ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিশেষজ্ঞদের মতামত

সাতক্ষীরা সীমান্তে আটক বাচ্চাগুলো উটপাখি নয়, এমুর

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ২৩ এপ্রিল ২০১৮

সাতক্ষীরা সীমান্তে  আটক বাচ্চাগুলো  উটপাখি নয়, এমুর

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ সাতক্ষীরায় বিজিবির হাতে জব্দ হওয়া পাখিগুলো ‘উট পাখি’র বাচ্চা নয়। জব্দ করা পাখির বাচ্চার পায়ের নোখ দেখে এগুলো এমুর বাচ্চা বলে নিশ্চিত করেছেন প্রাণিবিদ্যা বিষয়ের বিষেজ্ঞরা। সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবির হেড কোয়ার্টারে রাখা এই বাচ্চাগুলো, ধূসর রঙের। গায়ে সাদা দাগ কাটা এবং পায়ের আঙ্গুল তিনটি। পাখির বাচ্চাগুলো বিজিবি ব্যাটালিয়নে সাইকেল সেডের মধ্যে নেট দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। আটক ৭৫ পাখির বাচ্চার মধ্যে ৮টি মারা গেছে বলে জানিয়েছেন বিজিবির অধিনায়ক। ক্ষীরা ৩৩ বিব্যাটানের অধিনায়ক সরকার মোহাম্মদ মোস্তারহমান জানান, আটক পাখির বাচ্চার সঙ্গে ইন্টারনেটে ছবি মিল করে ও কয়েকজন প্রাণীবিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এগুলো এমু পাখির বাচ্চা। শনিবার সদর উপজেলার পদ্মশাখরা সীমান্ত থেকে ১৪টি খাচায় করে আনার সময় ৬৫টি এমুপাখি বাচ্চা আটক করা হয়। পরে খাচা থেকে ৭টি বাচ্চা মরা পাওয়া যায়। পরে আরও একটি বাচ্চা মারা যায়। বাচ্চাগুলো সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবি’র সদর দফতরে রাখা হয়েছে। আটক বাচ্চাগুলো প্রাণিসম্পদ অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী তাদের মুরগির ডিম, গ্লুকোস, স্যালাইন, লেবুর পানি, পোল্টি মুরগির ফিড ও সবজি খাওয়ানো হচ্ছে। খুব তাড়াতাড়ি বাচ্চাগুলো প্রাণিসম্পদ অফিসের কাছে হস্তান্তর করা হবে। পাখিগুলোর প্রতি পিস আনুমানিক বাজারমূল্য ১ লাখ টাকা। সাতক্ষীরা সরকারী কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ ওলিউর রহমান বলেন, উটপাখি ও এমুপাখি কেউ উড়তে পারে না। তারা একই শ্রেণীর হলেও তাদের গোত্র আলাদা। উটপাখি ও ইমুপাখির বৈশিষ্ট্যগত কিছু পার্থক্য রয়েছে। উট পাখির পায়ের আঙুল দুটি আর এমুর পায়ের আঙুল তিনটি। পৃথিবীতে উড়তে পারে না এমন পাখিদের মধ্যে এমু একটি। এরা হলো- অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম পাখি। আর যদি পৃথিবীর কথা ধরো তাহলে ওরা হলো তৃতীয় বৃহত্তম পাখি। এদের বৈজ্ঞানিক নাম Dromaius novaehollandiae এক-একটা এমুর উচ্চতা কত প্রায় ৬ ফুট! পা লম্বা হওয়ায় অনেক দূরের পথ পাড়ি দিতে পারে চোখের পলকে। ঘণ্টায় ৩০ মাইল! এরা এক জায়গায় খুব বেশি দিন বাস করে না। কারণ খাবারের খোঁজে প্রায়ই দূর থেকে দূরে ঘুরে বেড়াতে হয়। বিভিন্ন ধরনের লতা-গুল্ম ও পোকামাকড়ই এদের প্রধান খাবার। এরা কখন কী ধরনের খাবার খাবে তা অবশ্য গাছপালার সরবরাহের ওপর নির্ভরশীল। গাছপালার পাশাপাশি ওরা ঘাসফড়িং, ঝিঁঝিঁ পোকা, লেডির্বার্ড বিটল ইত্যাদি তো খায়-ই। সোলজার, সল্টবুশ, বোগং ও কটন বল মথের লার্ভা এবং বিভিন্ন ধরনের পিঁপড়াও খায়। অস্ট্রেলিয়ায় এমুর মাংস, তেল ও চামড়ার প্রচুর চাহিদা।
×