স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ধলপুরে আম খাওয়া কেন্দ্র করে বিরোধের জের ধরে আফসার উদ্দিন শিহাব (১৫) নামে এক স্কুলছাত্রকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার জড়িত থাকার অভিযোগে হৃদয় নামে এক কিশোরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিকে শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে শিহাবের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ির এসআই বাচ্চু মিয়া জানান।
স্থানীয়রা জানান, নিহত শিহাব ধলপুরের একটি স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র ছিল। বাবার নাম সিএনজিচালক সালাউদ্দিন মিয়া সাজু ও মা হাসিনা বেগম গৃহিণী। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা জেলার মেঘনা উপজেলার মইষারচর গ্রামে। ধলপুর বাদল সরকার গলির ৬০/৮/এ নম্বর মানিক মিয়ার ৫ তলা ভবনের নিচ তলায় পরিবারের সঙ্গে ভাড়া থাকত শিহাব।
মর্গে নিহতের বন্ধু মজিবর জানায়, বুধবার তার ছোট ভাই ইমরান ও শিহাবসহ কয়েকজন ধলপুর ১০ নম্বর মানিক মিয়া কোয়ার্টারের পুকুরে যায় গোসল করতে। সেখানে ইমরান গাছ থেকে কয়েকটি আম পাড়ে। এ সময় পাশের সিটি কলোনির জুয়েল, হৃদয়সহ কয়েকজন ইমরানের কাছে আম চায়। তাদের আম না দেয়ায় কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তারা ইমরানকে চড়-থাপ্পড় মারে। পরে সেখান থেকে চলে এলেও ওইদিনই সেখানে এক বিচারের মাধ্যমে তাদের মিল করিয়ে দেয়া হয়। মজিবর আরও জানায়, পরের দিন বৃহস্পতিবার বিকেলে শিহাবসহ তার বন্ধুরা কোয়ার্টারে ক্রিকেট খেলার জন্য যায়। সেখানে ক্রিকেট খেলা শেষে হৃদয়, জুয়েলসহ ২০/২৫ জন তাদের ধাওয়া করে। কোয়ার্টার থেকে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় শিহাবকে তারা ধরে ফেলে। পরে হৃদয় তার সঙ্গে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে শিহাবের পেটের বাম পাশে আঘাত করে। পরে তিনিসহ বন্ধুরা শিহাবকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নিহতের বাবা সাজু মিয়া জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিহাবকে ঢামেকের জরুরী বিভাগে ভর্তি করা হয়। রাতে তাকে অস্ত্রোপচার কক্ষে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার ভোরে শিহাবের মৃত্যু হয়।
যাত্রাবাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তোফায়েল আহমেদ জানান, বুধবার ধলপুর ১০ নম্বর মানিক মিয়া কোয়ার্টারে আম খাওয়া নিয়ে সমবয়সী কয়েকজনের সঙ্গে শিহাবের ঝগড়া হয়। এরপর বৃহস্পতিবার বিকেলে শিহাবসহ তার বন্ধুরা কোয়ার্টারের মাঠে ক্রিকেট খেলতে গেলে হৃদয়, জুয়েলসহ ২০/২৫ জন তাদের ধাওয়া করে। এ সময় হৃদয় ধারালো ছুরি দিয়ে শিহাবের পেটে আঘাত করে। পরে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার ভোরে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত হৃদয়কে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পরিদর্শক তোফায়েল জানান।
