ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রামেকে শ্রমিকদের মজুরির ৭০ ভাগই ঠিকাদারের পকেটে

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ২১ এপ্রিল ২০১৮

রামেকে শ্রমিকদের মজুরির ৭০ ভাগই ঠিকাদারের পকেটে

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ নিয়মমাফিক কাজ করেও নির্ধারিত মজুরি পাচ্ছেন না রাজশাহী মেডক্যাল কলেজ হাসপাতালের দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিকরা। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এদের সংখ্যা ১৭৫ জন। তারা নিয়মিত অফিসে হাজিরা দেন। তারপর হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করেন। সারামাস পরিশ্রম করে তাদের কপালে জোটে মাত্র ৮০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা বেতন। অথচ তাদের মাস শেষে মজুরি পাওয়ার কথা ৪ হাজার ১৭০ টাকা। শ্রমিকদের এমন বেতন অমানবিক বলে দাবি করেছেন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিকরা। নির্ধারিত মজুরি কম দেয়ার কারণে রামেক হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া এমন অল্প বেতন নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। রামেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, প্রতিদিন শ্রমিকপ্রতি ১৩৯ টাকা করে বরাদ্দ দেয়ার চুক্তিতে কাজ পান ঠিকাদার। কিন্তু শ্রমিকদের প্রতিদিনের মজুরি দেয়া হচ্ছে ৩৫ থেকে ৫০ টাকা। ঠিকাদারের মাধ্যমে এসব শ্রমিক কাজে নেয় রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রামেক হাসপাতালের দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা হাসপাতালে কাজ করে আসছে। পৃথিবীর সব জায়গায় দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতির কারণে বেতন বাড়ে। অথচ রামেক হাসপাতালই ব্যতিক্রম যেখানে দিনে দিনে কমে যাচ্ছে মজুরি। এসব ঠিকাদারের কারসাজি বলে অভিযোগ করেন তারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিকরা জানান, কয়েক বছর আগে রামেক হাসপাতালের একজন দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিক বেতন পেতেন ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা। কিন্তু দিনে দিনে তা কমে ৮০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। রামেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, ঠিকাদারের মাধ্যমে দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিক হাসপাতালে খাটানো হয়ে থাকে। বর্তমানে হাসপাতালে ১৭০ থেকে ১৭৫ জন দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিক কাজ করে। ঠিকাদারের লোকজন এসব শ্রমিকের বেতন দিতে তিনটি খাতা ব্যবহার করে। ১ নম্বর খাতায় আছে অভিজ্ঞ শ্রমিকরা। এরা দীর্ঘদিন ধরে রামেক হাসপাতালে কাজ করে আসছেন। এ খাতায় তালিকাভুক্ত শ্রমিকরা বেতন পেয়ে থাকের এক হাজার ৫০০ টাকা করে। অপরদিকে ২ নম্বর খাতায় অন্তর্ভুক্ত শ্রমিকরা তুলনামূলক কম অভিজ্ঞ। তাদের মাসিক বেতন দেয়া হয় এক হাজার টাকা। আর ৩ নম্বর খাতায় শ্রমিকদের মাসিক বেতন দেয়া হয় ৮০০ টাকা। দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিকদের কয়েকজন অভিযোগ করেন, বেতন নিয়ে ভয়ে কেউ মুখ খোলেন না। কেউ মুখ খুললে তার চাকরি থাকে না। নানান অপবাদ দিয়ে তাদের চাকরি থেকে বের করে দেয়া হয়। বেকার হয়ে যাওয়ার ভয়ে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলার সাহস পায় না। এ বিষয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি তারেক জানান, রামেক হাসপাতালের দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিকদের সরবরাহ করার কাজটি পেয়েছেন কুষ্টিয়ার টিএসএস নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের আশরাফুদ্দৌলা নামে এক ব্যক্তি। তিনি (তারেক) স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন।
×