ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘বিশ্বকাপে নেইমারই নেতৃত্ব দেবেন ব্রাজিলকে’

প্রকাশিত: ০৭:০৪, ১৮ এপ্রিল ২০১৮

‘বিশ্বকাপে নেইমারই নেতৃত্ব দেবেন ব্রাজিলকে’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গত মাসের একেবারে শেষে নিজের ইনজুরি নিয়ে আপডেট দিয়েছিলেন নেইমার। ব্রাজিলিয়ান এ ফুটবল সুপারস্টার জানিয়েছিলেন আগামী ২/৩ সপ্তাহের মধ্যেই মাঠে ফিরবেন। এমনকি বর্তমানে তার কোচ প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের (পিএসজি) উনাই এমেরিও সে বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে মার্শেইয়ের বিপক্ষে লীগ ওয়ান ম্যাচে আঘাত পেয়ে ছিটকে যান নেইমার। তার আসন্ন রাশিয়া বিশ্বকাপে ব্রাজিলের জার্সিতে খেলা নিয়েও সংশয় সৃষ্টি হয়। তবে নেইমার ও এমেরির এমন ঘোষণার পর এখন কোটি ভক্ত-সমর্থকরা আশায় বুক বাঁধছেন। এ বিষয়ে কিংবদন্তি ব্রাজিলিয়ান তারকা পেলেও আত্মবিশ্বাস ব্যক্ত করেছেন যে আগামী বিশ্বকাপে ব্রাজিলকে নেতৃত্ব দেবেন নেইমার। মাত্র দুই সপ্তাহ আগে নেইমারের ইনজুরি নিয়ে পিএসজি কোচ এমেরি বলেছিলেন, ‘আমি নেইমারের সঙ্গে কথা বলেছি, সে ভালই আছে। অনেকটা সুস্থ অনুভব করছে।’ মার্শেইর বিপক্ষে গত ২৫ ফেব্রুয়ারিতে লীগ ওয়ানের ম্যাচে পায়ে আঘাত পান নেইমার। তার পায়ের হাড়ে চিড় ধরা পড়ে। এরপর থেকেই চিকিৎসার জন্য ব্রাজিলে ফিরে যান সাবেক বার্সিলোনার এই সান্তোস ফরোয়ার্ড। তারপর থেকেই পিএসজির হয়ে কোন ম্যাচ খেলতে পারেননি তিনি। কারণ ব্রাজিলের জাতীয় দলের চিকিৎসক রড্রিগো লাসমার গত ৩ মার্চ নেইমারের পায়ে সফল অস্ত্রোপচার করেন। এরপরই তিনি জানিয়েছিলেন যে, পুরোপুরি সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরতে অন্তত আড়াই থেকে তিনমাস সময় লাগতে পারে নেইমারের। আর তেমনটা হলে এবারের মৌসুমে আর পিএসজির হয়ে নেইমারের মাঠে নামাটা অসম্ভব এবং ব্রাজিলের হয়ে বিশ্বকাপেও খেলা নিয়ে আশঙ্কা ছিল। জুনে রাশিয়ায় শুরু হওয়া বিশ্বকাপের আগে নেইমারের সুস্থতা নিয়ে এখন চ্যালেঞ্জের মুখে ব্রাজিল। কেননা ব্রাজিলের বিশ্বকাপ জয়ের পথে নেইমারের দলে থাকাটা নিঃসন্দেহে অনেক বেশি জরুরী। এ বিষয়ে ৭৭ বছর বয়সী পেলে বলেন, ‘আমরা আসলে ঠিকমতো জানি না কি ঘটতে চলেছে। কিন্তু আমার প্রত্যাশা আছে যে বিশ্বকাপের আগেই সে ভাল অবস্থায় ফিরবে। কারণ ইনজুরিটা যতটা ভাবা হয়েছিল ততখানি খারাপ নয়। আমি আশাকরি আমার যেমন বিশ্বকাপ ভাগ্য হয়েছিল তারও তেমনটাই হবে। আমার বিশ্বাস নেইমারই বিশ্বকাপে ব্রাজিলকে নেতৃত্ব দেবে।’ চার বছর আগে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে লজ্জাজনকভাবে হেরেছিল সেলেসাওরা। সেই ম্যাচটিতেও ইনজুরির কারণে দলে ছিলেন না নেইমার। সেই দুঃসহ স্মৃতি এখনও তাড়া করে বেড়ায় তাকে। এমনকি ব্রাজিল দলের বিশ্বব্যাপী কোটি দর্শকদের জন্যও এখন পর্যন্ত মর্মান্তিক এক দুঃস্বপ্ন সেটি। আগামী মাসের মাঝামাঝি সময়ে আবারও নেইমারের ইনজুরি পর্যবেক্ষণ করবে পিএসজি ও ব্রাজিলিয়ান ফুটবল ফেডারেশন। ফুটবলবোদ্ধাদের ধারণা, এই সময়ের মধ্যেই সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরতে সক্ষম হবেন নেইমার। আর ব্রাজিলিয়ান এ সুপারস্টারও মাঠে ফেরার জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন, মানসিক শক্তিটাও প্রবল। তবে নেইমার ইনজুরিতে থাকলেও তিতের অধীনে ব্রাজিল কিন্তু ছুটছে অপ্রতিরোধ্য গতিতে। সম্প্রতি খেলা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচের আগেও তিতের অধীনে দুর্দান্ত পারফর্মেন্স উপহার দিয়েছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ল্যাটিন আমেরিকা অঞ্চল থেকে সবার আগেই বাছাইপর্বের বাধা পেরিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপের চূড়ান্তপর্বের টিকেট নিশ্চিত করে সেলেসাওরা। বর্তমান ব্রাজিলের সেরা তারকা নেইমার সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু ব্রাজিল দলে এই মুহূর্তে নেইমারই কেবল বিশ্বমাপের খেলোয়াড় নয়। পিএসজির এই তারকা ফুটবলার ছাড়াও ব্রাজিলের রয়েছে ফিলিপে কুটিনহো, উইলিয়ান, গ্যাব্রিয়েল জেসুস, রবার্তো ফিরমিনো, মার্সেলো, দানি আলভেজ কিংবা ডগলাস কোস্তার মতো তারকা ফুটবলার। এই মুহূর্তে ব্রাজিলের রক্ষণভাগও দারুণ শক্তিশালী। ঘরের মাঠের বিশ্বকাপে ব্যর্থ হওয়ায় অধিনায়কত্ব হারাতে হয়েছিল থিয়াগো সিলভার। সেবার বরখাস্ত হওয়া কার্লোস দুঙ্গার উত্তরসূরি হিসেবে নিয়োগ পেয়ে সেই সিলভাকে দিয়েই আত্মবিশ্বাস ফেরানোর কাজটা করেন তিতে। তার সৌজন্যেই সেন্টার হাফে মিরান্ডা কিংবা মারকুইনহোসের সঙ্গে থিয়াগো সিলভাকেই বর্তমান বিশ্বের সেরা জুটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ব্রাজিলের গোলরক্ষককে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য তাদের ঠিক সামনেই রয়েছেন ক্যাসেমিরো এবং পাউলিনহো। একটু পরিসংখ্যান ঘাটলেই দেখা যাবে তাদের সাফল্য। তাদের নিয়ে খেলা শেষ ১৯ ম্যাচে মাত্র পাঁচটি গোল হজম করেছে ব্রাজিল বিনিময়ে প্রতিপক্ষের জালে সেলেসাওরা বল জড়িয়েছেন ৩৯ বার। এসব বিষয় পর্যালোচনা করে পেলে বলেন, ‘আমি নেইমারের ফেরা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী। নতুন কোচ তিতের এখন খুব কম সময় আছে নতুন করে দল গোছানোর। তাই নেইমারকে ফিরতেই হবে। এখন ইউরোপে আমাদের প্রচুর পরিমাণে দুর্দান্ত কিছু খেলোয়াড় আছে। সমস্যাটা হচ্ছে সবাইকে এক করে দলগতভাবে সংঘবদ্ধ করাটা। আমার মনে হয় আমরা আসন্ন বিশ্বকাপে অনেক ভাল একটা দল পাব।’
×