ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

হালদায় ডিম ছেড়েছে মা মাছ, আহরণের মহোৎসব

প্রকাশিত: ০৫:২১, ২১ এপ্রিল ২০১৮

হালদায় ডিম ছেড়েছে মা মাছ, আহরণের মহোৎসব

চট্টগ্রাম অফিস/ হাটহাজারী সংবাদদাতা ॥ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদায় এখন ডিম সংগ্রহের মহোৎসব। শত শত ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে হালদার বুকে নেমে পড়েছেন হাজারো ডিম সংগ্রহকারী। এ ডিম থেকে উৎপাদিত হবে রেণুপোনা, যা ছড়িয়ে পড়বে সারাদেশে। বৃহস্পতিবার রাতে হালদায় ডিম ছাড়ে কার্পজাতীয় মা মাছ। রুই, কাতল, মৃগেল, কালবাউশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ডিম ছেড়েছে। বেশ ক’বছরের মধ্যে এবার রেকর্ড পরিমাণ ডিম সংগৃহীত হবে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ডিম সংগ্রহ হয়েছে ২২ হাজার ৬৮০ কেজি। সংগ্রহকারীরা বড় বড় পাতিলে তাদের আহৃত ডিম রেখে চিরায়ত পদ্ধতিতে রেণু উৎপাদনও শুরু করেছে। হালদা নদী ও পারে দিন রাত এখন অন্য ধরনের ব্যস্ততা। ঔৎসুক মানুষেরও বেশ ভিড়। রাউজান-হাটহাজারী সীমান্তে প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকায় ডিম সংগ্রহের কাজ চলছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক ও হালদা নদী গবেষক মনজুরুল কিবরিয়ার সঙ্গে মুঠোফোনো আলাপকালে তিনি বলেন, মা মাছ ডিম ছেড়েছে ১৯ এপ্রিল রাত দেড়টার দিকে। দশ বছরের মধ্যে এবার সবচেয়ে বেশি ডিম ছেড়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। সংগৃহীতও হচ্ছে বেশি। সরেজমিনে দেখা যায়, ৫ শতাধিক নৌকা ব্যস্ত রয়েছে ডিম সংগ্রহে। নদীরপারে বেশ ক’দিন আগে থেকেই পোনা সংগ্রহকারীরা তাঁবু টানিয়ে অপেক্ষায় ছিল। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ডিম ছাড়ার পরই তাদের মুখে হাসি ফোটে। এবার পাওয়া যাবে অনেক বেশি ডিম। সে জন্য ব্যবসাও হবে ভাল। সাধারণত প্রতিবছরের এপ্রিল-মে এবং জুনে হালদায় ডিম ছাড়ে কার্পজাতীয় মা মাছ। কয়েক দফায় ডিম ছাড়া হয়। এরমধ্যে প্রথমদফা ডিমের জন্য অধীর অপেক্ষায় থাকে জেলেরা। কারণ, চৈত্রের শেষে সেচ দেয়া পুকুরগুলোতে রেণুপোনার ব্যাপক চাহিদা থাকে। দেশের বিভিন্ন হ্যাচারিতে পোনা উৎপাদিত হলেও হালদার পোনার গুণগত মান আলাদা। কেননা, প্রাকৃতিক এ মৎস্যপ্রজনন কেন্দ্রে অনেক বড় সাইজের মা মাছ ডিম ছেড়ে থাকে। প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত রেণুর মানও উন্নত। দামও হ্যাচারির পোনা থেকে অনেক বেশি। এ বছর প্রকৃতি অনুকূল হওয়ায় মা মাছ ডিম ছেড়েছে বেশি।
×