স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সংক্ষিপ্ত ফরমেটের ক্রিকেট নাকি লেগস্পিনারদের জন্য নয়। কিছুদিন আগেও এমন ধারণা ছিল বদ্ধমূল। এক সময় সাদা পোশাকের টেস্টে ছড়ি ঘুরিয়েছেন অনীল কুম্বলে, শেন ওয়ার্ন, মুস্তাক আহমেদ। লেগস্পিনাররা অনেক বেশি রান দিয়ে ফেলেন, এমন অজুহাতে রঙিন পোশাকে প্রায় আচ্ছুত ছিলেন তারা। অথচ এখন বোলারদের জন্য সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং টি২০ ফরমেটে সেরা দশের ছয় জনই লেগস্পিনার। সবার ওপরে আফগানিস্তানের রশিদ খান, শীর্ষ পাঁচে পরের চারটি স্থানে যথাক্রমে পাকিস্তানের শাদাব খান, ভারতের যুবেন্দ্র চাহাল, নিউজিল্যান্ডের ইস সোধি ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্যামুয়েল বদ্রি। দক্ষিণ আফ্রিকার ইমরান তাহির আছেন সাত নম্বরে। এদের মধ্যে সেনসেশনাল আফগান রশিদ খানে রীতিমতো মুগ্ধ সাবেক ডিন জোন্স। ‘আর সবার প্রতি ভালবাসা রেখেই বলছি, আমার চোখে রশিদ খানই সময়ের সেরা লেগস্পিনার’ বলেন আইপিএলে সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করা সাবেক অস্ট্রেলীয় তারকা ব্যাটসম্যান।
জোন্সের কাছে মূলত প্রশ্ন ছিল, রশিদ না চাহালÑ কে সেরা? ‘চাহালসহ অন্য লেগস্পিনারদের প্রতি ভালবাসা রেখেই বলছি, আমি রশিদ খানের বড় ভক্ত। আফগানিস্তানের কোচ ছিলাম, তাই জানি, মাঠের বাইরেও সে কেমন। ও দুইদিকেই বল ঘোরাতে পারে এবং ‘রং ওয়ান’ (গুগলি) করতে তার চারটি আলাদা ‘গ্রিপ’ আছে। সে একজন নিখাঁদ সুপারস্টার। চাহালের সঙ্গে তুলনা করলে তার লেভেলটা আসলে আলাদা। আমার কাছে এই মুহূর্তে রশিদ খানই বিশ্বের সেরা লেগস্পিনার।’ ব্যাখ্যার অবতারণা করে বলেন জোন্স। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে এবার চার ম্যাচে ৩ উইকেট নিয়েছেন চাহাল। রশিদ খান সানরাইজার্সের হয়ে ৩ ম্যাচে নিয়েছেন ২ উইকেট। এর মধ্যে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের বিপক্ষে রেকর্ড ১৮টি বল ‘ডট’ দিয়েছিলেন তিনি। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১ উইকেট নিয়েই ইতিহাস গড়েন ১৯ বছর বয়সী রশিদ খান। ওয়ানডেতে সবচেয়ে কম ম্যাচ খেলে শিকারের সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন।
১০০ উইকেট পেতে তাকে ম্যাচ খেলতে হয় মাত্র ৪৪টি। সবচেয়ে কম ম্যাচের পাশাপাশি সবচেয়ে কম বয়সেও এই মাইলফলকটি স্পর্শ করেন এই লেগস্পিনার। এর আগে রেকর্ডটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্কের দখলে। ৫২তম ম্যাচে ১০০ উইকেট পেয়েছিলেন এই ফাস্ট বোলার। স্টার্কের আগে একযুগ রেকর্ডটি ছিল সাকলায়েন মুশতাকের। সাবেক পাকিস্তানী অফস্পিনার ১০০ উইকেট নিয়েছিলেন ৫৩ ম্যাচে। এরপর রয়েছেন শেন বন্ড। কিউই এই পেসার উইকেটের সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন ৫৪ ম্যাচে। ক্রিকেট বিশ্বে এখনও হাঁটি হাঁটি পা পা করে এগোচ্ছে আফগানিস্তান। জিম্বাবুইয়েকে টপকে জায়গা করে নিয়েছে ২০১৯ বিশ্বকাপে। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নও হয় আফগানরা। অবশ্য দলীয় সেই অর্জনও আড়াল হয়ে যায় একজনের কাছে। যার গুগলিতে বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানরাও ঘোল খান, তিনি রশিদ খান।
২০১৫ সালে বুলাওয়েতে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেক হয় রশিদের। অভিষেক ম্যাচে এক উইকেট নেন তিনি। শুরুতে খুব একটা চমক দেখাতে না পারলেও দিনে দিনে বোলিংয়ে জাদু ছড়াচ্ছেন তিনি। ইতোমধ্যেই আলোড়ন ছড়িয়েছেন ক্রিকেট বিশ্বে। সীমিত ওভার ক্রিকেটে এখন তাকে সময়ের সেরা স্পিনার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: