ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিবেশীকে ঘায়েল করতে গিয়ে ফেঁসে গেল পাষন্ড পিতা

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ২৩ এপ্রিল ২০১৮

 প্রতিবেশীকে ঘায়েল করতে গিয়ে ফেঁসে গেল পাষন্ড পিতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পাষন্ড পিতা। রাজধানীর বাড্ডার সাঁতারকুল এলাকায় দুই প্রতিবেশীকে ফাঁসাতে ভাড়াটে খুনী দিয়ে নির্মমভাবে নিজের সন্তানকে শ্বাসরোধ ও ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন নরপিশাচ পিতা বাবা জাহিদ ওরফে জাহাঙ্গীর। পরে কিশোর ছেলে আউসারের লাশ ধানক্ষেতে ফেলে দেয়া হয়। এরপর নিজেই বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় ছেলে হত্যার মামলা করেন তিনি। তবে শেষমেষ সেই পরিকল্পনায় শত্রু নয় নিজেই ফেঁসে গেছেন ছেলে হত্যা মামলায়। আউসার হত্যাকান্ডের ঘটনার ভাড়াটে খুনী আব্দুল মজিদকে (২৭) গ্রেফতারের পর এই চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। রবিবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগ উপ-কমিশনার (ডিসি) মোস্তাক আহমেদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। ডিসি জানান, গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় বাড্ডা থানা এলাকার পূর্ব পদরিয়ার একটি ধানক্ষেত থেকে গালে ও ঘাড়ে জখমসহ কিশোর আউসারের রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় পিতা জাহিদের দায়ের করা হত্যা মামলা তদন্ত শুরু করেন বাড্ডা থানা পুলিশের এসআই শামসুল হক সরকার। মামলা তদন্ত করতে গিয়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা ও বিভিন্ন সাক্ষীর মাধ্যমে প্রথমে ভাড়াটিয়া খুনী আব্দুল মজিদের সম্পৃক্ততা জানতে পারে। এরপর গত ২০ এপ্রিল সাঁতারকুল পদরদিয়ার রহমতউল্লাহ গার্মেন্টসের পাশের একটি বাসা থেকে কিলার আব্দুল মজিদকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে ওঠে আসে পিতার পরিকল্পনায় ছেলে খুনের রহস্য। তার দেয়া জবানবন্দী অনুযায়ী শনিবার জাহিদকেও গ্রেফতার করা হয়। ডিসি মোস্তাক আহমেদ জানান, শনিবার গ্রেফতারকৃত মজিদ আদালতে ১৬৪ ধারায় আউসার হত্যায় জড়িত থাকার ব্যাপারে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। জবানবন্দীতে মজিদ জানান, প্রতিবেশী হেলাল উদ্দিন ওরফে হেলু ও আব্দুল জলিলের সঙ্গে শত্রুতা ছিল আউসারের বাবা জাহিদের। শত্রুদের ঘায়েল করতেই কিলার মজিদের সঙ্গে একাধিকবার পরিকল্পনা করেন জাহিদ। পরিকল্পনা মোতাবেক ছেলেকে হত্যার জন্য ঘটনার দিন ১৭ এপ্রিল ছুরি কেনেন বাবা জাহিদ। এরপর আউসারকে ডেকে মজিদকে দিয়ে শ্বাসরোধ ও ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। আর দায় চাপানো হয় প্রতিবেশী শত্রুদের ওপর। তবে সে পরিকল্পনা সফল হয়নি। মজিদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী শনিবার ঘাতক বাবা জাহিদ ওরফে জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার করা হয়। হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে প্রাথমিকভাবে দায় স্বীকার করেছেন জাহিদ। তার বিরুদ্ধে বাড্ডা থানার এসআই শামসুল হক সরকার বাদী হয়ে ভিন্ন একটি এজাহারে মামলা দায়ের করেন (যার নম্বর ২৩)। ওই মামলায় জাহিদকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করছেন পুলিশ পরিদর্শক কাজী আবুল কালাম।
×