ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কালবৈশাখীর তাণ্ডব মঙ্গলবার পর্যন্ত চলতে পারে

হঠাৎ দমকা হাওয়ায় মানিক মিয়া এভিনিউ লণ্ড ভণ্ড

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২২ এপ্রিল ২০১৮

হঠাৎ দমকা হাওয়ায় মানিক মিয়া এভিনিউ লণ্ড ভণ্ড

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রকৃতিতে বৈশাখ আসার আগেই শুরু হয়েছে কালবৈশাখীর তাণ্ডব। সম্প্রতি তা প্রবল আকার ধারণ করছে। প্রায় প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও কালবৈশাখী ছোবল হানছে। এতে ঘড়বাড়ি, গাছপালা এবং ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। শিলাবৃষ্টি এবং ঝড়ো হাওয়ায় গাছে থোকায় থোকায় ঝুলতে থাকা আম পড়ে যাচ্ছে। ক্ষতি হচ্ছে বোরো ধানের। এ অবস্থায় আবহাওয়া অধিদফতর আভাস দিল আরও বড় ধরনের কালবৈশাখীর। শনিবার আবহাওয়া অফিসের পক্ষ থেকে দেশের ওপর দিয়ে বড় ধরনের ঝড়ো হাওয়ার বিশেষ সতর্ক বার্তা দেয়া হয়েছে। এই বিশেষ সতর্ক বার্তায় উল্লেখ হয়েছে আজ রবিবার রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, যশোর, কুষ্টিয়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, সিলেট, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, কুমিল্লা এবং নোয়াখালী অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০-৮০ কিমি. বেগে বৃষ্টি, বজ্রবৃষ্টিসহ শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকেও ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সঙ্কেত (পুনঃ) ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া দেশের অন্যত্র পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেড়ে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। তবে কোন সামুদ্রিক ঝড় ও ভারি বৃষ্টির কোন সম্ভাবনা নেই। তারা জানিয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে রয়েছে। তারা জানায়, বিগত কয়েকদিন ধরেই দেশের ওপর দিয়ে পুরোমাত্রায় বয়ে যাচ্ছে কালবৈশাখী ঝড়। তাই অভ্যন্তরীণ সব নদীতেই রয়েছে ঝড়ের হুঁশিয়ারি। আগামী মঙ্গলবার নাগাদ এই অবস্থা বজায় থাকতে পারে। মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পাবে। সারাদেশের পাশাপাশি খোদ রাজধানী ঢাকাতে প্রায় প্রতিদিন কালবৈশাখীর তা-ব বয়ে যাচ্ছে। সকাল-সন্ধ্যায় ঝড়ো হাওয়া বজ্রপাত এবং ভারি বৃষ্টিপাতের দেখাও মিলছে। শনিবার রাজধানী ঢাকতে ২৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। দেশের অন্যত্রও ভারি বৃষ্টিপাতের রেকর্ডও রয়েছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বয়ে যাওয়া কালবৈশাখীর আঘাতে রাজধানীর মানিকমিয়া এভিনিউয়ের সামনে রাখায় বড় বড় গাছপালা উল্টে পড়েছে। তবে এতে কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। সরেজমিনে মানিক মিয়া এভিনিউয়ে গিয়ে দেখা গেছে ন্যাম ভবনের সামনের রাস্তায় থাকা বড় বড় গাছ এবং কৃষ্ণচূড়া গাছের ডালপালা এবং কা- ভেঙ্গে রাস্তায় পড়ে গেছে। এ রাস্তায় অধিকাংশ গাছপালাই ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া সংসদ ভবনের দিকে রাস্তায় থাকা আম ও বট গাছের ডালপালা ভেঙ্গে পড়েছে। বেশ কয়েকটি পামগাছ মূলসহ উল্টে গেছে। অথচ এই গাছগুলো মানিক মিয়া এভিউনিয়ে শোভাবর্ধন করে চলছিল। প্রচ- রোদেও পথিকের এক দ- শান্তি প্রদান করত। সবুজে ছেয়ে থাকতো সারা এলাকা। সংসদের সামনের রাস্তার সড়ক বিভাজনে যেসব গাছ ছিল সেগুলো ভেঙ্গে পড়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার পর বৃষ্টির সময় হঠাৎ কালবৈশাখীর তা-বে লাইন ধরে ১৫/২০টি গাছ ভেঙ্গে পড়ে। ঝড়ের সময় সেখানে দায়িত্বরত পুলিশরা জানিয়েছেন, সন্ধ্যা সাতটার আগে বৃষ্টি চলছিল। এ সময় হঠাৎ জোরে দমকা হাওয়ায় কয়েকটি গাছ ভেঙ্গে পড়ে। কয়েকটি উপড়ে যায়। বৃষ্টি থাকায় রাস্তায় লোকজন চলাচল না থাকায় কেউ আহত হয়নি। তবে রাজধানী হাইস্কুলের মাঠে কয়েকটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুধু রাজধানী ঢাকা নয়। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রত্যেকদিনই কালবৈশাখী হানা দিচ্ছে। এতে ফসলের যেমন ক্ষতি হচ্ছে তেমনি আমের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে জানা গেছে। স্থানীয়রা জানান প্রচ- বাতাসের কারণে আমের গাছে গুটিআম রয়েছে তা ঝরে পড়ছে। এছাড়া শিলাবৃষ্টির কারণেও এসব আম ঝরে যাচ্ছে। এছাড়া যেসব এলাকায় বোরো ধান রয়েছে শিলাবৃষ্টির কারণে বোরো ধানেরও অনেক ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া প্রত্যেকদিন বজ্রপাতে দেশের কোথাও না কোথাও মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।
×