ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রোহিঙ্গা, তিস্তাসহ নানা বিষয়ে শেখ হাসিনা নরেন্দ্র মোদি বৈঠক

প্রকাশিত: ০৭:৫২, ২০ এপ্রিল ২০১৮

রোহিঙ্গা, তিস্তাসহ নানা বিষয়ে শেখ হাসিনা নরেন্দ্র মোদি বৈঠক

উত্তম চক্রবর্তী, লন্ডন থেকে ॥ রোহিঙ্গা, তিস্তাসহ দ্বিপাক্ষিক নানা বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আগের অবস্থান থেকে অনেক সরে এসেছে ভারত। এ ইস্যুতে ভারতের অবস্থান এখন বাংলাদেশের অনেক কাছে এসেছে। ভারত রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনেও সহযোগিতা করে যাচ্ছে। দু’দেশের বিদ্যমান নানা বিষয়গুলোও শীর্ষ এই দুই নেতার আলোচনায় ওঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বিকেলে লন্ডনের ল্যানক্যাস্টার হাউজের বাই লেটারাল রুমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী শহীদুল হক বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বিপাক্ষিক সব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলাপ হয়েছে। কমনওয়েলথ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। রোহিঙ্গা বা তিস্তা নিয়ে আলাপ হয়েছে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, সব বিষয়েই আলোচনা হয়েছে। আপনারা জানেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারত তাদের অবস্থান থেকে অনেক সরে এসেছে। মানে পরিবর্তন করেছে। তারা রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের জন্য সহযোগিতা করছে। আর কি কি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তা স্পষ্ট করে কিছু না জানালেও শুধু বলেন, দ্বিপাক্ষিক সব বিষয়েই তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। আর কমনওয়েলথ সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান আরও শক্তিশালী হয়েছে। তবে দু’দেশের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ওঠে আসে বিশ্ব ভারতীতে নির্মাণাধীন বাংলাদেশ হাউস নির্মাণের বিষয়টিও। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর হচ্ছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেন, ’শীঘ্রই বিশ্বভারতীতে নির্মাণাধীন বাংলাদেশ হাউসের উদ্বোধন করা হবে। আপনি (শেখ হাসিনা) যদি উদ্বোধনের সময় ভারতে আসেন, তবে আমিও আসব।’ প্রেস ব্রিফিংকালে পররাষ্ট্র সচিব ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম ও অতিরিক্ত প্রেস সচিব নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এদিকে ল্যানক্যাস্টার হাউজে কমনওয়েলথ সরকারপ্রধানদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এক্সিকিউটিভ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা ইস্যুতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন। রোহিঙ্গা সঙ্কটের স্থায়ী সমাধানে কমনওয়েলথ সদস্য দেশগুলোকে কার্যকর ও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, গত বছর জাতিসংঘ অধিবেশনে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সুনির্দিষ্ট ৫টি প্রস্তাব দিয়েছি। ওই প্রস্তাবগুলোর আলোকে কমনওয়েলথ সদস্য দেশগুলোকে রোহিঙ্গা সঙ্কটের স্থায়ী সমাধানে কার্যকর ও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানাই। তিনি বলেন, মানবিকতার প্রতি কমনওয়েলথ দেশগুলোর সামষ্টিক দায়বোধ ব্যর্থ হতে পারে না। এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক জানান, কমনওয়েলথ সম্মেলনেও রোহিঙ্গা ইস্যুটি জোরালোভাবে আলোচনা হয়েছে। এ ইস্যুতে একটি অনুচ্ছেদ এ্যাডাপ্ট করা হতে পারে সম্মেলনে। আর রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমাদের অবস্থান আরও শক্তিশালী হয়েছে। তিনি জানান, এবারই সর্বাধিক ৪৬ দেশের সরকার প্রধানসহ ৫৩টি দেশের প্রতিনিধিরা কমনওয়েলথ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছে।
×