ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

অভিমত ভারতীয় অধিনায়ক কোহলির

‘কাউন্টি ক্রিকেট আমার ক্যারিয়ারের উন্নতি ঘটাবে’

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ২০ এপ্রিল ২০১৮

‘কাউন্টি ক্রিকেট আমার ক্যারিয়ারের উন্নতি ঘটাবে’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আগামী জুনের মাঝামাঝি ইউরোপ সফর ভারতীয় ক্রিকেট দলের। এর আগে আপাতত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (আইপিএল) টি২০ নিয়েই ব্যস্ত থাকবে দলটি। আইপিএল শেষে প্রথম আন্তর্জাতিক ব্যস্ততাই আয়ারল্যান্ড ও ইংল্যান্ড সফর দিয়ে। কঠিন এ সফরের আগেই ইংলিশ কাউন্টিতে কিছু ম্যাচ খেলার ইচ্ছা ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলির। গত মাসে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই) কাউন্টি খেলার অনুমোদন নিশ্চিত করেছে। এরপর থেকেই কোহলি কোন এক কাউন্টির হয়ে খেলার প্রত্যাশায় আছেন। উন্মুখ হয়ে আছেন কোন দলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে। কারণ তিনি মনে করেন কাউন্টিতে খেলতে পারলে নিজের খেলার আরও উন্নতি ঘটবে। টেস্ট ক্যারিয়ার ৭ বছর, টি২০ ক্যারিয়ার ৮ বছর আর ওয়ানডে ক্যারিয়ার ১০ বছর। এর মধ্যেই মহাতারকা হয়ে গেছেন কোহলি। তার ক্যারিয়ারের শুরুতেই অনেক ক্রিকেটবোদ্ধা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে কোহলি সর্বকালের সেরা হবেন এবং ছাড়িয়ে যাবেন লিটল মাস্টার শচীন টেন্ডুলকরের ওয়ানডে ও টেস্টে সর্বাধিক সেঞ্চুরি ও রানের বিশ্বরেকর্ডকে। সেই ভবিষ্যদ্বাণীর অনেকখানিই ইতোমধ্যে প্রমাণ করেছেন ২৯ বছর বয়সী এ ভারতীয় অধিনায়ক। পারফর্মেন্সের ধারাবাহিকতায় এক আশ্চর্য নিদর্শন হয়ে দেখা দিয়েছেন ইতোমধ্যেই। টেস্টে ২১ সেঞ্চুরি করে অনেকের চেয়ে পিছিয়ে আছেন, কিন্তু ওয়ানডেতে ইতোমধ্যেই ৩৫ শতক হাঁকিয়ে ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বাধিক শতকের কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। সর্বাধিক ৫১ শতক আছে শচীনের। যেভাবে এগিয়ে চলেছেন তাতে করে অচিরেই শচীনের রেকর্ডকে ছাপিয়ে যাবেন কোহলি এমনটা প্রায় নিশ্চিত। বিস্ময়কর এ ব্যাটিং প্রতিভার অবশ্য ক্যারিয়ারে একটি ঘাটতি রয়ে গেছে। সেটি হচ্ছে- এখন পর্যন্ত কাউন্টি ক্রিকেটে খেলেননি। মর্যাদার এ আসরে খেলার অনুমোদনই ছিল না অবশ্য ভারতীয় বোর্ডের। কিন্তু গত মাসে বিসিসিআই নিশ্চিত করেছে কোহলি চাইলে কোন কাউন্টির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে পারেন। কোহলিও এখন উন্মুখ হয়ে আছেন কোন কাউন্টির সঙ্গে অচিরেই চুক্তিবদ্ধ হওয়ার জন্য। সর্বশেষবার ভারতীয় দল ইংল্যান্ড সফর করেছিল ২০১৪ সালে। কিন্তু সেই সিরিজে চিরাচরিত কোহলিকে দেখা যায়নি। চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছিলেন তিনি ব্যাট হাতে। ৫ টেস্টে মাত্র ১৩.৪০ গড়ে করতে পেরেছিলেন ১৩৪ রান। সেই হতাশাজনক স্মৃতি এখনও মনে আছে কোহলির। এ জন্য তিনি ভাবছেন কাউন্টিতে খেললে ইউরোপের মাটিতেও নিজের খেলার উন্নতি ঘটবে। ইতোমধ্যেই সারে কাউন্টির সঙ্গে বেশ জোরালো আলোচনা চলছে তার, যদিও সেসব এখন পর্যন্ত গুঞ্জনেই সীমাবদ্ধ। কোন প্রকার চুক্তির বিষয়াদি শোনা যায়নি। কাউন্টিটি খুব মনোযোগী বিদেশী খেলোয়াড়দের দলে ভেড়াতে। বিশেষ করে মিচেল মার্শের ইনজুরির পর তারা দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনার ডিন এলগারকে ইতোমধ্যেই মৌসুমের প্রথম দুই মাসের জন্য চুক্তিবদ্ধ করেছে। কিন্তু আইপিএলের পর কোহলির দারুণ সুযোগ আছে পুরো জুনে কাউন্টিতে সময় দেয়ার। তবে সেক্ষেত্রে আফগানিস্তানের সঙ্গে একমাত্র টেস্ট হয়তো খেলা হবে না কোহলির। কিন্তু ইংল্যান্ড সফরের আগে কাউন্টি ক্রিকেট বেশি উপকারী হবে বলেই ভাবছেন ভারতীয় অধিনায়ক। জুনের মাঝামাঝি সময়েই আয়ারল্যান্ডে যাবে ভারতীয় দল। স্বাগতিকদের বিপক্ষে ২ টি২০ খেলার পর, ৩ জুলাই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের টি২০ সিরিজ, ১২ জুলাই থেকে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ এবং ১ আগস্ট থেকে ৫ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে তারা। এ বিষয়ে কোহলি বলেন, ‘কাউন্টি ক্রিকেটে খেলতে পারলে আমার খেলার অনেক উন্নতি ঘটতে সহায়ক হবে। আমার মনে হয় এটি অনেক চ্যালেঞ্জিং একটা আসর, অনেক বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং কোন ধরনের নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারে না ভাল করার। অনেক আগে থেকে সেখানে গেলেও তা নিশ্চিত করা যায় না।’ ইতোমধ্যেই চেতেশ্বর পুজারা ও ইশান্ত শর্মা ইয়র্কশায়ার ও সাসেক্সের হয়ে খেলছেন। বিসিসিআই সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের বাজে অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার ক্রিকেটারদের প্রস্তুত করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। বোর্ডের গবর্নিং বডির প্রশাসনিক কমিটির চেয়ারম্যান বিনোদ রাই এ বিষয়ে বলেছেন, ‘এবার আমাদের অনেক বেশি তৎপর হতে হবে। কারণ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের অভিজ্ঞতা শেষে আমরা উপলব্ধি করছি যে দলের সবারই চারদিকে ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা হওয়া জরুরী।’ এবার তাই কোহলিও কাউন্টি খেলার অনুমোদন পেয়েছেন। এ বিষয়ে কোহলি আরও বলেন, ‘এটা নিজেকে আরও বেশি সুযোগ করে দেয়ার একটা বড় পদক্ষেপ হতে পারে যে কোন পরিবেশ ও পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে।’
×