ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিবাদে পটিয়ায় বিক্ষোভ

এমপির নাম ভাঙ্গিয়ে মাটি লুট

প্রকাশিত: ০৪:১৬, ২৩ এপ্রিল ২০১৮

এমপির নাম ভাঙ্গিয়ে মাটি লুট

নিজস্ব সংবাদদাতা, পটিয়া, ২২ এপ্রিল ॥ চট্টগ্রামের পটিয়ায় স্থানীয় সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরীর নাম ভাঙ্গিয়ে শ্রীমতি খাল ও আশপাশের কৃষকের ফসলি জমির মাটি লুটের অভিযোগ ওঠেছে। রবিবার সকাল থেকে উপজেলার কচুয়াই ও পৌর সদরের বাহুলী মৌজার মাঝামাঝিতে স্ক্যাবেটর দিয়ে মাটি কেটে নেয়ার সময় শত শত গ্রামবাসী বিক্ষোভ করেন। খবর পেয়ে পটিয়া থানার ওসি শেখ মোঃ নেয়ামত উল্লাহ ও কচুয়াই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম ইনজামুল হক জসিম ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী বিদেশ সফর শেষে দেশে না ফেরা পর্যন্ত খালের মাটি ও ফসলি জমির মাটি কাটা বন্ধ রাখার জন্য পটিয়া থানার ওসি নির্দেশ দিয়েছেন। সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, পটিয়া পৌর সদরের ইন্দ্রপুল থেকে গিরি চৌধুরী বাজার এলাকায় একটি বাইপাস সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে। নির্মাণ কাজের ভরাটের জন্য বালু ও মাটি শ্রীমতি খাল এবং আশপাশের ফসলি জমি থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। বাহুলী মৌজা থেকে বিপুল পরিমাণ বালু ও মাটি বাইপাস সড়কে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু শ্রীমতি খালের রেল ব্রিজের দক্ষিণ পাশে কচুয়াই এলাকায় জমির ফসল নষ্ট করে রবিবার সকাল থেকে স্ক্যাবেটর দিয়ে খালের বালু ও মাটি কাটার সময় এলাকার দুই শতাধিক নারী-পুরুষ বাধা দিয়ে বিক্ষোভ করেন। পটিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলমগীর আলম বাইপাস সড়কের ঠিকাদারের পক্ষ হয়ে শ্রীমতি খাল ও কৃষকের ফসলি জমি নষ্ট করে বালু ও মাটি কাটছে বলে অভিযোগ। গ্রামবাসী জানিয়েছেন, কৃষককে কোন ধরনের ক্ষতিপূরণ কিংবা কারও সঙ্গে আলাপ আলোচনা না করে প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে ফসলি জমি নষ্ট করে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলে বাহুলী, কচুয়াই, ভাটিখাইন এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলে ওই এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়ে থাকে। কচুয়াই ইউনিয়নের কৃষক খোরশেদ আলম জানিয়েছেন, বৈলতলী রোডের স্ট্রিল ব্রিজের দক্ষিণ পাশে বেড়িবাঁধ কেটে স্ক্যাবেটর নামানোর ফলে আগামী বর্ষা মৌসুমে পানির ¯্রােতে এলাকার ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা আলমগীর আলম এমপি সাহেবের নাম ব্যবহার করে এই মাটি কাটছে। তবে আলমগীর আলম বলেছেন এমপি সাহেবের পরামর্শে সার্ভেয়ার দিয়ে খাল পরিমাপ করে খালের খাস জায়গা থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। এতে কোন কৃষকের ক্ষতি হলে তা ক্ষতিপূরণ দিবেন। কচুয়াই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম ইনজামুল জসিম বলেন, সম্পূর্ণ অবৈধভাবে শ্রীমতি খালের মাটি ও আশপাশের ফসলি জমি নষ্ট করে দিন দুপুরে ও রাতে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। জনগণের ক্ষতি করে অবৈধভাবে মাটি নিয়ে গেলে সেটা কেউ মেনে নিবেন না। তাছাড়া বেড়িবাঁধ কেটে মাটি কাটার ফলে আগামী বর্ষা মৌসুমে ওই এলাকার কয়েকশ’ পরিবার বিলীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ব্যাপারে পটিয়া থানার ওসি শেখ মোঃ নেয়ামত উল্লাহ বলেন, বালু ও মাটি পটিয়া বাইপাস সড়কের জন্য নেয়া হলেও কৃষককে ক্ষতিপূরণ দেয়া উচিত। এমপি স্যার বিদেশ সফর শেষে দেশে ফিরলে সমঝোতার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি হবে বলে আশা করেন।
×