ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

‘মুক্তিযোদ্ধা সংসদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিন’

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ২৩ এপ্রিল ২০১৮

‘মুক্তিযোদ্ধা সংসদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিন’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্বাধীনতার পর থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সব ধরনের ‘অনিয়ম ও দুর্নীতির’ বিরুদ্ধে অতি দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) স্মারকলিপি দিয়েছে মুক্তিযোদ্ধারা। একাত্তরের এ সাহসী সেনাদের সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ফ্রিডম ফাইটার্স ফাউন্ডেশন (এনএফএফ ফাউন্ডেশন) এই স্মারকলিপি প্রদান করে। একইসঙ্গে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ‘অনিয়ম ও দুর্নীতির’ সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাতদিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেয়া না হলে খোদ দুদকের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে মামলা করাও ন্যায়সঙ্গত হবে বলে দাবি করেন মুক্তিযোদ্ধারারা। রবিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ন্যাশনাল এনএফএফ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এসএম জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সব ধরনের দুর্নীতির অতি দ্রুত তদন্তে মুক্তিযোদ্ধাদের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে দুদকের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মুহাম্মদ মুনীর চৌধুরীর কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল এ স্মারকলিপি দেন। এ সময় জালাল উদ্দিন (বিচ্ছু জালাল), আব্দুল মতিন সেন্টু ও রুহুল আমিন মজুমদার এবং মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগের নেতা বদরুন নাহার ভূইয়া এ সময় উপস্থিত ছিলেন। স্মারকলিপিতে বলা হয়, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ১৯৭২-৭৩ সাল থেকে ২০০৬-০৭ সাল এবং ২০০৭-০৮ থেকে ২০১৪-১৫ সাল পর্যন্ত সময়ে অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গচ্ছিত টাকা আত্মসাৎ করা হয়। এরপর সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে ২০১৪ ও ২০১৬ সালে হাইকোর্টে পৃথক দুইটি রিট দায়ের করা হয়। পরে ২০১৭ সালে ৩১ মে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দুদককে নির্দেশনা দিয়ে আদেশ দেয় হাইকোর্ট। এতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদে ১৯৭২-৭৩ সাল থেকে ২০০৬-০৭ সালে দায়িত্বপ্রাপ্ত আব্দুল আহাদ চৌধুরী, রেদোয়ান আহমেদ, কবির হোসেন, শাহ আলম চৌধুরী গংদের এবং ২০০৭-০৮ সাল থেকে ২০১৪-১৫ সালে সংসদের চেয়ারম্যান হেলাল মোরশেদ খান ও মহাসচিব এমদাদ হোসেন মতিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দুদকের কাছে দাবি জানানো হয়। মানববন্ধনে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে আইনজীবী সদরুল হক সুধা বলেন, তৎকালীন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের দায়িত্বপ্রাপ্ত অভিযুক্তরা সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের ৮৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। মূলত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ দুর্নীতি করেছে। এই দুর্নীতির মূল উপাদান ছিল গত সংসদ নির্বাচনের পর ক্ষমতা আরোহনের দিন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সারাদেশে আতশবাজি ফাটিয়ে তাদের অবস্থান জানান দিয়েছিল। এরপর সরকারের কাছ থেকে ১১ থেকে ১২ কোটি টাকা তারা নিয়ে আত্মসাত করেছেন। যেখানে একটি গাড়ি দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চলছে পারে সেখানে তারা পাঁচ থেকে সাতটি গাড়ির টাকা নিয়েছেন। এর আগেও কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি করেছে। তারা বিভিন্নভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিন (বিচ্ছু জালাল) বলেন, স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর আমরা দেখতে পাচ্ছি স্বপ্নের বাংলাদেশে জঙ্গী, সন্ত্রাস, মাদক এবং দুর্নীতিতে ভরে গিয়েছে। আমরা সত্যকে সামনে তুলে ধরতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলাম। হাইকোর্ট দুদককে নির্দেশ দিয়েছে সেই মামলা গ্রহণ করার জন্য।
×