ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রাবনী আক্তার সান

কে হচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ার নতুন অধিনায়ক?

প্রকাশিত: ০৬:৪৬, ১৮ এপ্রিল ২০১৮

কে হচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ার নতুন অধিনায়ক?

স্টিভেন স্মিথ ছিলেন তিন ফরমেটের অধিনায়ক। সহ-অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে বহুল আলোচিত বল টেস্পারিং ইস্যুতে এক বছরের জন্য সকল ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হয়েছেন দু-জনই। এমন কি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) জানিয়ে দিয়েছে ফেরার পরও আর কখনোই নেতৃত্ব পাবেন না তারা। শেষ টেস্টে টিম পেইনকে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক করা হয়। কঠিন এ সময়ে কে ধরবেন অস্ট্রেলিয়ার হাল? বোর্ড চাইলে, ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক। এবার এ্যারন ফিঞ্চ জানিয়েছেন, প্রয়োজনে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত তিনি। পেইন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। ধারণা করা হচ্ছে টেস্টের দায়িত্বটা স্থায়ীভাবে পেয়ে যাবেন তিনি। তবে সীমিত ওভারের দলের নেতৃত্বে আসার জন্য একটু বাড়তি গুণ অবশ্যই আছে ব্যাটসম্যান ফিঞ্চের। টেস্টে না থাকলেও ওয়ানডে ও টি২০র নিয়মিত সদস্য তিনি। আছে দুই ফরেটেই অল্প বিস্তর নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা। যৌক্তিক কারণ আছে ওই পদে ফিঞ্চকে বেছে নেয়ার। তবে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করেনি। ‘আমি অবশ্যই হাত তুলব এর জন্য। কিন্তু সত্যি বলতে এ নিয়ে আমি এখনও ভাবিনি।’ ক্রিকেট ডট কম ডট এইউকে ফিঞ্চ আরও বলেন, ‘এটা নিশ্চিতভাবেই খুব কঠিন সময়। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে এবং দুবাইয়ে (পাকিস্তানের বিপক্ষে) টেস্টের জন্য আগামী কয়েক মাসে পরিবর্তন তো আসবেই। সুযোগ এলে সেটা নিতে ভাল লাগবে কিন্তু এমন নয় যে আমি এটা নিয়ে খুব ভাবছি।’ কঠিন এই পরিস্থিতিতে অন্তত টেস্টে হলেও দলের হাল ধরতে তৈরি ২০১৫ সালে অবসরে যাওয়া সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্কও। ইঙ্গিতটা আগেই দিয়েছিলেন। সম্প্রতি সিডনি এক সাক্ষাতকারে ৩৭ বছর বয়সী তারকা ক্রিকেটার সেটিই পুনর্ব্যক্ত করেন, ‘আমি চাই অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট দলকে সাহায্য করতে। প্রয়োজনে টেস্ট দলের নেতৃত্বে ফিরতেও আত্মবিশ্বাসী। বয়স নিয়ে আমি ভাবিই না। এটা নিছকই একটা সংখ্যা মাত্র। দেখুন ব্র্যাড হজ এই ৪৫ বছর বয়সেও সমানে খেলে যাচ্ছেন।’ আড়াই বছর আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে গুডবাই বলেছেন মাইকেল ক্লার্ক। এরপর অবশ্য ঘরোয়া কিংবা ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগেও তাঁকে দেখা যায়নি। এরই মধ্যে ব্যাপারটি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে (সিএ) জানিয়েছেন সাবেক সাবেক অধিনায়ক। যদিও দেশটির ক্রিকেট বোর্ড থেকে এখনও অফিসিয়ালি কোন সঙ্কেত পাননি। বল টেম্পারিংয়ের ঘটনায়ই অস্ট্রেলিয়াকে টেস্ট র‌্যাংকিংয়ের চারে ঠেলে দিয়েছে বলে মনে করেন ক্লার্ক। ব্যাপারটি নিয়ে উদ্বিগ্ন তিনি। এজন্য অবশ্য সাবেক এ অজি অধিনায়ক ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রসঙ্গ সামনে টেনে আনতে চাইছে না। ‘র‌্যাংকিংয়ে পেছনে পড়াতে সবার মতো আমিও উদ্বিগ্ন। এজন্য আমি ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রসঙ্গ টানছি না। বরং এ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পাঁচ বছরের পরিকল্পনা না করে পরবর্তী ছয় মাসে আমরা কি পারি, সেটা নিয়েই চিন্তা করা উচিত। এসব ব্যাপারে যে কোনভাবে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে (সিএ) সাহায্য করতে আমি তৈরি।’ আড়াই বছর আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে গুডবাই বলেছেন মাইকেল ক্লার্ক। এরপর অবশ্য ঘরোয়া কিংবা ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগেও তাঁকে দেখা যায়নি। সেই ব্যক্তিই কিনা চাইছেন অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটের দুঃসময়ে হাল ধরতে। এ জন্য নাকি তৈরিও তিনি। এরই মধ্যে ব্যাপারটি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে (সিএ) জানিয়েছেন সাবেক সাবেক অধিনায়ক। যদিও দেশটির ক্রিকেট বোর্ড থেকে এখনও অফিসিয়ালি কোন সঙ্কেত পাননি। কেপটাউন টেস্টের তৃতীয় দিন বিকেলে ফিল্ডিংয়ের সময় শিরীষ কাগজ দিয়ে বলের আকৃতি নষ্ট করেন ক্যামেরন ব্যানক্রফট। সেদিই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে পড়ে। সন্ধ্যায় টেম্পারিং পরিকল্পনার কথা স্বীকার করেন স্মিথ। টিভিতে সেই দৃশ্য দেখার পর সঙ্গে সঙ্গেই ক্লার্কের টুইটারের ভাষা ছিল এমন, ‘এসব কিসের মাঝে ঘুম ভাঙল আমার! দয়া করে কেউ বলুক, আমি দুঃস্বপ্ন দেখছি।’ তৃতীয় টেস্টে পিছিয়ে পড়া দলকে সমতায় আনতে অস্ট্রেলিয়া দলের থিঙ্ক ট্যাংকের এমন প্রতারণার চেষ্টায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন ক্লার্ক। চ্যানেল নাইন স্পোর্টস সানডে থেকে ক্লার্ককে তখন জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, এমন বিপদে ডাক পেলে আসবেন কি না, দলের নেতৃত্ব বুঝে নেবেন কি না?, ‘যদি সঠিক ব্যক্তি (বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত) জিজ্ঞেস করে, আমি এ নিয়ে অবশ্যই ভাবব।’ বলেছিলেন তিনি। টিম পেইন গত এ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়া দলে ফিরেছেন পাঁচ বছর পর। সুতরাং টেস্টের স্থায়ী অধিনায়ক পদের জোড়ালো দাবিদার হতে পারেন দুই তারকা অলরাউন্ডার মিচেল মার্শ, পেসার প্যাট কামিন্স অথবা ব্যাটসম্যান উসমান খাজাও। মিচেল মার্শÑ ২৬ বছরের অলরাউন্ডার দারুণ প্রতিভাবান। ব্যাটে-বলে সমান ভালো। অস্ট্রেলিয়া দলের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার খেলোয়াড়দের অন্যতম একজন। বেশ কিছুদিন তার গেছে গড় পড়তা পারফরম্যান্সে। এরপর গেল অনেক দিন এমন পারফরম্যান্স যে নিজেকে দলে প্রায় প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছেন। কিংবদন্তি জিওফ মার্শের পুত্র। মিচেল ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দিয়ে ক্যাপ্টেন হিসেবে নিজেকে চিনিয়েছেন। উসমান খাজাÑ অধিনায়কত্বের দৌড়ে ঠিক আছেন বলা যায় না। তবে টপ-অর্ডার এই ব্যাটসম্যানের অভিজ্ঞতা ও ধৈর্য খুব। পাকিস্তানে জন্ম। মুসলিম। ৩১ বছর বয়সী খেলোয়াড় কঠিন পরিস্থিতির মাঝে সাবলীল থাকেন। কুইন্সল্যান্ড ও ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলের হয়ে ভারত সফরে অধিনায়ক হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। প্যাট কামিন্সÑএই পেসম্যানকে লম্বা সময়ের ঘোড়া ধরা হয়। তারুণ্যও তার পক্ষে। ২৬ বছর বয়স। একজন ফাস্ট বোলারের অধিনায়ক হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। তার জন্য এই দায়িত্ব বোঝার মতো হয়ে যেতে পারে। কিন্তু যদি ক্রিকেট কর্তারা নতুন শুরুর কথা ভাবেন তাহলে দলকে সামনে নিতে তার কথা ভাবা যেতেই পারে। এই বছরের শুরুতে সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক বলেছিলেন, তার মাঝে একজন নেতা আছে।
×