ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে খালেদার মুক্তি শর্ত নয় ॥ ইনু

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২২ এপ্রিল ২০১৮

বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে খালেদার মুক্তি শর্ত নয় ॥ ইনু

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে খালেদা জিয়ার মুক্তির শর্ত মানতে আপত্তি জানিয়েছেন জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেছেন, ‘দ-িত কোন অপরাধীর মুক্তির শর্তে যদি কেউ নির্বাচনে আসতে চায়, তাতে সায় দেব না। সেই শর্ত একটা অরাজনৈতিক শর্ত। এই শর্ত মেনে নেয়া মানে হচ্ছে বাংলাদেশে অপরাধতন্ত্রকে মেনে নেয়া।’ জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের কারাদ-ে দ-িত খালেদাকে কারাগারে রেখে নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে ইতোমধ্যে জানিয়েছেন তার দল বিএনপির নেতারা। ফলে দশম সংসদ নির্বাচনের মতো একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ এখন পর্যন্ত অনিশ্চিত। জাসদ সভাপতি ইনু বলেন, ‘তারা নির্বাচন বর্জন করার একটা পাঁয়তারা করছেন। তারই অংশ হিসেবে দ-িত অপরাধীর মুক্তির প্রশ্নটা নির্বাচনে অংশগ্রহণের সঙ্গে জুড়ে দিচ্ছেন।’ নির্বাচনকালীন ‘সহায়ক সরকার’র যে দাবি বিএনপি তুলেছে, তাও ভোট বানচালের চেষ্টা বলে মনে করছেন তিনি। ইনু বলেন, ‘নির্বাচন বানচাল হয়ে গেলে বাংলাদেশে অস্বাভাবিক সরকার প্রতিষ্ঠা হবে। অস্বাভাবিক সরকার বাংলাদেশে রাজনৈতিক বিপর্যয় ডেকে আনবে। কোন অবস্থাতেই বাংলাদেশ আর পেছন দিকে যেতে পারে না।’ ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের পরে বাংলাদেশ কোন পথে যাবে এই প্রশ্নের মীমাংসার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ টিকবে কী টিকবে না, সেটা নির্ধারিত হবে।’ ইনু বলেন, ‘বিএনপির কাছে ভোট বড় কথা নয়। তাদের এজেন্ডা হচ্ছে বাংলাদেশকে বাংলাদেশের পথ থেকে পাকিস্তান পন্থার পথে আবার ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া। চক্রান্তের পথে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া।’ তা মোকাবেলায় সাংবিধানিক প্রক্রিয়া ও সরকারের ধারাবাহিকতা রাখার ওপর জোর দেন তিনি। ‘যে কোন মূল্যে রাজাকার-জঙ্গীবাদী-আগুন সন্ত্রাসী ও তার সঙ্গী বিএনপি এবং বেগম খালেদা জিয়াকে ক্ষমতার বাইরে রাখতে হবে। এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য সামনে নিয়ে আমরা আগামী ছয়টি মাস অতিক্রম করব।’ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শুকুর আলী শুভ। সাংবাদিকদের জন্য মহার্ঘ্য ভাতা আসছে ॥ বিডিনিউজ জানায়, সাংবাদিকদের বেতন বাড়াতে ওয়েজ বোর্ড গঠনের পর মহার্ঘ্য ভাতা ঘোষণার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন, ‘মহার্ঘ্য ভাতার প্রজ্ঞাপন জারির জন্য তথ্য মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে সব ধরনের প্রক্রিয়া শেষ করেছে। সেটি প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষরের অপেক্ষায় রয়েছে। এপ্রিলের মধ্যেই সেটি জারি করা সম্ভব হবে।’ শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তথ্যমন্ত্রী। সংবাদকর্মীদের বেতন বাড়াতে গত ২৯ জানুয়ারি অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মোঃ নিজামুল হককে প্রধান করে নবম ওয়েজ বোর্ড গঠন করা হলেও আগের মতো মহার্ঘ্য ভাতা এখনও ঘোষণা করা হয়নি। সংবাদকর্মীদের বিভিন্ন সংগঠন মহার্ঘ্য ভাতার দাবি জানিয়ে আসছিল। ওয়েজ বোর্ড নিয়ে তথ্যমন্ত্রীর সমালোচনাও করে আসছিলেন সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতারা। ইনু বলেন, ‘ওয়েজ বোর্ড নিষ্পত্তি করবেন চেয়ারম্যান ও অন্যান্য সদস্যরা। যখন তারা নিষ্পত্তি করবে তথ্য মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করবে। মনে রাখতে হবে, ওয়েজ বোর্ড তৈরির বিষয়ে এর গঠন পর্যন্ত তথ্য মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা। এর বাইরে ভূমিকা নেই।’ ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, তিন হাজার পত্রপত্রিকার মধ্যে প্রায় ৯০/৯১টি অষ্টম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করছে। ‘তাহলে বাকিরা কেন করল না? আমরা তো সাংবাদিকদের নিয়ে গঠিত তদারকি সেলের কাছে দায়িত্ব দিয়েছি। যারা করল না, সেখানে কেন ঘটনা ঘটছে, সেটা নিষ্পত্তি করতে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সহযোগিতা কামনা করছি।’ ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীদের বেতন কাঠামো নির্ধারণেও বোর্ডের চেয়ারম্যান হাত দেবেন বলে জানান তথ্যমন্ত্রী। প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধের মতো কোন ধারা বা উপধারা থাকবে না বলে আশ্বস্ত করেন তিনি। অনুষ্ঠানে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শুকুর আলী শুভসহ সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
×