ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা বিরোধীদের ছাত্রের মৃত্যুর গুজবকে পুঁজি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসায় তান্ডব ঘটনার রাতে পিস্তল বা রাইফেল থেকে কোন বুলেট ছোড়া হয়নি- দাবি ডিএমপির

টার্গেট সরকার পতন ॥ পিস্তলের গুলি চালিয়ে ছাত্র মৃত্যুর গুজব রটনা

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ২১ এপ্রিল ২০১৮

টার্গেট সরকার পতন ॥ পিস্তলের গুলি চালিয়ে ছাত্র মৃত্যুর গুজব রটনা

গাফফার খান চৌধুরী ॥ হেফাজতে ইসলামের পর কোটা সংস্কার আন্দোলনকে সরকার হটাও আন্দোলনে চূড়ান্ত রূপ দেয়ার চেষ্টা করেছিল সরকারবিরোধীরা। এজন্য প্রয়োজন ছিল লাশের। তারই ধারাবাহিকতায় মধ্যরাতে মিছিলে গুলি চালায় তারা। গুলিতে এক ছাত্রের মৃত্যু হবে বলে গুলি চালনাকারীরা অনেকটাই নিশ্চিত ছিল। এজন্য গুলি চালানোর পরপরই অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে পুলিশের গুলিতে এক ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে বলে রটিয়ে দেয় তারা। যাতে আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ লাভ করে। ছাত্র মৃত্যুর খবরকে পুঁজি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসায় পরিকল্পিতভাবে ইতিহাসের জঘন্যতম তা-ব চালায়। সবকিছু গুঁড়িয়ে দেয়। এরপর কবি সুফিয়া কামাল হলে এক ছাত্রীর পায়ের রগ কেটে দেয়ার গুজব ছড়িয়ে হলটির ছাত্রলীগ সভাপতিকে মারধর শেষে জুতার মালা পরিয়ে বের করে দেয়া হয়। গুলিতে আহত সেই ছাত্র এখনও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ওই ছাত্রের বুকে একটি ছোট ধাতব বুলেট বিদ্ধ হয়ে ফুসফুসের কাছে আটকে রয়েছে বলে দায়িত্বশীল চিকিৎসকরা নিশ্চিত হয়েছেন। বুলেটটি পিস্তল বা এ জাতীয় ছোট আগ্নেয়াস্ত্রের বলে চিকিৎসকদের ধারণা। অল্পের জন্য ওই ছাত্র প্রাণে বেঁচে গেছে। ঘটনার রাতে পিস্তল বা রাইফেল থেকে কোন বুলেট ছোড়া হয়নি বলে দাবি করেছেন ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার। এমন দাবির পর ছাত্রের বুকে বিঁধে থাকা রহস্যময় বুলেট নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় চলছে। ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে আসছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য। কারা বুলেট ছুড়েছে তা জানতে চলছে গভীর তদন্ত। আন্দোলন নিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন তারেক রহমানের সঙ্গে এক শিক্ষকের কথোপকথনসহ নানা বিষয় তদন্তে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। গত ৮ এপ্রিল রাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে পুলিশের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। পুলিশ টিয়ার শেল, রাবার বুলেট, জলকামান থেকে গরম পানি ও শটগান থেকে র্ছরার গুলি ছুড়ে। তাতে শতাধিক আন্দোলনকারী আহত হয়। এমন ঘটনার পরপরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। তার জের ধরে রাত দেড়টার দিকে ভিসির বাসভবনের ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় সব গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় এক মুক্তিযোদ্ধার গাড়িসহ দুটি গাড়ি। ভেঙ্গে চুরমার করা হয় ভিসির দুটি গাড়ি। ভিসির বাসভবন থেকে টাকা পয়সা স্বর্ণালঙ্কার, মাছ মাংস লুট হয়ে যায়। পরদিন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান দাবি করেন, হামলাকারীরা প্রাণনাশের জন্য এসেছিল। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে আহ্বায়করা বলেন, হামলার সঙ্গে বহিরাগতরা জড়িত। হামলাকারীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের কোন সম্পর্ক নেই। এমন ঘটনায় গত ১১ এপ্রিল সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষোভ প্রকাশ করে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। গত ১২ এপ্রিল এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে নাশকতার ঘটনায় শাহবাগ মডেল থানায় মোট চারটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। মামলাগুলো প্রশিক্ষিত উর্ধতন ডিবি কর্মকর্তারা তদন্ত করছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা, ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত আলামত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তাতে মনে হয়েছে, কোটা সংস্কারের দাবিকে কেন্দ্র করে ভিসির বাসভবনে হামলার যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা অত্যন্ত পরিকল্পিত। হামলাকারীরা পেশাদার। ভবনের সিসি ক্যামেরাগুলো ভেঙ্গে ফেলেছে হামলাকারীরা। তারা সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক পর্যন্ত খুলে নিয়ে গেছে। যা হামলাকারীরা যে প্রশিক্ষিত, তা প্রমাণ করে। হামলাকারীদের অনেকেরই মুখ কাপড় দিয়ে বাঁধা ছিল। তাও রীতিমতো রহস্যজনক। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে যে নাশকতা হয়েছে, তা একেবারেই পূর্ব পরিকল্পিত। আন্দোলনটি সাধারণ শিক্ষার্থীদের হলেও, পরবর্তীতে তার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় সরকারী দলে অনুপ্রবেশকারী সরকারবিরোধী ও স্বাধীনতাবিরোধী চক্রটি। আন্দোলন সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ দিতে তারা লাশ চেয়েছিল। এজন্য এক ছাত্রকে গুলি করে তারা। গুলি বর্ষণকারীরা ওই ছাত্র মারা যাবে বলে অনেকটাই নিশ্চিত ছিল। এজন্য তারা পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক পুলিশের গুলিতে এক ছাত্রের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে দেয়। আর তার জেরেই তা-বের ঘটনাটি ঘটে। দ্বিতীয় দফায় কবি সুফিয়া কামাল হলে এক ছাত্রীর পায়ের রগ কেটে দেয়ার গুজব ছড়িয়ে দেয়। এরপর হলটির ছাত্রলীগ সভাপতি ইফফাত জাহান এশাকে মারধর করে জুতার মালা পরিয়ে হল থেকে বের করে দেয়। তার ছবি দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয়ে ফায়দা লুটার চেষ্টা করে। বিএনপি চেয়ারপার্সন তারেক রহমানের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের কথোপকথনে কোটা সংস্কার আন্দোলন সরকার হটাও আন্দোলনে রূপ দেয়ার পরিকল্পনার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়। তদন্তকারী সংস্থাটি বলছে, ২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জামায়াত নেতা যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লাসহ সকল যুদ্ধাপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-ের দাবিতে ব্লগার ও অনলাইন এ্যাক্টিভিস্টদের মাধ্যমে সম্পূর্ণ অরাজনৈতিকভাবে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের সৃষ্টি হয়। এরপরই ওই বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি ব্লগার ইঞ্জিনিয়ার আহমেদ রাজীব হায়দার শোভনকে হত্যা করে জঙ্গীরা। এরপর থেকেই সারাদেশে ব্লগার, লেখক, প্রকাশক থেকে প্রগতিশীলদের হত্যার ঘটনা ঘটতে থাকে। সেই ধারাবাহিকতায়ই ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকায় সমাবেশের অনুমতি নিয়ে মতিঝিল, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম, তার সামনের অন্তত হাজারখানেক দোকানপাট, ৬ শতাধিক পবিত্র কোরান শরীফ, বায়তুল মোকাররম মসজিদে আগুন দেয় হেফাজতে ইসলাম। অন্তত দুই শতাধিক যানবাহন ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। তাদের হামলায় সাংবাদিক, পুলিশ, পথচারীসহ অন্তত দুই শতাধিক মানুষ আহত হন। অন্তত শতাধিক ভবন ভাংচুর করে। কমপক্ষে হাজারখানেক দরিদ্র হকারের দোকান পুড়িয়ে দিয়ে তাদের চিরদিনের জন্য পথের ফকির বানিয়ে দেয় হেফাজতে ইসলাম। পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত করেছিল তারা। পুলিশ ও পথচারীসহ কয়েকজনকে হত্যা করে তারা। সমাবেশের নামে রাত আড়াইটা পর্যন্ত মতিঝিলে অবস্থান করে তারা ১৩ দফা ইমানী দাবি না মানা পর্যন্ত অবস্থান না ছাড়ার ঘোষণা দেয়। পরদিন সমাবেশ থেকে সরকার পতনের আন্দোলনের ডাক দেয়ার কথা ছিল পরবর্তীতে হেফাজতে ইসলামের নেতারা আদালতে জবানবন্দী দিয়েছেন। জবানবন্দীতে সরকার পতন আন্দোলনের এমন পরিকল্পনার সঙ্গে বিএনপির শীর্ষ কয়েক নেতার নাম প্রকাশ হয়। পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সমাবেশ থেকে সরিয়ে দেয়। এরপর শত শত হেফাজত নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে বলে গুজব ছড়ানো হয়। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরেও সরকার বিরোধীদের এমন পরিকল্পনা ছিল। হেফাজতের পর কোটা সংস্কার আন্দোলনকে সরকার হটাও আন্দোলনের বড় ধরনের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে তৈরি করার চেষ্টা করেছিল সরকারবিরোধীরা। এমন পরিকল্পনার মূল নেতৃত্বে ছিল সরকারবিরোধী অন্যতম দুটি বড় রাজনৈতিক দল। যার একটি স্বাধীনতাবিরোধী ইসলামী দল হিসেবে পরিচিত। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার রাতে আহতদের প্রায় সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। রাত তিনটার দিকে দুই ছাত্র আসে। তারা অপেক্ষাকৃত বেশি আহত। তাদের ভাষ্য মোতাবেক, তাদের দেহে খুব সম্ভবত গুলি লেগেছে। তাদের এক্স-রে করা হয়। দেখা যায়, এক ছাত্রের বুকে একটি ধাতব বুলেট রয়েছে। অপর ছাত্রের শরীরে রাবার বুলেট লেগেছে। বারার বুলেটগুলো বের করা হয়। কিন্তু বুকে থাকা বুলেটটি বের করতে গিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। জানা গেছে, বুকে বুলেটবিদ্ধ ওই ছাত্রের নাম আশিকুর রহমান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষ সম্মান শ্রেণীর ছাত্র। বাড়ি কুষ্টিয়ায়। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একটি কেবিনে চিকিৎসাধীন। তার ডান বুকে একটি ধাতব বুলেট রয়েছে। বুলেটটি বুক ভেদ করে ফুসফুসের কাছ পর্যন্ত গিয়ে আটকে রয়েছে। বুলেটটি অপারেশন করা জটিল। এজন্য আশিককে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। সুবিধাজনক সময়ে আশিকের অপারেশন করা হবে। বুলেটটি পিস্তল বা এ জাতীয় ছোট আগ্নেয়াস্ত্রের বলে চিকিৎসকদের ধারণা। আশিকের ঘনিষ্ঠজনদের ভাষ্য, আশিককে খুব সম্ভবত পিস্তল দিয়ে কাছ থেকে গুলি করা হয়েছে। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছে আশিক। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কেবিনে চিকিৎসাধীন আরেক ছাত্রের নাম শাকিল। সে রসায়ন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষ সম্মান শ্রেণীর ছাত্র। তার শরীরে আটটি রাবার ও র্ছরার বুলেট লেগেছিল। সব বুলেট বের করে দেয়া হয়েছে। সেও প্রায় পুরোপুরি সুস্থ। গত বৃহস্পতিবারও সে পরীক্ষায়ও অংশ নিয়েছিল। চিকিৎসাধীন থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনা ও পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। আশিককে বঙ্গবন্ধু হলের ছাত্র আবু বক্কর সিদ্দিক পরিচয় দিয়ে মারা যাওয়ার খবর ছড়ানো হয়েছিল। এ ব্যাপারে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডাঃ মোঃ শাহ আলম তালুকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জনকণ্ঠকে বলেন, আশিক ও শাকিল কেবিনে চিকিৎসাধীন। তারা প্রাথমিকভাবে আশঙ্কামুক্ত। স্বাভাবিক মানুষ যা যা করতে পারে, আশিকও তাই তাই করতে পারে। এর বেশি আর কিছু জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন তিনি। ঘটনার রাতে গুলিবর্ষণের বিষয়ে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, ওই রাতে পুলিশের তরফ থেকে কোন প্রকার প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করা হয়নি। পিস্তল বা রাইফেল থেকে কোন প্রকার গুলি ছোড়া হয়নি। শুধু টিয়ারশেল ও শটগান থেকে রাবার ও র্ছরার বুলেট ছোড়া হয়েছে। আশিকের দেহে যে বুলেট থাকার কথা বলা হচ্ছে, তা পুলিশের নয়। তৃতীয় কোন পক্ষ লাশ ফেলে আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে ঘুরিয়ে দিতে পরিকল্পিতভাবে কাউকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি চালাতে পারে। আর সেই বুলেটে বিদ্ধ হতে পারে আশিক। তিনি আরও জানান, খুব সম্ভবত তারাই পুলিশের গুলিতে ছাত্র নিহতের গুজব ছড়িয়ে ভিসির বাসভবনে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে। গুজব ছড়ানোর সঙ্গে স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের জড়িত থাকার বিষয়ে প্রাথমিক তথ্য মিলেছে। এছাড়া গুজবের জেরে কবি সুফিয়া কামাল হলের ছাত্রলীগ সভাপতি ইফফাত জাহান এশা বিশ্ববিদ্যালয় ও সংগঠন থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পেছনেও স্বাধীনতাবিরোধী ওই চক্রটি জড়িত বলে প্রাথমিক তদন্তেই জানা গেছে।
×