ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মৃত শিশু দিয়ে বিদায়

মায়ের দাবির মুখে জীবিত সন্তান দিল হাসপাতাল

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ১৯ এপ্রিল ২০১৮

মায়ের দাবির মুখে জীবিত সন্তান দিল হাসপাতাল

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ নগরীর গোলপাহাড় মোড় এলাকায় অবস্থিত একটি বেসরকারী হাসপাতালে জীবিত নবজাতকের পরিবর্তে মায়ের হাতে তুলে দেয়া হলো মৃত শিশু। দাফনের পূর্বে গোসলের সময় মা দেখতে পান, কন্যা সন্তানের স্থলে সমাহিত করার ব্যবস্থা চলছে এক ছেলে সন্তানের। তিনি মৃত বাচ্চাটিকে নিয়ে নোয়াখালী থেকে ছুটে আসেন হাসপাতালে। অতপর রাতভর অপেক্ষার পর বুধবার সকালে তিনি বুঝে পান তার মেয়েটিকে। ঘটনাটি ঘটে ‘চাইল্ড কেয়ার’ নামের হাসপাতালে। নগরীর গোলপাহাড়ে অবস্থিত চাইল্ড কেয়ার হসপিটালে ৫ দিন বয়সী অসুস্থ শিশুকে চিকিৎসা করাতে নোয়াখালীর মাইজদী থেকে এসেছিলেন রোকসানা আক্তার। মঙ্গলবার সকালে তার হাতে তুলে দেয়া হয় কাপড়ে মোড়ানো একটি মৃত শিশু। শিশুটিকে নিয়ে তিনি চলে যান গ্রামের বাড়িতে। দাফনের জন্য গোসল করানোর সময় মা দেখতে পান শিশুটি একটি ছেলের। অথচ, তিনি প্রসব করেন কন্যা সন্তান। সঙ্গে সঙ্গেই ছুটে আসেন চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানায়। রাতভর এ্যাম্বুলেন্স নিয়ে অপেক্ষায় থাকেন এই মা। ভোর রাতে তাকে জানানো হয় যে, মেয়ে পাওয়া গেছে। পাশের বেডের শিশুর সঙ্গে বদল হয়ে গিয়েছিল। চাইল্ড কেয়ার হসপিটাল থেকে একটি মৃত ছেলে শিশু মায়ের হাতে তুলে দেয়ার পর দিনই জীবিত কন্যা শিশু ফিরিয়ে দেয়ার ঘটনায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। একইসঙ্গে ক্ষোভের সঞ্চারও হয় ওই পরিবার এবং স্বজনদের মধ্যে। ছুটে যান বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের বিশেষ প্রতিনিধি আমিনুল হক বাবু। প্রতিক্রিয়ায় গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, এটি খুবই গর্হিত কাজ। এর সঙ্গে সংঘবদ্ধ চক্র জড়িত থাকার বিষয়টিও উড়িয়ে দেয়া যায় না। সুষ্ঠু তদন্ত করে এর জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এদিকে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোকসানা আক্তারের সন্তানটিকে ছেলে হিসেবেই দাবি করেছিলেন। হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ ফাহিম রেজা বলেন, প্রতিটি নবজাতকের শরীরে ট্যাগ লাগানো থাকে। তাই ভুল হওয়ার সুযোগ নেই। অপরদিকে, নবজাতকের মা রোকসানা আক্তার জানান, প্রথমে তিনি তার বাচ্চাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। নগরীর শেভরন ও ট্রিটমেন্টে তার পরীক্ষাও করানো হয়। সেখানেও উল্লেখ রয়েছে মেয়ে। হাসপাতালের রেজিস্ট্রারেও মেয়ে। কিন্তু ডেথ সার্টিফিকেটে লেখা হয় ছেলে। পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহিউদ্দিন মাহমুদ জানান, মায়ের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে ডায়েরি হিসাবে লিপিবদ্ধ করে তদন্ত শুরু হয়েছিল। আদালতের অনুমতি নিয়ে শিশুটির ডিএনএ টেস্ট করে মামলা নেয়ার সিদ্ধান্তও জানানো হয় মাকে। কিন্তু এর মধ্যে মেয়েটিকে জীবিত অবস্থায় মায়ের হাতে ফিরিয়ে দিতে পেরে বেশ ভাল লাগছে।
×