ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

উন্নত চিকিৎসা না হলে সেই ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তার জীবন নিয়ে শঙ্কা

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ২০ এপ্রিল ২০১৮

উন্নত চিকিৎসা না হলে সেই ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তার জীবন নিয়ে শঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পুলিশ কর্মকর্তাকে ইচ্ছাকৃতভাবে চাপা দিয়ে আহত করা বাসচালক নজরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার রাত আটটা নাগাদ গ্রেফতার হয়নি। বাস চাপায় আহত ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দেলোয়ার হোসেনের অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। তার একটি পা কেটে ফেলার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই হার্টএ্যাটাক হয়েছে পুলিশ কর্মকর্তার। দ্রুত দেশে বা বিদেশে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা না হলে পুলিশ কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনকে বাঁচানো অসম্ভব হতে পারে বলে চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে পরিবার। পুলিশ কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনের পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দেলোয়ার হোসেনকে প্রথমে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে এ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা দেলোয়ারের বাঁ পা কেটে ফেলার পরামর্শ দেন। তার পা রক্ষা করার জন্য চেষ্টা করতে থাকেন তারা। এ জন্য মঙ্গলবার তাকে পান্থপথের স্পাইনাল অর্থোপেডিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে সেখানে হার্ট এ্যাটাক হয়। এরপর দ্রুত স্থানান্তর করা হয় স্কয়ার হাসপাতালে। বর্তমানে হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। দেলোয়ার হোসেনের চার মেয়ে। বিদেশে ব্যয়বহুল চিকিৎসা করানোর মতো আর্থিক সামর্থ্য নেই পরিবারের। তাই সরকার ও পুলিশের তরফ থেকে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার কথা জানান পরিবার। ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া বিভাগের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান জনকণ্ঠকে জানান, বাসটি জব্দ করা হয়েছে। বাসটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ভাড়ায় চলে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। চালক নজরুল ইসলামকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। পান্থপথের স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত পুলিশ কর্মকর্তার অবস্থার উন্নতি হয়নি। তার চিকিৎসার জন্য ডিএমপির তরফ থেকে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে কথাবার্তা চলছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ এপ্রিল সোমবার সকাল সাতটা থেকে রাজধানীর পলাশী এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিলেন দেলোয়ার হোসেন। সকাল সাড়ে আটটার দিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বহনকারী ঢাকা মেট্রো চ-০৮-০০৫৩ নম্বরের বাসটি নীলক্ষেত থেকে উল্টো পথে পলাশী হয়ে সচিবালয়ের দিকে যাচ্ছিল। পলাশী মোড়ে দায়িত্ব পালন করছিলেন এক সহকারী উপ-পরিদর্শকসহ (এএসআই) তিন পুলিশ সদস্য। তারা উল্টোপথে আসা বাসটিকে আটকে দেন। এ নিয়ে বাসচালক ও যাত্রীদের সঙ্গে পুলিশের ঝগড়া শুরু হয়। অদূরে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন ঘটনাটি মিটমাট করার জন্য এগিয়ে যান। তার সঙ্গেও তর্ক শুরু করে দেয় বাসচালক। এক পর্যায়ে চালক বেপরোয়াভাবে বাসটি পুলিশ সদস্যদের গা ঘেঁষে চালিয়ে দেয়। এতে ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনের বাম পা বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে পুরোপুরি থেঁতলে যায়। আহত হন আরও দুই পুলিশ সদস্য। দেলোয়ার হোসেনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে এ্যাপোলোতে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জানা গেছে, দেলোয়ার হোসেন হৃদরোগী। বছর পাঁচেক আগে তার বাইপাস সার্জারি হয়। বুধবার রাত থেকেই শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছে। হার্ট এ্যাটাকের পর তার অবস্থার দ্রুত অবনতি হচ্ছে। এমন অবস্থায় দ্রুত তার সুচিকিৎসা করানো না গেলে অজানা আশঙ্কা করছেন তার পরিবারের সদস্য ও পুলিশ কর্মকর্তারা। মঙ্গলবার শাহবাগ মডেল থানায় এ বিষয়ে একটি মামলা (নম্বর-৩৪) করা হয়েছে।
×