ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মুন্সীগঞ্জে হারিয়ে যায়নি গলিয়া

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ২১ এপ্রিল ২০১৮

 মুন্সীগঞ্জে হারিয়ে যায়নি গলিয়া

মুন্সীগঞ্জে এখনও হারিয়ে যায়নি গলিয়া বা গলোইয়া। দেশের নানা প্রান্তে পহেলা বৈশাখের দিন যে মেলা হয়, সেটাকে কেতাবি ভাষায় বৈশাখী মেলা বলা হয়। কিন্তু মুন্সীগঞ্জ-বিক্রমপুর অঞ্চলে পহেলা বৈশাখের দিনের মেলা গলিয়া বা গলোইয়া হিসেবে পরিচিত। তিন দশক আগেও প্রায় জেলার প্রতিটি গ্রামে বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন এই বারোয়ারি মেলা গলিয়া কিংবা গলোইয়া বসত। কিন্তু এখন কালের পরিক্রমায় এই গলিয়ার সংখ্যা অনেক কমে গেছে এ কথা সত্যি। তবে বিলুপ্ত হয়ে যায়নি। এখনও মুন্সীগঞ্জ জেলার প্রতিটি ইউনিয়নে অন্তত একটি গলিয়া বসে। এই গলিয়া কোথাও একদিন, আবার কোথাও ২-৩ দিন বসে। আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা-শিশুদের পদচারণায় প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে গলিয়া। এই গলিয়াতে বারোয়ারি জিনিসপত্রের দেখা মেলে। বিশেষ করে খই, মুড়ি, বাতাসা, মুরলি, জিলাপিসহ শিশুদের নানা রকমের খেলনা পাওয়া যায় এই গলিয়ায়। এই গলিয়া মেলার জন্য এ অঞ্চলের মানুষ পুরো একটি বছর অপেক্ষায় থাকেন। লৌহজং উপজেলার সাতঘড়িয়া, হলদিয়া, কলমা ও মাওয়া এই গলিয়া হয় এবার। তবে সবচেয়ে বড় হয়েছে হলদিয়ায়। এ ছাড়াও মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার বজ্রযোগিনীসহ টঙ্গীবাড়ি, শ্রীনগর, সিরাজদিখানের বিভিন্ন এলাকায় এই গলিয়া হয়েছে। সেখানে শিশুদের উপস্থিতি ঝিল বেশি। নববর্ষের দিন ও নববর্ষের আগের দিন এবং পরের কয়েকদিন ধরে স্থানভেদে চলছে এই গলিয়া। প্রাচীন সভ্যতার এই জনপদে যুগ যুগ ধরে বাংলা নববর্ষ এবং চৈত্রসংক্রান্তিতে এই মেলা হয়ে গ্রামীণ এই মেলাকে ঘিরে বিশেষ উৎসব বসে। যা দেশজ সংস্কৃতির এক অন্যতম অনুষঙ্গকে ঘিরে রয়েছে নানা ইতিহাস। নতুন প্রজন্মকে এই দেশজ সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত করা জরুরী বলে মনে করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপিকা সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি। হলদিয়ার মেলায় আসা শিশু রিয়া মনি বলেন, ‘এখানে এসে আমার অনেক ভাল লেগেছে। খেলনা এবং বাঁশি ও খাবার কিনেছি।’ -মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল, মুন্সীগঞ্জ থেকে
×