ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রতীক বরাদ্দ আজ

খুলনা ও গাজীপুরে মেয়র পদে ১২ প্রার্থী, কাউন্সিলর পাঁচ শ’ ২৬

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২৪ এপ্রিল ২০১৮

খুলনা ও গাজীপুরে মেয়র পদে ১২ প্রার্থী, কাউন্সিলর পাঁচ শ’ ২৬

মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, গাজীপুর ও নুরুল ইসলাম, টঙ্গী এবং অমল সাহা, খুলনা ॥ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময়সীমা সোমবার সম্পন্ন হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ হবে। প্রতীক পেয়েই প্রার্থীরা কর্মী সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনী প্রচারে নেমে পড়বেন। প্রার্থীদের অনেকেই ইতোমধ্যে নিজের নির্বাচনী ইশতেহার প্রস্তুতির কাজ সম্পন্ন করেছেন। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে (সোমবার) আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে আরও এক মেয়র প্রার্থী মহাজোটের শরিক দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)-এর মনোনীত রাশেদুল হাসান রানা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। এর আগে রবিবার হাইকমান্ডের নির্দেশে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে মেয়র পদের স্বতন্ত্র প্রার্থী মহানগর জামায়াতের আমির এসএম সানাউল্লাহও তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এতে মনোনয়নপত্র বাছাই ও প্রত্যাহারের পর সর্বশেষ মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী মোট প্রার্থীর সংখ্যা হলো ৭। এছাড়া গত দুইদিনে ২৮৭ জন সাধারণ আসনের কাউন্সিলরের মধ্যে ৩১ জন এবং ৮৭ জন সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরের মধ্যে তিনজনসহ মোট ৩৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এদিকে ২০ দলীয় জোটের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণের এক সপ্তাহ আগে থেকে নির্বাচনী এলাকায় টহলসহ প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন। গাজীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সিটি কর্পোরেশনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার মোঃ তারিফুজ্জামান জানান, আগামী ১৫ মে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনে মেয়র পদে মোট ১০ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন। যাচাই-বাছাইকালে এদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ আফসার উদ্দিনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। পরে ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন। কিন্তু গত দুইদিনে ওই দুই প্রার্থী এসএম সানাউল্লাহ ও রাশেদুল হাসান রানা তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করায় এখন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন সাতজন। তারা হলেন, আওয়ামী লীগের মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, বিএনপির মোঃ হাসান উদ্দিন সরকার, ইসলামী ঐক্যজোটের মোঃ ফজলুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নাসির উদ্দিন, ইসলামী ফ্রন্টের মোঃ জালাল উদ্দিন, কমিউনিস্ট পার্টির গাজী রুহুল আমিন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ফরিদ উদ্দিন। তিনি আরও জানান, গত দুইদিনে ২৮৭ জন সাধারণ আসনের কাউন্সিলরের মধ্যে ৩১ জন এবং ৮৭ জন সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরের মধ্যে তিনজনসহ মোট ৩৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। ফলে সর্বশেষ হিসেবে এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে ৭ জন, সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে ২৫৬ ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদে ৮৪ জনসহ মোট ৩৪৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জাসদ প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার ॥ এদিকে জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শওকত রায়হান জানান, জঙ্গী এবং স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিকে প্রতিহত করতে স্বাধীনতার সপক্ষের সকল শক্তি আজ ঐক্যবদ্ধ। তাই স্বাধীনতা বিরোধীদের রুখতে দলের হাইকমান্ডের নির্দেশে জাসদ মনোনীত মেয়র প্রার্থী রানা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে সোমবার বিকেলে তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে ১৪ দলের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমকে সমর্থন দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আগে জাসদের মেয়র প্রার্থী রাশেদুল হাসান রানা দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের ছয়দানা এলাকার বাসায় গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাত করেন এবং সমর্থন দেন। সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী ॥ ২০ দলীয় জোটের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণের সাতদিন পূর্ব থেকে নির্বাচন এলাকায় টহলসহ প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া তিনি নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দৃশ্যমানভাবে নাম ও র‌্যাঙ্ক ব্যাচসহ ইউনিফর্ম পরে দায়িত্বপালন করার বিষয়টি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। সোমবার দুপুরে টঙ্গী আরিচপুর এলাকায় বাসভবন চত্বরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় হাসান উদ্দিন সরকার ওই দাবি জানিয়েছেন। এ সময় গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি একেএম ফজলুল হক মিলন, সাধারণ সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য মাজহারুল আলম, জেলা বিএিনপির সিনিয়র সহসভাপতি মোঃ সালাহউদ্দিন সরকার, জেলা হেফজতের যুগ্ম সম্পাদক মোঃ নাসির উদ্দিন, বিএনপি সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মোঃ শওকত হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভায় হাসান উদ্দিন সরকার নির্বাচন কমিশন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সন্ত্রাস দমন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও তালিকাভুক্ত চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের প্রেফতারসহ সবরকম পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া তিনি নির্বাচনী প্রচারণা সভা, সমাবেশ ও উঠান বৈঠকে সরকারীস দলসহ সকল দলের মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীর জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করার অনুরোধ করেন। এলাকায় সাধারণ ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করতে নিরপেক্ষ পরিবেশ সৃষ্টি এবং অবৈধ কালোটাকার ছড়াছড়ি বন্ধ করতে হবে। তিনি নির্বাচনে নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ এবং প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারদের নিজ থানা ও পোলিং অফিসারদের নিজ ওয়ার্ডে নির্বাচনী দায়িত্ব দেয়া যাবে না। তিনি সকল গণমাধ্যমে প্রচার প্রচারণায় অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দল ও প্রার্থীর ক্ষেত্রে সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। গণমাধ্যম কর্মীদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশাধিকার এবং নির্বিঘেœ সংবাদ সংগ্রহের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বলেন তিনি। মতবিনিময় সভায় গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও ২০ দলীয় জোট মেয়র প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক সাবেক এমপি ফজলুল হক মিলন, সাধারণ সম্পাদক ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডাঃ মাজহারুল আলম, জেলা বিএিনপির সিনিয়র সহসভাপতি মোঃ সালাহউদ্দিন সরকার, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মোঃ সোহরাব উদ্দিন, মীর হালিমুজ্জামান ননী, মোঃ শওকত হোসেন সরকার, জেলা হেফজতের যুগ্ম সম্পাদক মেঃ নাসির উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সকালে গাজীপুর জেলা ও মহানগর জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ (হেফাজতে ইসলামী) নেতাদের সঙ্গে নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে মতবিনিময় করেন হাসান উদ্দিন সরকার। মনোনয়ন প্রত্যহার করলেন মোট ৩৬ প্রার্থী ॥ গাজীপুর সিটি নির্বাচনের প্রত্যহারের শেষদিন সোমবার পর্যন্ত দুই মেয়র প্রার্থীসহ ৩১ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী এবং ৩১ ও ৩ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার রকিব উদ্দিন ম-ল জানান, সোমবার পর্যন্ত মেয়র পদে মোট দুইজন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। প্রত্যাহারকৃতরা হলেন- জাসদ মনোনীত প্রার্থী মোঃ রাশেদুল হাসান রানা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ সানাউল্লাহ। সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩১ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। খুলনা ॥ খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে সোমবার ছিল প্রত্যাহারের শেষ দিন। মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমাদানকারী ৫ দলের ৫ প্রার্থীর কেউ প্রত্যাহার করেননি। সাধারণ ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মোট ৩৯ প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। প্রত্যাহারের পর মেয়র পদে ৫ প্রার্থী ও কাউন্সিলর পদে ১৮৬ প্রার্থী রয়েছেন। কেসিসি নির্বাচনের মেয়র প্রার্থীরা হলেনÑ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী দলের মহানগর শাখার সভাপতি সাবেক সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী দলের মহানগর সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু, জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী দলটির নগর শাখার সদস্য সচিব এস এম শফিকুর রহমান (মুশফিক), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত নগর কমিটির সভাপতি মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক এবং সিপিবি নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবু। কাল থেকে মাঠে নামবে ভিজিল্যান্স ও অবজারবেশন টিম ॥ খুলনা সিটি কর্পোরেশন (নির্বাচন উপলক্ষে ভিজিল্যান্স ও অবজারবেশন টিম মাঠে নামবে আগামীকাল বুধবার থেকে। সোমবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ ইউনুচ আলীর সভাপতিত্বে তার সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় এ তথ্য জানানো হয়। সভায় আরও জানানো হয়, কেসিসি নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীরা নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা লঙ্ঘন করছেন কিনা তা পর্যবেক্ষণ করাই এ টিমের উদ্দেশ্য। আচরণ বিধিমালা পর্যবেক্ষণের জন্য ইতোমধ্যে সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে চারটি টিম গঠন করা হয়েছে। মোট চারটি টিম ভাগ হয়ে ৩১টি ওয়ার্ড পর্যবেক্ষণ করবে। ২৫ এপ্রিল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ পর্যবেক্ষণ টিম মাঠে কার্যক্রম শুরু করবে। খালেকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন ॥ রবিবার সন্ধ্যায় নগরীর ইউনাইটেড ক্লাবে খুলনা মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের যৌথ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি প্রধান অতিথি ছিলেন। সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদকে প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট, কেন্দ্রীয় নেতা এস এম কামাল হোসেনকে প্রধান সমন্বয়কারী, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কাজি আমিনুল হককে আহ্বায়ক, এমডিএ বাবুল রানা ও মোঃ আশরাফুল ইসলাম যুগ্ম আহ্বায়ক, শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল ও শেখ সোহেলকে সদস্য করে একটি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে খুলনা মহানগর, জেলা ও ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ, থানা, উপজেলার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, দলীয় উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র এবং মহানগর ও জেলা পর্যায়ের সকল সহযোগী সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, আহ্বায়ক, যুগ্ম আহ্বায়কে সদস্য রাখা হয়। এছাড়া প্রত্যেক থানায় থানা নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে থানার সভাপতিকে আহবায়ক এবং সাধারণ সম্পাদককে সদস্য সচিব করে কমিটি ঘোষণা করা হয়। খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও খুলনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদের সভাপতিত্বে এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ১৪ দলের সমন্বয়ক মিজানুর রহমান মিজান এমপির পরিচালনায় বর্ধিত সভায় শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি বলেন, খুলনা ও গাজীপুরের নির্বাচন বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কাউকে খাটো করে না দেখে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে শক্তিশালী মনে করে সকল স্তরের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলার অভিযোগ মঞ্জুর ॥ খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী নজরুর ইসলাম মঞ্জু অভিযোগ করেছেন, দলের নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা চালানো হচ্ছে, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে। এতে তারা উদ্বিগ্ন ও ভোটাররা শঙ্কিত হয়ে পড়ছে। সোমবার দুপুরে মহানগরীর কে ডি ঘোষ রোডস্থ বিএনপি কার্যালয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ অভিযোগ করেন তিনি। প্রেস ব্রিফিংয়ে নজরুল ইসলাম মঞ্জু নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে নানা অভিযোগ করে বলেন, সরকার চায় ভোটাররা যেন ভোট কেন্দ্রে না যায়। রাষ্ট্রের সব যন্ত্র যেন সরকারী দলের আজ্ঞাবহ হিসেবে কাজ করে। তিনি বলেন, গত কয়েকদিনে লক্ষ্য করেছি শেখ পরিবারের সদস্যরা খুবই কর্মতৎপর খুলনায়। কি একটা মেসেজ তারা দিয়ে গেলেন সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে গভীর রাতের বৈঠকে। এতে আমাদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। তিনি বলেন, এ শহরের মানুষ বিএনপিকে ভালবাসে, ধানের শীষকে ভালবাসে এবং ধানের শীষে ভোট দিতে তারা অভ্যস্ত। সেই শহরের মানুষদের রায়ের প্রতি যাদের আস্থা নাই, তারা কানাগলি খুঁজছেন। তিনি বলেন, শেখ পরিবারের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে- এই ছোটখাটো নির্বাচনে না জড়িয়ে জাতীয়ভাবে জাতীয় পর্যায়ের নির্বাচন নিয়ে ভাবুন। মঞ্জু অভিযোগ করেন, মহানগরীর ২৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুকের বাড়িতে গিয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। তার পরিবারকে হুমকি দিয়েছে। একই বাহিনী ১০-১৫ টা মোটরসাইকেল নিয়ে ৯০ দশকের সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুর রাজ্জাকের বাড়িতে গিয়ে পরিবারকে শাসিয়েছে। ৩০নং ওয়ার্ডে সাবেক হুইপের ভাই বিএনপি নেতাকর্মীদের হাত-পা ভেঙে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন। ৩১নং ওয়ার্ডে একজন ছাত্রলীগ নেতা ও তার কর্মীরা ওখানে একই হুমকি দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ১৫নং ওয়ার্ডের সহ-সভাপতির বাড়িতে পুলিশ গিয়েছে। পুলিশকে আমরা বলেছি, সন্ত্রাসীর তালিকা বানাতে। পুলিশ সন্ত্রাসীদের না ধরে এই শহরে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে গিয়ে যারা মিথ্যা ও হয়রানিমূলকভাবে পুলিশের সাজানো মামলার আসামি হয়েছে আজকে তাদের তালিকা করা হয়েছে। এ ধরনের তৎপরতায় আমরা উদ্বিগ্ন, ভোটারা শঙ্কিত হয়ে পড়ছে। ব্রিফংয়ে মঞ্জু বলেন, ভোট ডাকাতির পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এই নির্বাচনে যদি ভোট ডাকাতি হয়; তাহলে বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে না। কারণ সরকার যে ভোট ডাকাত, আওয়ামী লীগ যে আগামী নির্বাচনে ভোট ডাকাতি করবে সেটি প্রমাণিত হবে। তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, এখানে যদি ভোট ডাকাতি হয়, তাহলে বিএনপি কর্মীরা ঘরে বসে থাকবে না। বিএনপি কর্মীরা প্রস্তুতি নিয়েছে ভোট ডাকাতি প্রতিরোধের। তিনি সেনা মোতায়েনের দাবি করে বলেন, আমরা চাই কেসিসি নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হোক। কিন্তু যে পুলিশ এখানে আছে তাদের প্রতি আস্থা নেই। দলীয় কর্মীদের পুলিশের হয়রানি, শাসকদলের হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে অভিযোগ করে বলেন, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আমরা শঙ্কিত, ভোটাররা শঙ্কিত। সিইসিকে উদ্দেশ করে বলেন, ভোটারদের নিরাপদ রাখুন, ভোটারদের নিরাপদে ভোট দেয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করুন। সেনা মোতায়েন করুন; যে পুলিশ এখানে আছে তাদের প্রতি আমাদের আস্থা নাই, জনগণের আস্থা নাই। হাত-পা গুটিয়ে আমাদের একটি সংঘাতময় পরিবেশের দিকে ঠেলে দিলে কিন্তু জনগণ ক্ষমা করবে না।
×