ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সহিংসতা নয় সংহতি

প্রকাশিত: ০৬:২২, ১৯ এপ্রিল ২০১৮

সহিংসতা নয় সংহতি

আমাদের আচরণের আয়না হলো পরিবার ‘আমাদের সম্পর্কের আয়না পরিবার’ আমাদের সমাজের আয়না পরিবার আমাদের সভ্যতা সংস্কৃতির আয়না হলো পরিবার। আমাদের আবেগ-অনুভূতি রুচি অভ্যাস মন-মানসিকতা সামাজিকতা আদর্শ মূল্যবোধ ধর্মীয় চেতনা শিক্ষা-দীক্ষা এই সমাজ-সংসারের সামগ্রিক সবকিছুই পরিবারের মাধ্যমেই সমাজে প্রতিফলিত হয়। কালের সুদীর্ঘ পথপরিক্রমায় এই সমাজ সংস্কৃতি সভ্যতা সংস্কার ভাবিকালের কাছে পরিবহন করে কে নিয়ে যায় এ প্রশ্নের উত্তরে অবশ্যই বলতে হবে এই পৃথিবীর সবচেয়ে আদিম প্রতিষ্ঠান পরিবারের কথা। আমি যে প্রাণী থেকে সামাজিক প্রাণী মানুষে পরিণত হলাম কার কারণে এর পেছনে নিশ্চয় পরিবার। কবে যেন প্রথম পড়েছিলাম রবিঠাকুর কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন তাও তো পরিবারেরই কীর্তিকাহিনী নাকি? পরিবারই হলো আমাদের আসল পরিচয়। এক এক পরিবার আপন কর্মগুণে এই পৃথিবীর বুকে ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই করে নেয়। এ হেন পরিবারে সহিংসতা অবশ্যই পরিবারের সদস্যদের তথা সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বনাশ ডেকে আনবে, বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি করবে সমাজের স্বাভাবিকতা সুস্থতা বিনষ্ট করবে অবশেষে এই সমাজের মানুষের জন্য বিপদ বয়ে আনবে এটা মোটামুটি সকলেরই জানা। সংঘাত সহিংসতা সংঘর্ষ সমাজ গঠনের অনুকূল নয় এ কথা বহু আগেই সমাজবিজ্ঞানীরা বলে গেছেন। পারিবারিক সহিংসতা কথাটিকে পরিষ্কার করে বললে বলতে হয় পরিবারের নিকটতম সদস্যদের মাঝে পারস্পরিক কাইজ্যা ঝগড়াঝাটি মারামারি হানাহানি হাতাহাতি রক্তপাত উপেক্ষা-উপহাস চুল ধরে টানাটানি ব্যক্তির মান-মর্যাদার হানি, ব্যক্তির সম্পদ-সম্পত্তি থেকে বর্ধিত করা রাগের বিদ্বেষের বশবর্তী হয়ে ব্যক্তির জীবনকে কোন প্রকার সাহায্য সহযোগিতা সহানুভূতি না দেখিয়ে একদম সহায়তা না করে মানুষটিকে একেবারে অসহায় করে ফেলা কিংবা বিভিন্ন হামলা হুমকি ধমকি দিয়ে ব্যাক্তির সামাজিক নিরাপত্তাকে বিপদাপন্ন করে তোলা। এইসব নেতিবাচক অমানবীয় আচরণ আমাদের সমাজে অবিরাম ঘটে চলেছে আর বিশেষ করে এদেশের নিঃসহায় নারীরাই এই অমানবিকতার সবচেয়ে বড় শিকার। এই পারিবারিক সহিংসতা আইনের লঙ্ঘন মানবাধিকার পরিপন্থী এক ধরনের অপরাধ। এগুলো যে কারও ওপর করা চরম অন্যায়। এগুলো সমাজে চলতে দেয়া যায় না যে কোন মূল্যে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করতে হবে। এতে আমাদের সমাজের কোন কল্যাণ নিহিত নেই। আজকে আমরা এই সমাজের দিকে আমাদের খুব কাছের মানুষগুলোর দিকে আমাদের পাড়ার এলাকার মফস্বলের মহল্লার প্রতিবেশীদের একদম পাশের মানুষগুলোর দিকে একটু চোখ মেলে তাকালেই দেখতে পাব আদরের সন্তান মানুষ হচ্ছে না। সে যেন অস্বাভাবিক অস্থির কিছুটা বেপরোয়া ডেসপারেট কাউকে সহ্য করতে পারে না। সে যেন বিষণœ বিষাদ সিন্ধুতে ডুবন্ত। কোন নীতি আদর্শের আদবের শালীনতা সহনশীলতার সহিষ্ণুতার তোয়াক্কা করছে না। যা কিছু সৃষ্টিছাড়া তাই যেন সে করে বেড়াচ্ছে। খুব রাত করে বাড়ি ফিরছে মাদকাসক্ত হচ্ছে। পরিবারের সকলের চোখের সামনেই সে এই অঘটনগুলো করে চলেছে এগুলো কি পারিবারিক সহিংসতা তথা পিতা-মাতার মাঝে ঘটে চলা অবিরাম আত্মকলহের মনোমালিন্যের বিবাহ-বিচ্ছেদের বিষময় ফল নয়? চন্দ্রনাথ ডিগ্রী কলেজ, নেত্রকোনা থেকে
×