ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রঙের মায়ায় উজ্জ্বল ইসকান্দার মির্জার ক্যানভাস

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ২০ এপ্রিল ২০১৮

রঙের মায়ায় উজ্জ্বল ইসকান্দার মির্জার ক্যানভাস

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চিত্রপটের জমিনটা অনুজ্জ্বল। সেই অনুজ্জ্বল জমিনে সজীবতা সৃষ্টি করেছে সবুজ পাতাগুলো। স্বমহিমায় জানান দিচ্ছে আপন অস্তিত্ব। পত্রপল্লব পেছনে রঙের বৈভব ছড়িয়েছে এক জোড়া রক্তজবা। দুটি ফুলের পরাগ কেশর মিলেমিশে যেন একে অপরের গড়ে নিয়ে নিবিড় সখ্য। আরেক ছবিতে রাতের নিকষ অন্ধকারে চুল্লি থেকে আগুনের ফুলকি ছড়িয়েছেন বৃদ্ধ কামার। আঁধারের মাঝে দারুণভাবে দৃশ্যমান হয়ে আগুনের রঙটি। এভাবেই চিত্রপটে বর্ণের আলোড়ন তুলেছেন চিত্রকর ইসকিন্দার মির্জা। বর্ণবহুল তেমন কিছু ছবি নিয়ে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেস দ্য ঢাকার লা গ্যালারিতে চলছে এই শিল্পীর প্রদর্শনী। শিরোনাম ‘রঙের মায়া’। শিল্প রচনায় রঙের মোহময়তার পানে ধাবিত হয়েছেন ইসকিন্দার মির্জা। এই শিল্পীর বিশ্বাস, যখন রঙ যথাযথভাবে কাজ করে চিত্রপটে তখন শিল্প বিস্তার করে যাদুকরী সম্মোহন। ইসকিন্দারের নয়ন জুড়ানো চিত্রকর্মগুলোয় উদ্ভাসিত হয়েছে পুরনো ঢাকার যাত্রী পরিবহনকারী ঘোড়া ও তার গাড়ি। রং ও রেখায় চিত্রিত হয়েছে সবলদেহী মহিষ। চিত্রপটে উঠে এসেছে কামার, নারী, ফুল, পাতা, প্রকৃতি এবং বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী শিল্পকর্ম। বহুরূপী রঙের মায়া মিশিয়ে শিল্পী যেন দর্শনার্থীর নয়নে ইন্দ্রজাল ছড়াতে চেয়েছেন; যা সঞ্চারিত করে অনুভব, অনুভবের আকাক্সক্ষা, সুদূর অতীত, হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতি অথবা তার চারপাশের প্রকৃতির স্নিগ্ধতা। সেই সূত্র ধরে উঠে এসেছে এ দেশের জনমানুষের জীবনযাত্রা, জীবনের পাশবিক ভার এবং দিগন্ত বিস্তারী প্রকৃতির রূপময়তা। বহুমাত্রিক রঙের স্ফুরণে চিত্রকর্মগুলো হয়ে উঠেছে একইসঙ্গে বিচিত্র ও মায়াময়। ৩৫টি চিত্রকর্ম দিয়ে সাজানো হয়েছে প্রদর্শনী। ১৩ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া প্রদর্শনীটি চলবে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত। সোম থেকে বৃহস্পতিবার বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা এবং শুক্র ও শনিবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টা এবং বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে। রবিবার সাপ্তাহিক বন্ধ। নূরজাহান বেগম পদক পেলেন রাবেয়া খাতুন ॥ বাংলাদেশ নারী লেখক সোসাইটির চতুর্থ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর আয়োজন ছিল বৃহস্পতিবার। এ আয়োজনে নূরজাহান বেগম পদক দেয়া হয়েছে বরেণ্য কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুনকে। তার পক্ষে এ পুরস্কার গ্রহণ করেন ছড়াকার আমীরুল ইসলাম। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। নারী লেখক সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক জুবাইদা গুলশান আরা হেনার সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন বঙ্গীয় সাহিত্য-সংস্কৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম, বাংলা একাডেমির উপ-পরিচালক আমিনুর রহমান সুলতান। বৈশাখী নাট্যোৎসব মঞ্চস্থ ‘মেরাজ ফকিরের মা’ ॥ নববর্ষ উপলক্ষে দর্শক সমাদৃত ১৫টি নাটক নিয়ে পক্ষকালব্যাপী উৎসবের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ মহিলা সমিতি। রাজধানীর বেইলি রোডের নাটক সরণির মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে চলছে বৈশাখী নাট্যোৎসব। পক্ষকালব্যাপী এ উৎসবের চতুর্থ দিন ছিল বৃহস্পতিবার। এদিন সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হয় থিয়েটারের সাড়া জাগানো নাটক ‘মেরাজ ফকিরের মা’। আবদুল্লাহ আল মামুন রচিত নির্দেশিত নাটকটির কাহিনীতে উঠে এসেছে ধর্মীয় গোঁড়ামির চালচিত্র। মায়ের গর্ভে জন্ম নেয়া শিশুটি একদিন পদার্পণ করে পরিণত বয়সে। এই বেড়ে ওঠার দীর্ঘ ৩৯ বছর পর আকস্মিকভাবে সে জানতে পারে তার গর্ভধারিণী মায়ের ধর্ম আর তার ধর্ম এক নয়। ধর্ম পরিচয়ে যে ফারাক রচিত হয় তা কি মা-ছেলের সম্পর্ককে বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারে? ধর্মের ভিন্নতার কারণে ছেলে কি অস্বীকার করতে পারে মাকে? মানবিক সম্পর্ক আর বাহ্যিক আচার সর্বস্ব সম্পর্কÑএই দুইয়ের মধ্যে কোনটির রয়েছে নাড়ি ছেঁড়া টান? এমনি সব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা এবং মানবের স্বরূপ প্রকাশের চেষ্টা হয়েছে নাটকটিতে। নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রের অভিনয়শিল্পীরা হলেন রামেন্দু মজুমদার, ফেরদৌসী মজুমদার, ত্রপা মজুমদার, মজিবর রহমান জুয়েল, তানজুম আরা পল্লী, মারুফ কবির, সাইফ জোয়ারদার, আব্দুল কাদের, তোফা হোসেন প্রমুখ। হাসান আহমেদের মঞ্চ পরিকল্পনায় আলোক পরিকল্পনায় ছিলেন ঠাণ্ডু রায়হান।
×