ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বরগুনায় মাতৃত্বকালীন ভাতায় ঘুষ!

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ২৪ এপ্রিল ২০১৮

বরগুনায় মাতৃত্বকালীন ভাতায় ঘুষ!

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা, ২৩ এপ্রিল ॥ আমতলীতে দরিদ্র মায়েদের মাতৃত্বকালীন ভাতায় ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভাতাভোগীরা অভিযোগ করেন মাতৃত্বকালীন ভাতার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে ইউপি সদস্যকে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। ঘুষ না দিলে তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত হয় না। ইউপি সদস্যরা টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, মহিলা বিষয়ক অধিদফতরে টাকা দিতে হয় বিধায় ভাতাভোগীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করছি। আমতলী মহিলা বিষয়ক অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট ১ হাজার ৩২৪ জন দরিদ্র মায়েদের মাতৃত্বকালীন ভাতার নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭টি ইউনিয়নে ৯২৪ ও পৌরসভায় ৪০০ জন। প্রত্যেক প্রসূতি মা মাসে ৫শ টাকা করে দু’বছরে ১২ হাজার টাকা ভাতা পায়। ছয় মাস পরপর এ ভাতা প্রদান করা হয়। ভাতাভোগীরা অভিযোগ করেন, তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে ইউপি সদস্যকে ২০০০-৩০০০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। টাকা না দিলে ভাতার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত হয় না। যারা টাকা দিতে পারে তারা মাতৃত্বকালীন ভাতা পায়। এতে প্রকৃত মাতৃত্ব ভাতাপ্রাপ্তরা বঞ্চিত হচ্ছে। ইউপি সদস্যদের অভিযোগ, মহিলা বিষয়ক অধিদফতরে ঘুষ না দিলে ভাতা পাওয়া যায় না। বাধ্য হয়ে ভাতাভোগীদের কাছ থেকে টাকা নিতে হচ্ছে। সোমবার আমতলী মহিলা বিষয়ক অধিদফতরে গিয়ে জানা গেছে, উপজেলার কুকুয়া ও গুলিশাখালী ইউনিয়নের ১৬০ জন ভাতাভোগীদের ভাতা প্রদানের কার্যক্রম চলছে। এ কার্যক্রমে সহযোগিতা করছেন সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যরা। ভাতাভোগীরা জানান, ইউপি সদস্যকে ভাতার তালিকায় নাম অর্šর্ভুক্তির জন্য টাকা দিয়েছি, এখন আবার টাকা তুলে খরচ বাবদ ২শ টাকা দিতে হবে।কুকুয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের শাহনাজ ও আয়শা বেগম সম্পা জানান, তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির সময়ে ইউপি সদস্য দেলোয়ার হাওলাদারকে ১ হাজার টাকা দিয়েছি। কুকুয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য দেলোয়ার হাওলাদার ঘুষ নেয়ার কথা অকপটে স্বীকার করে বলেন, তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হলে মহিলা বিষয়ক অফিসে টাকা দিতে হয়। তিনি আরও বলেন ভাতার কাজ করতে বিভিন্ন খরচ বাবদ ১ হাজার টাকা নিয়েছি। হলদিয়া ইউনিয়নের চিলা গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী জানান, মেয়ের মাতৃত্বকালীন ভাতা তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য মহিলা ইউপি সদস্য শাহানাজ বেগম পুষ্পকে ১ হাজার ৫শ টাকা দিয়েছি। ইউপি সদস্য শাহানাজ বেগম পুষ্প টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি কারো কাছ থেকে টাকা নেইনি। আমতলী মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর সফিকুল ইসলাম টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, ইউপি সদস্যরা আমাদের নাম বলে টাকা আদায় করার কথা শুনেছি। আমতলী মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আফরোজা সুলতানা টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, ইউপি চেয়ারমান ও সদস্যরা আমাদের নাম বলে টাকা আদায় করছে। অফিসে কোনো টাকা দিতে হয় না।
×