ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিসিবি কেন্দ্রীয় চুক্তি ইস্যু

বাদ পড়া সৌম্য, তাসকিনদের পাশে মাশরাফি

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ২০ এপ্রিল ২০১৮

বাদ পড়া সৌম্য, তাসকিনদের পাশে মাশরাফি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়েছেন সৌম্য সরকার, তাসকিন আহমেদ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, কামরুল ইসলাম রাব্বি ও ইমরুল কায়েস। সেই সঙ্গে বাদ পড়েছেন সাব্বির রহমান রুম্মনও। এ ক্রিকেটারদের পাশে আছেন বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। মাশরাফি বিন মর্তুজার নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের সঙ্গে বৃহস্পতিবার সমঝোতা স্মারক চুক্তি করেছে দেশের প্রথম বেসরকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড। এ চুক্তি স্বাক্ষর শেষে সৌম্য, তাসকিনদের পাশে থাকার কথা বলেন মাশরাফি। তিনি জানান, ‘আমি এমন সময়ই কথা বলছি, যখন কোন কিছু চূড়ান্ত হয়নি। যখন কোন কিছু চূড়ান্ত হয়নি তখন কোন কিছুর উত্তর দেয়া কঠিন। তারপরও বলছি, তারা বাংলাদেশের সত্যিকারের ভবিষ্যত, তাদের সমর্থন করা আমাদের প্রত্যেকের এখন দায়িত্ব। আমার জায়গা থেকে আমি পিছু পা হব না। যত প্রকার সমর্থন দেয়ার তাদের আমি দেব। জানি যে বাংলাদেশের এত বেশি বিকল্প খেলোয়াড় নেই। আজ যে তিন চারজনের নাম বলছেন, এরাই বাংলাদেশের সত্যিকারের ভবিষ্যত। তারা নিজেদের ছোট ক্যারিয়ারে সেটি প্রমাণ করেছে। আমার বিশ্বাস ধারাবাহিকতা বাড়িয়ে যদি ফর্মে ফিরে আসে লংটাইম বাংলাদেশকে সার্ভিস দিতে পারবে। এক সময় সাকিব-তামিম-আমরা এমনই ছিলাম। বলতে পারেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতা এই লেভেলের না থাকায় আমরা টিকে গেছি। তাদের কাছে প্রত্যাশাটা অনেক। সে জায়গা থেকে তারা খারাপ করলে সোশ্যাল মিডিয়াও এত সোচ্চার, একটা প্রভাব চলে আসে। তাদের ওপর অনেক চাপ। ক্রিকেট খেলাটা অনেক কঠিন হয়ে গেছে। ছোটখাটো বিষয় বেশি সমালোচনার ওপর চলে আসে। ২২-২৩ বছর বয়সে এত সমালোচনা নিয়ে মাঠে যেয়ে ধারাবাহিক ভাল খেলা তাদের জন্য কঠিন। বেড়ে ওঠা তো এত পেশাদারির মধ্যে হয় না। তবে আমরা বুঝতে পারছি, আমরা সিনিয়ররা যারা আছি তাদের সহযোগিতা করি। চার-পাঁচজন সিনিয়র তাদের অনেক সহযোগিতা করব, তাদেরও চেষ্টা করতে হবে তারাও যেন নিজেদের সেরা ফর্মে আসতে পারে।’ মাশরাফি পাশে থাকলেও এটাও বলে দিয়েছেন বেতনের বিষয়টা পারফর্মেন্সের ওপরই নির্ভর করে। মাশরাফি যেমন বলেছেন, ‘প্রথমত হচ্ছে আমি যতদিন ধরে খেলছি, বেতনের ভেতর ছিলাম কি ছিলাম না এসব নিয়ে ভাবিনি। আমার কাছে এটা কখনই পরিষ্কার নয়। আমার সবসময়ই প্যাশন ছিল ক্রিকেট খেলা। ওই প্যাশন নিয়ে ক্রিকেট খেলছি। আর বেতন একজন খেলোয়াড়ের জন্য অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। দেশের বেশিরভাগ খেলোয়াড় এসেছে মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে। বেতন বা খেলার বিরাট প্রভাব থাকে তাদের পরিবারের ওপর। এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তবে সিদ্ধান্তটা বোর্ডের। ক’জনকে বেতন দিবে না দিবে এটা তাদের সিদ্ধান্ত। তবে যতদূর জানি ঘোষণাটা এখন আসেনি। আগে ১৬ জন ছিল। এখন এতটুকুই শুনেছি কমতে পারে। তবে বেতনটা একটা খেলোয়াড়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। একই সময়ে একজন খেলোয়াড়কে ততটুকু প্যাশনেট হয়ে খেলতে হবে। আমার বিশ্বাস সবাই সেভাবে খেলছে। এখন পারফর্মেন্স সবসময়ই একই গ্রাফে চলে না। কারও কখনও ভাল যায়, কারও কখনও খারাপ। বেতনের বিষয়টা নির্ভর করে পারফর্মেন্সের ওপর, এটাও সত্য কথা। সবকিছু সম্পর্কিত। এখন বোর্ড যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই চূড়ান্ত। বিসিবি থেকে যেহেতু সিদ্ধান্ত নিয়েছে এটা নিয়ে কোন কথাই বলতে চাই না।’ যারা বাদ পড়ল তারা তো স্বাভাবিকভাবেই মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়বে। এখন তাদের কী হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে মাশরাফি বলেন, ‘তারা তো বসে থাকবে না। তাদের অবশ্যই ফিরে আসার চেষ্টা করতে হবে। আমার বিশ্বাস তারা পারবে। যারাই বাদ পড়ুক না কেন, দেখেন যে সংখ্যাটা বাদ পড়ুক, তারা কোন না কোনভাবে বাংলাদেশ দলে অবদান রেখেছে। হয়তো বা সাময়িক পারফর্মেন্স খারাপ হতে পারে, তাদের অবদান কিন্তু কমাতে পারবেন না। এখন হয়তো বাজে সময় যাচ্ছে। হয়তো বেতনের বিষয়টা পুরোটাই ক্রিকেট বোর্ডের। আমরা সিনিয়ররা যারা আছি চেষ্টা করব তাদের পাশে থাকার। তারা যেন সেরা ফর্মে ফিরে আসে, বাংলাদেশকে দীর্ঘ সময় ধরে সেবা দিতে পারে এবং ধারাবাহিকতা যেন আগের চেয়ে আরও বেশি থাকে, যে সাপোর্ট তাদের লাগে সেটা অবশ্যই আমরা দেব।’
×