ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক ভলিবল

নেপালকে হারিয়ে বাংলাদেশের শুভসূচনা

প্রকাশিত: ০৭:২১, ২২ এপ্রিল ২০১৮

নেপালকে হারিয়ে বাংলাদেশের শুভসূচনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শুরুটা ছিল কিছুটা নড়বড়ে। কিছুটা স্নায়ুচাপ, কিছুটা আত্মবিশ্বাসের কমতি, কিছুটা টেকনিক সমস্যা, কিছুটা পারস্পরিক ভুল বোঝাবুঝি। কিন্তু এরপর শুধুই জয় জয়কার। শেষের দিকে অবশ্য তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিজয়ী দলটির নাম বাংলাদেশই। শনিবার থেকে ঢাকার মিরপুরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু এশিয়ান সিনিয়র মেনস সেন্ট্রাল জোন ইন্টারনাল ভলিবল চ্যাম্পিয়নশিপে’র খেলা। এতে গ্রুপ ‘এ’তে স্বাগতিক বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ম্যাচে জিতে করেছে শুভ সূচনা। তারা ৩-১ সেটে (২৪-২৬, ২৫-১৮, ২৫-১৪, ২৫-২১ পয়েন্টে) হারায় নেপালকে। এই জয়ে সেমিতে এক পা দিয়ে রাখলো লাল-সবুজরা। বাংলাদেশের পরের গ্রুপ ম্যাচ আগামী সোমবার বিকেল ৫টায়। প্রতিপক্ষ মালদ্বীপ। ওই ম্যাচে জিতলে গ্রুপসেরা হবার পাশাপাশি শেষ চারেও নাম লেখানো নিশ্চিত করবে তারা। শনিবারে ম্যাচ জয়ের পর ভলিবল ফেডারেশন জানিয়েছে, তাদের সভাপতি বাংলাদেশ দলের সব সদস্যকে প্রতি ম্যাচে জনপ্রতি ১০ হাজার টাকা করে প্রণোদনা দেয়ার ঘোষণা করেছেন। শনিবার খেলা শুরু হয় ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট দেরিতে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দীর্ঘসূত্রতাই এর জন্য দায়ী। স্টেডিয়ামের ভেতরে উচ্চৈঃস্বরে গান-বাজনা এবং অংশ নেয়া দলগুলোর খেলোয়াড়দের প্রধান ও বিশেষ অতিথিদের লম্বা ভাষণ শোনার জন্য ঘণ্টাখানেক ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকাটা দৃষ্টিকটু লেগেছে। বিপুলসংখ্যক দর্শকের উপস্থিতিতে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন বীরেন সিকদার (যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী), নাজমুল হাসান পাপন (সভাপতি, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড), ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ্ (সংসদ সদস্য, ঢাকা-১৬) এ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর (প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব), মাইকেল ফোলি (চীফ এক্সিকিউটিভ অফিসার, গ্রামীণফোন), কনা রেজা (পরিচালক, চ্যানেল আই), মালদ্বীপ ভলিবল এ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মোহাম্মদ লতিফ এবং নেপাল ভলিবল এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মনোরঞ্জন রামান শর্মা, বাংলাদেশ ভলিবল ফেডারেশনের সভাপতি আতিকুল ইসলাম, সিনিয়র সহ-সভাপতি এএইচ আসলাম সানি, সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান মিকু প্রমুখ। শনিবারের খেলায় প্রথম সেটের শুরুতেই নেপাল ২-০ পয়েন্টে এগিয়ে যায়। খুব দ্রুতই স্বাগতিক দল সমতা এনে ফেলে। একপর্যায়ে ১০ পয়েন্টের ব্যবধানে এগিয়েও যায় (১৭-১২)। এই অবস্থা থেকে নেপাল ঘুরে দাঁড়ায়। তারপরও বাংলাদেশ ২১-২০ পয়েন্টে এগিয়ে ছিল। তারপর বাংলাদেশীদের ভুল স্টাইলে খেলার কারণে নেপাল প্রথম সেটটি জিতে নেয় (২৬-২৪)। দ্বিতীয় সেটে নেপাল মাত্র তিনবার লিড নেয়। বাকি সময়টায় বাংলাদেশ দাপটের সঙ্গে খেলে লিড ধরে রাখে। এই সেটে তারা সর্বোচ্চ ৮ পয়েন্টে এগিয়েছিল দু’বার (২১-১৩ এবং ২৩-১৫ পয়েন্টে)। শেষ পর্যন্ত দাপটের সঙ্গে খেলেই এই সেটে জয় পেয়ে (২৫-১৮) ১-১ সেটে সমতা আনে বাংলাদেশ। তৃতীয় সেটে প্রতিপক্ষকে একবারও লিড নিতে দেয়নি বাংলাদেশ। এই সেটে তারা সর্বোচ্চ লিড নেয় ১০ পয়েন্টের, তাও চারবার। ২৫-১৪ পয়েন্টে জিতে ২-১ সেটে এগিয়ে নেয় তারা। চতুর্থ সেটে নেপাল তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলে। ১৭ বার লিড নেয় তারা। পক্ষান্তরে বাংলাদেশের লিড ১৬ বার। তারপরও জয়ী হয় তারা। এই সেটে ২৫-২১ পয়েন্টে জিতে ৩-১ সেটে ম্যাচ জিতে জয়ের উল্লাসে ফেটে পড়ে হরোশিত বিশ্বাসরা। জয়ী অধিনায়ক হরোশিত বলেন, ‘প্রথম সেটে কিছু ভুল বোঝাবুঝির কারণে হেরেছি। পরে কোচ আমাদের নানাভাবে উজ্জীবিত করেছেন। টেকনিক্যালি ও ট্যাকটিকালি বিভিন্ন দিক ধরিয়ে দেন। আত্মবিশ্বাস নিয়েই পরের তিন সেট জেতেছি। মালদ্বীপের সঙ্গে দ্বিতীয় ম্যাচ জিতেই সেমিফাইনালে খেলতে চাই।’ ছয় দলের এই আসরে স্বাগতিক বাংলাদেশ ছাড়াও তুর্কমেনিস্তান, কিরগিজস্তান, মালদ্বীপ, নেপাল এবং উজবেকিস্তান অংশ নিচ্ছে। দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে দলগুলো একে অপরের মোকাবেলা করবে। ‘এ’ গ্রুপে বাংলাদেশের সঙ্গে রয়েছে নেপাল এবং মালদ্বীপ। গ্রুপ বি’তে পড়েছে তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান এবং কিরগিজস্তান।
×