ফিঞ্চ এভিনিউ ও ইয়ঞ্জ স্ট্রিটের প্রায় দুই কিলোমিটার ফুটপাথে মানুষের মধ্যে দিয়ে সাদা রঙের ওই ভাড়া করা ভ্যান চালিয়ে নিয়ে যায় হামলাকারী। ঘটনাস্থল থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে শহরের কেন্দ্রে তখন উন্নত সাত দেশের জোট জি সেভেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক চলছিল। ওই ভ্যানের পেছনে থাকা এক গাড়িরচালক স্থানীয় সিটি নিউজকে বলেন, সামনে যা পড়ছিল, সবকিছুকে দলে পিষে যাচ্ছিল ওই ভ্যান। মানুষ, পানির কল, ডাক বাক্স- কোন কিছুরই পরোয়া করছিল না। ওই পরিস্থিতিতে পেছন থেকে হর্ন বাড়িয়ে পথচারীদের সতর্ক করার চেষ্টা করেন পেছনের গাড়ির ওই চালক। তিনি জানান, ভ্যানের ধাক্কায় ছয় থেকে সাতজনকে উড়ে গিয়ে রাস্তায় পড়ে যেতে দেখেছেন। ইয়ঙ্গি স্ট্রিটের কাছে একটি ভিডিও শপের মালিক রেজা হাশেমি বলেন, রাস্তার উল্টো দিক থেকে তিনি হঠাৎ মানুষের চিৎকার শুনতে পান। পরে সাদা রঙের ভ্যানটিকে ফুটপাথে পথচারীদের চাপা দিয়ে ছুটতে দেখেন। আলী নামে একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলছিলেন, ‘একেক জনের ওপর ভ্যানটি উঠে যাচ্ছিল। আমি জীবনে এমন ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখিনি’। যে ইয়ঙ্গি স্ট্রিটে দুর্ঘটনাটি ঘটে সেটি লেক অন্টেরিও থেকে টরন্টোর ভেতর দিয়ে পল্লী অঞ্চল পর্যন্ত চলে গেছে। বলা হয়ে থাকে এটি কানাডার সবচেয়ে দীর্ঘতম সড়ক। ট্রুডো একে মর্মান্তিক কা-জ্ঞানহীন হামলা অভিহিত করে বলেছেন, ‘আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’ হামলার পর দীর্ঘ ওই পথ হলুদ ফিতা দিয়ে ঘিরে ফেলে পুলিশ। সশস্ত্র পুলিশ ও উদ্ধারকর্মীদের রাস্তার ওপরে আহতদের জরুরী চিকিৎসা দিতে দেখা যায়। কমলা রঙের বডি ব্যাগে করে লাশ তুলতে দেখা যায় এ্যাম্বুলেন্সে। একটি মোড়ের কাছে জিনিসপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়। এক পাটি জুতা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় হতাহতের চিহ্ন হয়ে। সিবিসি টেলিভিশনে দেখান হয় ঘটনাস্থল থেকে কিছু দূরে এক তরুণকে পুলিশ গ্রেফতার করছে। ওই তরুণ পুলিশের দিকে কোন একটি বস্তু তাক করে চিৎকার করে বলছিল, ‘কিল মি’। পরে তাকে হতকড়া পরা অবস্থায় দেখা যায়। তাকে গ্রেফতারের সময় গোলাগুলির কোন ঘটনা ঘটেনি। যে ভ্যানটি নিয়ে ওই হামলা হয়, সেটি রাইডার সিসটেম ইনকর্পোরেশনের একটি ভাড়া গাড়ি। ওই প্রতিষ্ঠানও বিষয়টি নিশ্চিত করে কর্তৃপক্ষকে সব ধরনের সহযোগিতা করার কথা বলেছে। গত কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে ভিড়ের মধ্যে গাড়ি চালিয়ে হামলার বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ২০১৭ সালে অক্টোবরে নিউ ইয়র্কে বাইসাইকেলের রাস্তায় ভ্যান চালিয়ে আটজনকে হত্যার ঘটনা ঘটে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেসব হামলার দায় স্বীকার করে জঙ্গী গ্রুপ আইএস। ফ্রান্সের নিস, জার্মানির বার্লিন, স্পেনে বার্সেলোনা, ব্রিটেনের লন্ডন ও যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে এমন হামলা হয়েছে। তবে কানাডার জননিরাপত্তা মন্ত্রী রলফ গোডেইল বলছেন, ‘টরন্টোর এই হামলা মনে হচ্ছে ভিন্ন ধরনের। এর সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুর কোন সম্পর্ক দেখা যাচ্ছে না।
×