ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঠাকুরগাঁও জাঠিভাঙ্গা গণহত্যা দিবস আজ

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ২৩ এপ্রিল ২০১৮

ঠাকুরগাঁও জাঠিভাঙ্গা  গণহত্যা দিবস  আজ

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ২২ এপ্রিল ॥ আজ ২৩ এপ্রিল ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জাঠিভাঙ্গা গণহত্যা দিবস। এই দিনে আশপাশের তিনসহস্রাধিক স্বাধীনতাকামী মানুষকে ধরে নিয়ে গিয়ে লাইনে দাঁড় করিয়ে পাথরাজ নদীরপাড়ে রাজাকারদের সহায়তায় হত্যা করা হয়। সেই গণহত্যায় আত্মদানকারীদের অনেক স্ত্রী আজও জীবন কাটাচ্ছেন অর্ধাহারে-অনাহারে। তাদের খোঁজ নেননা কেউই। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে পাকিস্তানি বাহিনী চারদিকে বাঙালীদের মেরে ফেলছে শুনতে পেয়ে জগন্নাথপুর, চকহলদি, সিঙ্গিয়া, চন্ডিপুর, আলমপুর, বাসুদেবপুর, গৌরিপুর, মিলনপুর, খামারভোপলা, শুকানপুকুরীসহ বহু গ্রামের কয়েক হাজার বাঙালী নর-নারী ও শিশু ২৩ এপ্রিল ভোরে ভারতের উদ্দেশে রওনা দেন। পথিমধ্যে তারা বিশ্রামের জন্য ওঠেন জাঠিভাঙ্গা এলাকায়। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী তার এদেশীয় দোসরদের কাছে সে খবর পেয়ে সেখানে হাজির হয় এবং সেই দলের তিন হাজারেরও বেশি নিরীহ পুরুষগুলোকে মিছিল করার কথা বলে নিয়ে যায় জাটিভাঙ্গা মাঠে। সেখানে একই সঙ্গে চকহলদি, জগন্নাথপুর, সিঙ্গিয়া ও বাসুদেবপুরসহ ১২ গ্রামের শত শত মানুষকে পাকিস্তানীরা লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে মেশিন গানের গুলিতে হত্যা করে। সে হত্যাযজ্ঞ চলে বিকাল পর্যন্ত। পরে তারা চলে গেলে এদেশীয় দোসররা পাশের নদীরপাড়ে লাশ ফেলে সামান্য মাটি চাপা দেয়। সেদিন ওই নিহতদের রক্তে লাল হয়ে গিয়েছিল পাথরাজ নদীর পানি। সেই গণহত্যায় আত্মদানকারীদের তিন শতাধিক বিধবা আজও বেঁচে আছেন খেয়ে না খেয়ে। বয়সের ভারে নুয়ে পড়লেও আজও অনেকেই বয়স্ক বা বিধবা ভাতার বাইরেই রয়ে গেছেন। তারা আজও ভোলেননি সেই নারকীয় গণহত্যার কথা। জীবনের শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে আজও তারা বেঁচে থাকার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। খোঁজ-খবর নেয়নি তাদের কেউ। আর আজও পাননি স্বজন হারানোর বিচার। দীর্ঘদিনের জমানো কষ্টের কথা তারা জানালেন এভাবেই।
×