ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যে ধর্ষণের ঘটনা ভারতের রাজনীতিকে ঝাঁকুনি দিয়েছে

প্রকাশিত: ০৪:২০, ২০ এপ্রিল ২০১৮

যে ধর্ষণের ঘটনা ভারতের রাজনীতিকে ঝাঁকুনি দিয়েছে

ভারতের গত কয়েকদিনে দুটি শিশু ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে শাসকদলের আচরণে জনসাধারণের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিভিন্ন শহরের রাস্তায় জনবিক্ষোভ হয়েছে। সেলিব্রেটি থেকে লেখক, শিক্ষাবিদ, মানবাধিকারকর্মী, আইনজীবী ও অন্যান্য পেশাজীবীরা সাধারণ মানুষের কাতারে যোগ দিয়ে একাত্ম ঘোষণা করে। মানুষের রাগ থেকে স্লোগানমুখর বিক্ষোভে রূপ নেয়। যদিও বেশির ভাগ মানুষ মানববন্ধন করে তাদের ক্ষোভ উগরে দেয়। তাদের সেই ক্ষোভের বহির্প্রকাশ ঘটে প্ল্যাকার্ডে লেখা দেখিয়ে। তারই একটি অংশ হল এখন সময় এসেছে ভারতকে ধর্ষণমুক্ত করার। অন্য একটি ছিল ভারতীয় হিসেবে আজ আর গর্ব হয় না। আলজাজিরা। দুটি ধর্ষণের ঘটনাই জাতিসংঘ পর্যন্ত পৌঁছেছে। শুক্রবার জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেসের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে একে ভয়াবহ ঘটনা হিসেবে অভিহিত করে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে যথাযথ বিচারের আহ্বান জানিয়েছেন। বিবৃতিটি ভারতের ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বিব্রত করেছে। কেননা প্রধানমন্ত্রী নিজেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায়ে হিন্দু মৌলবাদের ইমেজ তৈরি করে যাচ্ছেন। যাতে বিশ্বব্যাপী ভারতের ইমেজ বাড়ে তারও প্রচারাভিযান চালাচ্ছেন। দুটি ঘটনা পৃথক দুটি রাজ্যে ঘটেছে। একটি জম্মু ও কাশ্মীর এবং অপরটি উত্তর প্রদেশে (ইউপি)। তবে সেখানকার ক্ষোভ এখন মোদির জন্য চরম ক্ষতি। এ বছরের প্রথম দিকে জম্মুর কাঠুয়া এলাকার মুসলমান এক যাযাবর মেষপালক জাতির আসিফা (৮) নিখোঁজ হয়। এই যাযাবর জাতিটি অন্য সময় কাশ্মীরের পাহাড়ের চূড়ায় বসবাস করলেও শীতের সময় তারা জম্মুর সমতল ভূমিতে নেমে এসে শীতের সময়টি অতিবাহিত করে থাকে। আসিফা নিখোঁজ হওয়ার এক সপ্তাহ পর তার ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহটি একটি হিন্দু মন্দিরের কাছেই পাওয়া যায়। পরে তদন্তকারীরা মেয়েটিকে ধর্ষণ ও হত্যা করার অভিযোগে স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাসহ কয়েকজন হিন্দুর নাম জানতে পারেন। তদন্তকারীরা দাবি করেন যে, মেয়েটির অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ছিল মুসলমান সংখ্যালঘু যাযাবর সম্প্রদায়টিকে নির্মূল করার একটি পরিকল্পনা। প্রাথমিকভাবে স্থানীয় আইনজীবীরা আইনী সব প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেন। যেখানে বিজেপির দুজন প্রাদেশিক মন্ত্রীসহ নেতারা যুক্ত ছিলেন। এছাড়া তারা অভিযুক্তদের সমর্থনে বিক্ষোভে যোগও দেন। তারা জম্মু ও কাশ্মীরের মুসলমানদের বিরুদ্ধে হিন্দুদের শক্তিশালী করে তুলতে সহায়তা করেন। ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো বিজেপি রাজ্যটিতে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ হিসেবে জোট সরকার গঠন করে ক্ষমতাসীন হয়।
×