ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

গাজীপুরে আওয়ামী প্রার্থীকে জাপার সমর্থন ॥ খালেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ খারিজ

প্রকাশিত: ০৫:১০, ২১ এপ্রিল ২০১৮

গাজীপুরে আওয়ামী প্রার্থীকে জাপার সমর্থন ॥ খালেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ খারিজ

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ জমে উঠেছে গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। শুক্রবার সরকারী ছুটির দিন। এদিন প্রার্থী ব্যস্ত সময় কাটান নিজ নিজ এলাকায়। মসজিদে জুমার নামাজে গিয়ে সেখানেও চলেছে প্রত্যক্ষ ও প্ররোক্ষ নির্বাচনী প্রচার। গাজীপুরে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। জেলার টঙ্গীতে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ ও প্রশিকা আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমকে এবং বিএনপির প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারকে সমর্থন দিয়েছে সামাজিক সংগঠন অঙ্গীকার। এদিকে খুলনায় খালেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ খারিজ, আপীল করেছেন ১৬ কাউন্সিলর প্রার্থী এবং সর্বত্র প্রশ্ন উঠেছে খুলনায় মেয়র পদে জাপার প্রার্থী নীরব কেন? অন্যদিকে নির্বাচনী আচরণবিধি পর্যবেক্ষণ করেছে ৫ ভ্রাম্যমাণ আদালত। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতার। গাজীপুর থেকে মোস্তাফিজুর রহমান টিটু জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রার্থীরা শুক্রবার জুমাবার হওয়ায় ব্যস্ত দিন কাটিয়েছেন। শুক্রবার সরকারী ছুটির দিন হওয়ায় প্রার্থীদের সমর্থনে দিনভর বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী ও কর্মকর্তা এবং ভোটাররা প্রার্থীদের বাসায় ভিড় জমিয়েছেন এবং কথাবার্তা বলেছেন ও সমর্থন জানিয়েছেন। নির্বাচনে বিজয়ী হতে প্রার্থীরা নানা কৌশল ও প্রচার নিয়ে তাদের উপদেষ্টা ও কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে দফায় দফায় ঘরোয়া বৈঠক করছেন। অনেক প্রার্থী নানা প্রতিশ্রুতি সংবলিত নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। আবার অনেকে নির্বাচনী প্রচারে নামার শেষ মুহূর্তে নানা বিষয় যাচাই-বাছাই করছেন। এছাড়াও এদিন তারা নিজেদের নির্বাচনী এলাকার মসজিদে ভোটারদের সঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করেছেন। এ সময় তারা ভোটারদের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করেছেন। জুমার নামাজে অংশ নিতে গিয়ে প্রার্থীরা ভোটার ও সমর্থকদের মাঝে কিছু সময় কাটিয়ে নানা আশার বাণী শুনিয়েছেন। গাজীপুরের এ নির্বাচনে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত দুই মেয়র প্রার্থী এদিন একই মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেছেন। এদিন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থীকে সমর্থন জানিয়েছে ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল জাতীয় পার্টির স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। এদিকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের এবারের নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে আগামী মঙ্গলবার এবং ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১৫ মে। প্রতীক বরাদ্দ ও ভোটগ্রহণকে সামনে রেখে প্রার্থী ও তাদের কর্মীসমর্থকরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। প্রতীক বরাদ্দের পরই প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারে জোরেশোরে নেমে পড়বেন। তাই ইতোমধ্যে তারা প্রায় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। নির্বাচনী প্রচার কার্যক্রমকে স্বাভাবিক ও বেগবান করতে প্রতিটি ওয়ার্ডে তৈরি করা হয়েছে নির্বাচনী প্রচার কমিটি। প্রতীক বরাদ্দ পেয়েই প্রার্থীরা তাদের কর্মীসমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনী প্রচারে মাঠে নেমে পড়বেন। যাবেন ভোটারদের বাড়ি, দোকান, বাজার, অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। নির্বাচনী প্রচার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু না হলেও প্রার্থীরা নানা কৌশলে প্রতীক বরাদ্দ পাবার আগে থেকেই নিজেদের পক্ষে সমর্থন আদায়ের জন্য ভোটারদের কাছে গিয়ে দেখা করে তাদের পক্ষে টানার চেষ্টা করছেন। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম শুক্রবার দিনভর ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। দিনের অধিকাংশ সময়ই তিনি বাসায় কাটিয়েছেন। সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে ভোটার ও বিভিন্ন সংগঠনের লোকজন তার সঙ্গে দেখা করে সমর্থন জানিয়েছেন। বেলা ১১ টার দিকে গাজীপুর মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত কুমার মল্লিক বাবুর নেতৃত্বে ও গাজীপুর মহানগর পূজা উৎযাপন কমিটির সদস্যরা এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মোঃ জাহাঙ্গীর আলমকে সমর্থন ব্যক্ত করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক অরুণ কুমার সাহা, ঐক্য পরিষদ নেতা ফেডারিক মুকুল বিশ^াস ও রতন কুমার দাসসহ শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। দুপুরে তিনি চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন। এ সময় তিনি স্থানীয় ভোটার ও লোকজনের সঙ্গে দেখা করে কুশলাদি বিনিময় করেন। এদিকে ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল জাতীয় পার্টির স্থানীয় নেতাকর্মীরা শুক্রবার জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে ছয়দানা এলাকায় তার বাসভবনে দেখা করেন এবং তাকে সমর্থন জানান। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে কাজ করার জন্য গত রাতে টেলিফোনে স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছে মহানগর জাপার নেতৃবৃন্দ। অপরদিকে এ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত অপর মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারও কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে দুপুরে চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার একই মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন। এ সময় তিনি স্থানীয় ভোটার ও লোকজনের সঙ্গে দেখা করে কুশলাদি বিনিময় করেন। তিনি দিনের অধিকাংশ সময় বাসায় ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। এ সময় তার সঙ্গে বিভিন্ন এলাকা থেকে ভোটার ও বিভিন্ন সংগঠনের লোকজন তার সঙ্গে দেখা করে সমর্থন জানিয়েছেন। অপর মেয়র প্রার্থীসহ নির্বাচনের অন্য প্রার্থীরাও এদিন ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। একইভাবে মহিলা প্রার্থীরাও শুক্রবার ব্যস্ত দিন অতিবাহিত করেছেন। নূরুল ইসলাম টঙ্গী থেকে জানান, আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমকে সমর্থন জানিয়েছে গাজীপুর মহানগর হিন্দু খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ, মহানগর পূজা উদযাপন কমিটি ও বেসরকারী সাহায্য সংস্থা (এনজিও) ‘প্রশিকা’। শুক্রবার বেলা ১১টায় গাজীপুর মহানগর হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত কুমার মল্লিক বাবুর নেতৃত্বে ও মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির সদস্যরা আসন্ন ১৫ মে’র নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মোঃ জাহাঙ্গীর আলমকে সমর্থন ব্যক্ত করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক অরুণ কুমার সাহা, ঐক্য পরিষদ নেতা ফেডরিক মুকুল বিশ^াস ও রতন কুমার দাসসহ প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া গত বুধবার প্রশিকা গাজীপুর জেলা শাখার জোনাল ব্যবস্থাপক মোঃ আফজাল হোসেন, এরিয়া ব্যবস্থাপক মোঃ হাবিবুর রহমান ও শাখা ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম প্রশিকার পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমকে সমর্থন জানিয়ে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। হাসান সরকারকে সমর্থন ॥ বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের মেয়র পদপ্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকারকে সমর্থন জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। ইসলামী ঐক্যজোটের কেন্দ্রীয় নেতা আল্লামা মুফতি শাহ মোঃ হাফিজ উদ্দিন নূরীর নেতৃত্ব ওলামা-মাশায়েখরা হাসান সরকারের সঙ্গে সাক্ষাত করে তাদের সমর্থনের কথা জানান। এছাড়া শুক্রবার সকালে ‘অঙ্গীকার’ নামের সামাজিক সংগঠনের সভাপতি নূর মোহাম্মদ ইউসুফ, সাধারণ সম্পাদক কাজী রাসেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক হোসেন, উপদেষ্টা কসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে সংগঠনটির বিপুল কর্মী হাসান সরকারের টঙ্গীর আউচপাড়ার বাস ভবনে গিয়ে তাকে সমর্থন ব্যক্ত করেন। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে তৃণমূল দলের নেতাদের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক বস্তিবাসী হাসান সরকারকে সমর্থন জানাতে তার বাসভবনে যান। এছাড়া নগরীর কলমেশ^র হাজী তাহেরা বেগম এতিমখানা ও বুম্মাইয়া মাদরাসায় ধানের শীষ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকারের সফলতা কামনায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। কৌশলী প্রচার ॥ টঙ্গীতে ঘরোয়া প্রচারে জমে উঠেছে গাজীপুর সিটি নির্বাচন। শুক্রবার জয়দেবপুর চৌরাস্তার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে নৌকা মার্কার আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম ও ধানের শীষের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার একই মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন। হাসান উদ্দিন সরকার দুপুর ১২টার দিকে মসজিদে প্রবেশ করেন। ১টার দিকে জাহাঙ্গীর আলমও মসজিদে এসে উপস্থিত হন। গাজীপুর সিটির দুই মেয়র প্রার্থীকে একসঙ্গে পেয়ে নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিরা তাদের স্বাগত জানান। দু’মেয়র প্রার্থীই মুসল্লিদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন এবং নির্বাচনে জয় লাভ করার জন্য দোয়া চান। এ সময় মুসল্লিরা তাদের মোনাজাতে দুজনের জন্যই আল্লাহর দরবারে দোয়া কামনা করেন। নামাজ শেষে জাহাঙ্গীর আলম ও হাসান উদ্দিন সরকার নিজেদের মধ্যে কুশল বিনিময় করেন। অপরদিকে গাজীপুর সিটির ৫৭টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা বিভিন্ন কলাকৌশলের মাধ্যমে তাদের প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। অভিযোগ খারিজ, আপীলে ফিরেছেন ১৬ প্রার্থী ॥ খুলনা থেকে অমল সাহা জানান, খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে হলফনামায় তথ্য গোপনের অভিযোগে মনোনয়নপত্র বাতিলের আপীল খারিজ হয়েছে। তার মনোনয়নপত্র বাতিলের জন্য আপীল করেছিলেন বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু। বৃহস্পতিবার বিকেলে মনোনয়নপত্র বাতিলের আপীল শুনানি হয়। পরে খালেকের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন আপীল বোর্ডের প্রধান ও খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মোঃ লোকমান হোসেন মিয়া। এছাড়া আপীল শুনানি শেষে নির্বাচন করার সুযোগ পেয়েছেন ১৬ জন কাউন্সিলর প্রার্থী। একই সঙ্গে আটজনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। আপীলে বৈধতা পেয়েছেন- সাধারণ ১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী মোঃ শাহাজাহান সিরাজ, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে মোঃ আবু আসালাত মোড়ল, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মোঃ হুমায়ুন কবির, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাজী ফজলুল কবির টিটো, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের মোঃ মোস্তফা হাওলাদার, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের আজমল হোসেন, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের মোঃ ফজলুর রহমান, ২১ নম্বর ওয়ার্ডেও মোল্লা ফরিদ আহমেদ, ২২ নম্বর ওয়ার্ডের মোঃ নূর ইসলাম শেখ, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী এএনএম মঈনুল ইসলাম ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের জিএম আবদুর রব সজল এবং সংরক্ষিত ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সুলতানা কাকলী, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের শাহানুর বেগম, লিভানা পারভীন, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বিলকিস আরা বুলি ও মোসাঃ হোসনেয়ারা। মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া কাউন্সিলর প্রার্থীরা হলেন- ২ নম্বর ওয়ার্ডে মোঃ রাজা খান, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে মুকুল শেখ, ২২ নম্বর ওয়ার্ডে মাসুদ পাটোয়ারি, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে আসলাম হোসেন, সংরক্ষিত ৬ নম্বর ওয়ার্ডের শামীমা আরা পারভীন ইয়াসমীন, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে রমা রাণী চক্রবর্তী, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে রিনা রহমান ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর রোকেয়া ফারুক। উল্লেখ্য, ১৫ ও ১৬ এপ্রিল যাচাই-বাছাইয়ের সময় ২৮ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এর মধ্যে ২৪ জন বিভাগীয় কমিশনারের কাছে আপীল করেন। নির্বাচনী আচরণবিধি পর্যবেক্ষণে ৫ ভ্রাম্যমাণ আদালত ॥ কেসিসি নির্বাচনে প্রার্থীদের আচরণবিধি পর্যবেক্ষণ ও তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণে সক্রিয় রয়েছে খুলনা জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যেই ৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে এ ব্যাপারে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। এ টিম ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত কঠোর অবস্থানে থেকে দায়িত্ব পালন করবেন। ২৪ এপ্রিল থেকে ১৩ মে পর্যন্ত আচরণ বিধি পর্যবেক্ষণসহ সার্বিক বিষয় মনিটরিংয়ের দায়িত্ব পালন করবেন আরও ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। খুলনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, কেসিসির ৩১টি ওয়ার্ডকে ৫টি ভাগে বিভক্ত করে ৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে বিশেষ দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এ টিম নির্বাচনী আচরণ বিধি অনুসরণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন। যা স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন ২০০৯ এর আওতায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ প্রতিরোধ কার্যক্রমে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে নির্বাচনী আচরণ বিধি পর্যবেক্ষণ ও তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সাধারণ ওয়ার্ড ১, ২, ৩, ৪, ৫ ও ৬ নম্বরে, সাধারণ ওয়ার্ড ৭, ৮, ৯, ১০, ১১, ১২ ও ১৩ নম্বরে, সাধারণ ওয়ার্ড ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮ ও ১৯ নম্বরে, সাধারণ ওয়ার্ড ২০, ২১, ২২, ২৩, ২৪ ও ২৫ নম্বরে এবং সাধারণ ওয়ার্ড ২৬, ২৭, ২৮, ২৯, ৩০ ও ৩১ নম্বরে একজন করে ৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তারা দায়িত্ব পালন শুরু করছেন। ২৪ এপ্রিল প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হলে আরও ১০ জন ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া ১২ মে থেকে ১৭ মে পর্যন্ত ৩১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন। প্রয়োজনে ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা আরও বাড়ানো হতে পারে বলে সূত্র জানায়। কেসিসি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও খুলনার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত আচরণবিধি বিষয়টিতে কঠোরভাবে মনিটরিং করা হবে। এ লক্ষ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। ৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি মেট্রোপলিটন পুলিশের বিশেষ টিমও এ কাজে নিয়োজিত থাকবে। এ নির্বাচনের জন্য গত বারের চেয়ে একটি সেন্টার বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর ফলে এবার ভোট কেন্দ্র সংখ্যা হচ্ছে ২৮৯টি। এ কেন্দ্রগুলোর মধ্যে ২-৩টিকে সস্পূর্ণ সিসি টিভি ক্যামেরার আওতায় নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। যা নির্বাচনের ৪-৫ দিন আগে চূড়ান্ত হতে পারে। আর ২-৩টি কেন্দ্রে পরীক্ষামূলক ইভিএম মেশিন স্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে। যা শীঘ্রই চূড়ান্ত হতে পারে। যদি ইভিএম মেশিনে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয় তাহলে ওইসব কেন্দ্র এলাকার মানুষের মাঝে ইভিএম পদ্ধতিটি সহজ করার জন্য ভোটের মহড়া অনুষ্ঠিত হবে। মেয়র পদে জাপা প্রার্থী নীরব কেন? খুলনা সিটি কর্পোরেশন (নির্বাচনে) মেয়র পদে ৫ প্রার্থীর ৪ জন নিয়ম মেনে সাংগঠনিক সভা, ঘরোয়া সভা, ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে তৎপর থাকলেও জাতীয় পার্টি (জাপা) মনোনীত প্রার্থীর কোন তৎপরতা এখনও দেখা যাচ্ছে না। সাংগঠনিকভাবেও নিষ্ক্রিয় রয়েছেন। অথচ অনেকদিন দিন আগেই জাতীয় পার্টির প্রধান এইচ এম এরশাদ খুলনার শহীদ হাদিস পার্কে এক সমাবেশে স্বেচ্ছাসেবক দল থেকে জাতীয় পার্টিতে যোগদান করা এস,এম শফিকুর রহমান মুশফিককে (মুশফিকুর রহমান মুশফিক) কেসিসি মেয়র পদে ঘোষণা করেন এবং সমাবেশে তাকে পরিচয় করিয়ে দেন। যিনি সবার আগে মেয়র প্রার্থী হিসেবে নিজেকে জানান দিলেন তিনি কেন নীরব রয়েছেন। এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে তিনি কি নির্বাচনী মাঠে থাকছে না?
×