ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

যে হত্যা তাকে আইকনে পরিণত করেছে

প্রকাশিত: ০৭:১৬, ১৮ এপ্রিল ২০১৮

যে হত্যা তাকে আইকনে পরিণত করেছে

গত ১৪ মার্চ রাতে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরো নারী কাউন্সিল সদস্য মেরিলি ফ্রাঙ্কো কৃষ্ণাঙ্গ নারীর ক্ষমতায়ন অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার সময় তাকে ও তার গাড়ি চালক পেড্রো গোমেজকে গাড়িতেই গুলি করে হত্যা করা হয়। মানবিধাকর কর্মীর এই হত্যাকা-কে কেন্দ্র করে হাজার হাজার ব্রাজিলীয় সুসংগঠিত হয়ে এই হত্যার বিচার দাবি করে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ঘটনাটির নিন্দা জ্ঞাপন করে ফ্রাঙ্কোর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। মেরিলি ফ্রাঙ্কো ছিলেন এক উদীয়মান রাজনৈতিক তারকা। রিওর সবচেয়ে বিপজ্জনক একটি বস্তিতে জন্ম ও বেড়ে ওঠা ৩৮ বছর বয়স্ক ফ্রাঙ্কো ছিলেন আফ্রো-ব্রাজিলীয়, দরিদ্র ও নারী সম্প্রদায়সহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বার্থের দৃঢ় প্রবক্তা এবং রিও নগরীতে প্রেসিডেন্ট মাইকেল টেমেরের ফেডারেল সরকারের হস্তক্ষেপের কড়া সমালোচক। কৃষ্ণাঙ্গ, স্বামীহীন সন্তানের জননী ফ্রাঙ্কো ব্রাজিলীয় রাজনীতিতে বেশ কয়েকবার ছিলেন সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর প্রতিভূ এবং রিওর বর্তমান ৫১ সদস্যের নগর পরিষদে একমাত্র কৃষ্ণাঙ্গ নারী। এই আসনে নির্বাচিত হওয়ার সময় তিনি পঞ্চম সর্বাধিক ভোট পেয়েছিলেন। যাই হোক, এই হত্যাকা-ই তাকে রাতারাতি আইকন বা প্রবাদ নারীতে পরিণত করেছে। সারাদেশের বিভিন্ন নগরীতে ছাড়াও নিউইয়র্ক সিটি, প্যারিস, বার্লিন ও অন্যত্র হাজার হাজার নর-নারী ফ্রাঙ্কোর হত্যার প্রতিবাদ জানিয়েছে। হত্যা পরবর্তী দুই দিনে ৫৪টি দেশে ৩০ লাখেরও বেশি টুইটে তার নাম উল্লেখ করে নানা ধরনের প্রশস্তি সূচক মন্তব্য করা হয়েছে। কিছু কিছু বিক্ষোভকারী তার মৃত্যুকে ব্রাজিলে সুপরিকল্পিত বর্ণবাদের অবসান ঘটানোর দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সংগ্রামী আহ্বান হিসেবেও কাজে লাগিয়েছে। অনেকে মনে করেন যে ব্রাজিলে সামরিক ও পুলিশ বাহিনীতে দমন-পীড়ন ও নির্যাতনের কাজে ব্যবহারের বিরুদ্ধে সোচ্চার কণ্ঠ হওয়ার জন্যই ফ্রাঙ্কোকে হত্যা করা হয়েছে। মানবাধিকারবাদীরা ব্রাজিলে অপরাধ করেও আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর সদস্যরা রেহাই পেয়ে যাওয়ার যে সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে তার তীব্র সমালোচনা করেছেন। ব্রাজিলে যত বিক্ষোভ হয়েছে বহুলাংশেই তার নেতৃত্বে ছিল তরুণরা। এসব বিক্ষোভে তারা আইনানুগ নেতৃত্বের দাবি এবং দেশের প্রচলিত রাজনৈতিক ব্যবস্থায় তাদের ঘোরতর অসন্তোষ বিশেষভাবে তুলে ধরে। ফ্যাঙ্কোর অনুসারীরা তার সংগ্রামকে এগিয়ে নেয়ার একটা সুযোগ হিসেবে আগামী অক্টোবরে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। চলমান ডেস্ক সূত্র : টাইম
×