ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

পূর্বাচলে মিলছে ৫২ একর জমি ॥ শীঘ্রই হস্তান্তর

ঢাকা ভার্সিটির দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২২ এপ্রিল ২০১৮

ঢাকা ভার্সিটির দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে

বিভাষ বাড়ৈ ॥ পূরণ হতে চলেছে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণের স্বপ্ন। রাজধানীর অদূরে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৫২ একর জায়গাজুড়ে হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুুনিক একাডেমিক অবকাঠামো সম্পন্ন দ্বিতীয় ক্যাম্পাস। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য সর্বাধুনিক আবাসিক সুবিধা নিয়ে এ ক্যাম্পাস পরিচালিত হবে পূর্ণাঙ্গ মেডিক্যাল ফ্যাকাল্টিসহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম। স্থানান্তর হতে পারে ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টি ও বিভাগের কার্যক্রমও। ১৯২১ সালে ৬৪০ একর জমি নিয়ে যাত্রা শুরু করে আজ মাত্র ৩০০ একর জায়গা অবশিষ্ট থাকায় ধুঁকতে থাকা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসে আশার আলো দেখছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সকলেই। জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ইতোমধ্যেই ৫২ একর জমি দেয়ার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে। রাজউকের সংশ্লিষ্ট বোর্ডের নীতিগত অনুমোদনও শেষ। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অনুশাসন পেলেই বরাদ্দপত্র বিশ্ববিদ্যালয়কে দেবে রাজউক। রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আবদুর রহমান বলেছেন, কাজের অবস্থা অত্যন্ত পজেটিভ। আমরাও চাই পূর্বাচলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠুক। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষ রাজউকের প্রাথমিক বরাদ্দপত্র পেতে যাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের পরিধি যেমন বেড়েছে তেমনি কমেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব জমি। ৬৪০ একর থেকে আজ আছে মাত্র ৩০০ একর। অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার আশানুরূপ অগ্রগতি করতে পারছে না এটা হলো বাস্তবতা। এমন এক পরিস্থিতিতে ৫২ একর নতুন জমি অনেক বড় একটা পাওয়া হবে। ২০২১ সালের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা একাডেমিক ও অবকাঠামোগতভাবে বিশ্বের আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপান্তর করতে চাই। পূর্বাচলে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুুনিক একাডেমিক অবকাঠামো সম্পন্ন ক্যাম্পাস। সর্বাধুনিক আবাসিক সুবিধা নিয়ে এ ক্যাম্পাসে পরিচালিত হবে পূর্ণাঙ্গ মেডিক্যাল ফ্যাকাল্টিসহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম। মেডিক্যাল ফ্যাকাল্টির জন্য হবে আধুনিক হাসপাতাল। যদি জায়গা সঙ্কুলান হয় তবে সেখানে স্থানান্তর হতে পারে ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টি ও বিভাগের কার্যক্রমও। শিক্ষকরা বলছেন, নতুন ক্যাম্পাস হলে তা হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি মাইলফলক। নানা ব্যতিক্রমী উদ্যোগে স্বপ্নের শহর পূর্বাচল ক্রমশ আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। উপশহরটির ৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ লেকের সবচেয়ে প্রশস্ত স্থান ১২ ও ১৭ নম্বর সেক্টরের মাঝে স্থাপন করা হবে ইকোপার্ক। ডিজাইনটি এমনভাবে করা হয়েছে যা দেখতে মনে হবে ভাসমান পার্ক। জানা গেছে দৃষ্টিনন্দন এই পার্কের পাশেই দেয়া হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস। ফলে ক্যাম্পাসটি পাবে সাধারণ সৌন্দর্যময় এক দুর্লভ পরিবেশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো সঙ্কটের বিভিন্ন দিক নিয়ে শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, মূলত বছরের পর বছর প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রমের বিস্তৃতির বিপরীতে অবকাঠামো বাড়ার পরিবর্তে ক্রমেই কমেছে। ফলে আজ হাজার হাজার ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়ে রীতিমতো ধুঁকছে বিশ্ববিদ্যালয়, যার আছে কয়েকশ বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও প্রতিষ্ঠান। শিক্ষক ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিধি ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে। ভয়াবহ জমি সঙ্কটে পড়েছে দেশের গৌরবোজ্জ্বল এই প্রতিষ্ঠানটি। ১৯২১ সালে ৬৪০ একর জমি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু হলেও বিভিন্ন সময়ে ৩৪০ একর জমিই হাতছাড়া হয়েছে। অবশিষ্ট জায়গার কিছু অংশ লিজ দেয়ার পাশাপাশি বড় বড় অট্টালিকা নির্মাণ করে ক্যাম্পাসের পরিবেশ ঘিঞ্জি করে তোলা হয়েছে। বেদখল হওয়া জমি উদ্ধারের বিষয়ে বিভিন্ন সরকারের সময়ে কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা কামনা করেছেন। কতটুকু জমি বেদখল হয়েছে তার হিসাবও হয়েছে বিভিন্ন সময়। কিন্তু অগ্রগতি তেমন হয়নি কখনই। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নতুন জমি পাওয়ার জন্য বিভিন্ন সরকারের সময়ে চেষ্টা করেছে কর্তৃপক্ষ। এতদিন দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি দেখেনি কেউ। অবকাঠামো সঙ্কট ॥ ক্রমশ ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং শিক্ষার পরিধি বিস্তারের ফলে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো সঙ্কট তীব্র হয়েছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনুপাতে অবকাঠামো উন্নয়ন এবং আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মেলাতে যে জমিটুকু দরকার তার জন্য কখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠ, কখনও বা খোলা জায়গায় ভবন নির্মাণ করে ক্যাম্পাসের মূল নক্সা তছনছ করে ফেলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের পাশে অডিটরিয়াম নির্মাণের জন্য প্রায় অর্ধশত গাছ কেটে ফেলা নিয়েও পানি কম ঘোলা হয়নি। এর আগে লাইব্রেরির সামনে ফারসী স্টাডিজ সেন্টারের ভবন নির্মাণের জন্য অনেক গাছ কাটা হয়। জগন্নাথ হলের পাশেও গাছ কেটে বর্ধিত ভবন নির্মাণের কাজ করা হয়েছে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞর বিভিন্ন সময়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ক্যাম্পাসে এখন যে পরিমাণ গাছ রয়েছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। কিন্তু সরকারের কাছ থেকে নতুন জায়গা নিতে ব্যর্থ হয়ে প্রশাসন বছরের পর বছর কেবল ক্যাম্পাসের গাছ কেটে ভবন নির্মাণ করেছে। ফলে নষ্ট হয়েছে প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ। দিন দিন ক্যাম্পাস তার বৈশিষ্ট্য হারাচ্ছে। হয়ে উঠছে ঘিঞ্জি। তথ্য মতে, ১২টি বিভাগে ৮৭৭ জন ছাত্র এবং ৬০ জন শিক্ষক নিয়ে ১৯২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু হয়েছিল। প্রায় ১০০ বছর হতে চলেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষক আছেন প্রায় এক হাজার ৭০০। ছাত্রছাত্রী প্রায় ৩৪ হাজার। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪০ গুণ এবং শিক্ষকের সংখ্যা ২৫ গুণ বেড়েছে। কিন্তু কমে গেছে জমির পরিমাণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে জায়গা রয়েছে তার মধ্যে ব্রিটিশ কাউন্সিল, আণবিক শক্তি কমিশন ও বিভিন্ন স্কুল-কলেজকে লিজও দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নথিপত্র প্রমাণ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন মূল ভবনের দুই-তৃতীয়াংশ রিকুইজিশন করে সামরিক হাসপাতাল স্থাপন করা হয়। যুদ্ধের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো ভবনটিই হাতছাড়া হয়ে যায়। বর্তমানে সেখানে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশ ভাগের পর সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশস্ত প্রশাসনিক ভবন দখল করে সেখানে হাইকোর্ট প্রতিষ্ঠা করে। ফজলুল হক হলের পাশের খেলার মাঠও নিয়ে নেয়া হয় রেলওয়ে সম্প্রসারণের জন্য। স্বাধীনতার পরও দফায় দফায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি বেহাত হয়েছে। গ্রীন রোড এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ বিঘা জমির ১২ বিঘাই বেদখল হয়ে গেছে। বর্তমান মিন্টো রোড এবং হেয়ার রোডের বাংলোগুলো ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে, যেগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বসবাস করতেন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর থেকেই জমি সঙ্কট প্রকট হতে থাকে। বিশেষ করে একটি প্রাদেশিক রাজধানীর জন্য প্রয়োজনীয় সরকারী অফিস-আদালত স্থাপনের জন্য জায়গার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। এ জন্য সেক্রেটারিয়েট বা সচিবালয় স্থাপনের জন্য নেয়া হয় ইডেন কলেজের ভবনগুলো, হাইকোর্টের জন্য গবর্নর হাউস এবং প্রাদেশিক আইন সভার জন্য জগন্নাথ হলের কেন্দ্রীয় ভবন। জগন্নাথ হাউস সরকার জবরদখল করে নেয়ায় তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন স্থানান্তরিত হয় জগন্নাথ হলের দক্ষিণ ভবনে (বর্তমান দক্ষিণ বাড়ি)। বর্তমান বুয়েট, আলিয়া মাদ্রাসা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রূপসী বাংলা হোটেল, শিশুপার্কের কিছু অংশ এবং বদরুন্নেসা কলেজের জন্যও আরও কিছু জমি বিশ্ববিদ্যালয়কে ছাড়তে হয়। এছাড়া শিক্ষা ভবনের পূর্বদিকের জমিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছিল। যাও ছাড়তে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান অনেকটা হতাশ হয়েই বলছিলেন, প্রায় সাড়ে তিনশ একর জমি হাতছাড়া হয়েছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে। বর্তমান মিন্টো রোড এবং হেয়ার রোডের লাল বাংলোগুলো ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে, যেগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বসবাস করতেন। পাকিস্তান আমল মূলত ১৯৪৭ সালের পর থেকেই জমি হাতছাড়া হতে থাকে। এসব বলেও তো এখন লাভ নেই। এখন আমরা আশা করছি পূর্বাচলে নতুন জমিটা পেলে আমাদের বিশাল একটা কাজ হবে। নতুন ক্যাম্পাসের জন্য জমির বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ক্যাম্পাসের পরিবেশে ঘিঞ্জি হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন মহল থেকে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠার দাবি তোলা হয়েছিল বহুবারই। বিগত সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের জন্য রাজউকের জমি দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্তের তথ্য আসে। তৎকালীন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আফম ইউসুফ হায়দারকে প্রধান করে বিশ্ববিদ্যলয় একটি মাস্টারপ্ল্যান কমিটিও করা করেছিল। কিন্তু ওই পর্যন্তই। পরবর্তীতে অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক উপাচার্যের দায়িত্ব নেয়ার পর জমির বিষয়ে খোঁজ খবর করা হলে দেখা গেল বাস্তবে জমি নিয়ে রাজউকের কোন উদ্যোগ নেই। জমি দেয়ার বিষয়ে কোন তথ্য মেলেনি। তবে আজ পরিস্থিতি ভিন্ন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই রাজউক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে দিতে যাচ্ছে ৫২ একর জমি। রাজউক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আবদুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেছেন, ৫২ একর জায়গা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা দিচ্ছি। ইতোমধ্যেই আমাদের বোর্ডের নীতিগত অনুমোদনও হয়ে গেছে। আমরা চাই পূর্বাচলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠুক। আমরা খুবই পজেটিভ। শীঘ্রই কাজ শেষ হবে। মন্ত্রণালয়ের অনুশাসন পেলেই আমরা দিয়ে দেব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান বলছিলেন, আগামী সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই আমরা রাজউকের প্রাথমিক বরাদ্দপত্র পেতে পারি। পেলে আমাদের টাকা জমা দিতে হবে। এই জমি হলে আমরা আমাদের পূর্ণাঙ্গ মেডিক্যাল ফ্যাকাল্টিসহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম সেখানে প্রতিষ্ঠা করব। এজন্য একটি হাসপাতালও করতে হবে। মেডিক্যাল ফ্যাকাল্টিকে মাথায় রেখেই এখন পর্যন্ত আমাদের পরিকল্পনা এগুচ্ছে। তবে জায়গা সঙ্কুলান হলে সেখানে ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টিও স্থানান্তর হতে পারে। নতুন ক্যাম্পাস হলে কি ধরনের প্রভাব পড়তে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমে? এমন প্রশ্নে উপাচার্য বলেন, এটি খুবই ইতিবাচক একটি বিষয়। মনে রাখতে হবে এতে কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোর বিস্তৃতিই হবে তা নয়, এ বিস্তৃতি হবে অত্যন্ত পরিকল্পিত। এটা এমন না যে কেবল একটি বা দুটি বিল্ডিং হবে। অত্যন্ত পরিকল্পিত সম্প্রসারণ হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের, থাকবে একাডেমিক ডিসিপ্লিন নিশ্চিত। উপাচার্য বলেন, মেডিক্যাল ফ্যাকাল্টি এমনভাবে করা হবে যাতে দেশের সামগ্রিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় একটা ইতিবাচক পরিবর্তন আসে। চিকিৎসা ব্যবস্থায় অগ্রগতি আসবে। কারণ তখন বিশ্ববিদ্যালয় ও ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে সমন্বয় হবে। ইন্ডাস্ট্রি ও ফার্মাসিউটিক্যালসকে সম্পৃক্ত করা হবে। এখানে কেবল মেডিক্যাল টিচিং বিষয় থাকবে না। যেখানে টিচিংয়ের সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রির সমন্বয় করা হবে। মেডিক্যাল ফ্যাকাল্টিতে থাকবে ভাল একটি হাসপাতাল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগকে স্থানান্তর করতে হবে। মেডিক্যাল ফ্যাকাল্টির মধ্যে যে অনেক ইউনিট আছে। আমরা ভাল এক্সপার্টকে দায়িত্ব দেব। তখন আরও অনেক বিষয় বের হয়ে আসবে। জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কেবল কয়েকটি বিভাগ নয়। প্রতিষ্ঠানের অধীনে আছে সরকারী বেসরকারী প্রায় ১০০ মেডিক্যাল কলেজসহ আরও প্রায় ২০০ মেডিক্যাল সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আছে নার্সিং ইনস্টিটিউট, হেলথ টেকনোলজি, ফিজিওথেরাফিসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছেন, নতুন ক্যাম্পাস হলে তা হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি মাইলফলক। বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের নীল দলের আহ্বায়ক ও দর্শন বিভাগের অধ্যাপক আবু জাফর মোহম্মদ সালেহ বলছিলেন, সরকার যদি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৫২ একর জমি দেয় তা আমাদের জন্য বিশাল একটা কাজ হবে। বছরের পর বছর ধরে প্রতিষ্ঠানের ওপর শিক্ষা কার্যক্রমের চাপ বেড়েছে। এখন মাথাভারি হয়ে গেছে। নতুন ক্যাম্পাস হলে তা পুরো বিশ্ববিদ্যালয় তথা দেশের জন্যই বড় একটা কাজ হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এ অধ্যাপক আরও বলছিলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জায়গা খুবই জরুরী হয়ে পড়েছে। যে কাজটা হতে চলেছে তা অনেক বড় একটা কাজ। যা দেশের শিক্ষা তথা দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্যও ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে।
×