ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মন্ত্রণালয় বলছে শ্রমবাজারটি খুলে যাওয়া একটা বড় অর্জন

কর্মী নিয়োগে শীঘ্রই চাহিদাপত্র পাঠাবে আমিরাত

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ২০ এপ্রিল ২০১৮

কর্মী নিয়োগে শীঘ্রই চাহিদাপত্র পাঠাবে আমিরাত

ফিরোজ মান্না ॥ সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগে দ্রুত সময়ের মধ্যে চাহিদাপত্র পাঠাবে। চাহিদাপত্র পাওয়ার পরই কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হওয়ার পর ১৯টি ক্যাটাগরিতে কর্মী নিয়োগে আর কোন বাধা নেই। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বলছে, শ্রমবাজারটি চালু হওয়ায় দেশের জন্য বড় সাফল্য। এটা একটা বড় অর্জন। এই সাফল্য ও অর্জন দেশবাসীর কাছে তুলে ধরার জন্য আগামী সোমবার প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির সংবাদ সম্মেলন করার কথা রয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আমিনুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত যেদিন থেকে কর্মীর চাহিদা পাঠাবে আমরা সেদিন থেকেই কর্মী পাঠাতে প্রস্তুত রয়েছি। দীর্ঘদিন ধরে বাজারটি বন্ধ থাকার পর অনেক দেনদরবার করে বাজারটি আবার খোলা সম্ভব হয়েছে। এটা সত্যি বড় একটি অর্জন। কিভাবে বাজারটি চালু হলো সে বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী আগামী সোমবার সাংবাদিকদের অবহিত করবেন। সেদিনই আসলে বিস্তারিত জানা যাবে। বাজারটিতে যাতে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় কর্মী নিয়োগ হয় সেদিকটি মন্ত্রণালয় নজরে রাখবে। কোন অবস্থাতেই বাজারটি নষ্ট হতে দেয়া হবে না। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে মন্ত্রণালয় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিকে বাজারটি চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জনশক্তি রফতানিকারকরা তৎপর হয়ে উঠেছেন। বুধবার দুই দেশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার পরই জনশক্তি রফতানিকারক কয়েক ব্যবসায়ী সংযুক্ত আবর আমিরাত চলে গেছেন বলে খবর মিলেছে। বাজারটি খোলার সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার পর থেকে কয়েক জনশক্তি রফতানি কারক ঘন ঘন যাতায়াত শুরু করেন। তারা সেখানে কেউ কেউ অফিসও নিয়েছেন। খবর নিয়ে জানা গেছে, মালয়েশিয়ায় যে সিন্ডিকেট এককভাবে জনশক্তি রফতানি করছে তারাই এই বাজারে দৃষ্টি দিয়েছে। এখানেও যদি সিন্ডিকেট কাজ শুরু করে তাহলে খুলে যাওয়া বাজারটি আবার বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কারণ, নানা শর্তসাপেক্ষে সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ দেবে। ওসব শর্তের কোন কিছু ভঙ্গ হলেই বাজারটি হুমকির মধ্যে পড়বে। এ কারণে মন্ত্রণালয় আগে থেকেই বাজারটির দিকে কঠোর নজর রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ১০ মাস ধরে নানা আলাপ-আলোচনার চূড়ান্ত পর্যায়ে দুবাইয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মিনিস্ট্রি অব হিউম্যান রিসোর্সেস এ্যান্ড এমিরেটাইজেশনের দফতরে উভয় দেশের মধ্যে বুধবার চুক্তি স্বাক্ষর হয়। বাংলাদেশের পক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নমিতা হালদার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মিনিস্ট্রি অব হিউম্যান রিসোর্সেস এ্যান্ড এমিরেটাইজেশনের আন্ডার সেক্রেটারি সাইফ আহমেদ আল সুআইদি স্ব স্ব দেশের পক্ষে সমঝোতা স্মারকটি স্বাক্ষর করেছেন। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মিনিস্ট্রি অব হিউম্যান রিসোর্সেস এ্যান্ড এমিরেটাইজেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী নাসের আল হামলি, সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আজহারুল হক, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোঃ সুজায়েত উল্ল্যা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক তারেক আহমেদ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও দুবাইয়ে নিযুক্ত কনসাল জেনারেল এস বদিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। সূত্র জানিয়েছে, সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশ থেকে ১৯টি ক্যাটাগরিতে কর্মী নিয়োগের বিধান, পদ্ধতি, রিক্রুটমেন্ট এজেন্সি ও উভয় দেশের সরকারের দায়িত্ব ও কর্তব্য, কর্মীদের অধিকার, সুযোগ-সুবিধা, এমপ্লয়ারদের দায়িত্ব ও কর্তব্য, নিয়োগ চুক্তির বিধান ও পৃথক একটি বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা ইত্যাদি উল্লেখ রয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীদের স্বার্থ রক্ষার্থে ২০১৭ সালে কার্যকর হওয়া আইনের আলোকে সমঝোতা স্মারকটিতে শ্রমিক, মালিক ও উভয় দেশের সরকারের দায়িত্ব বর্ণিত হয়েছে। নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও দায়িত্বশীল শ্রম অভিবাসনের লক্ষ্য অর্জনের বিষয়সমূহ বিবেচনায় রেখেই চুক্তিটি হয়। সমঝোতা স্মারকটি বাস্তবায়নের জন্য উভয় দেশের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটি পুনর্গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিকে কতিপয় সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
×