ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

এইচএসসির উত্তরপত্র গোপন ॥ অফিস সহকারী সাসপেন্ড

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ১৮ এপ্রিল ২০১৮

এইচএসসির উত্তরপত্র গোপন ॥ অফিস সহকারী সাসপেন্ড

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ পরীক্ষার খাতা (উত্তরপত্র) গোপন করার অভিযোগে শো’কজের পর যশোর শিক্ষাবোর্ডের নিম্নমান অফিস সহকারী রাসেল পান্নাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। মঙ্গলবার বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তার বিরুদ্ধে বহিষ্কার আদেশ মঙ্গলবার থেকেই কার্যকর হবে। একই সঙ্গে এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। সূত্র জানায়, যশোর শিক্ষাবোর্ডের নিম্নমান অফিস সহকারী রাসেল পান্নার বিরুদ্ধে উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষার খাতা (উত্তরপত্র) গোপন করার অভিযোগে শো’কজ করা হয়। তার কক্ষের আলমারি থেকে উদ্ধার করা হয় একশ’টি খাতা (উত্তরপত্র)। পরীক্ষার খাতা কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীর ব্যক্তিগত রুমে ঊর্ধ্বতন কাউকে না জানিয়ে রাখার কোন নিয়ম নেই। কিন্তু নিয়ম না মেনে রাসেল পান্না বাংলা প্রথমপত্রের একশ’ কপি খাতা রেখেছিলেন তার কক্ষের আলমারিতে। যা রাখা সম্পূর্ণভাবে অবৈধ। উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (উচ্চ মাধ্যমিক) সমীর কুমার কুন্ডু বলেন, তিনি শুনেছেন তার আলমারিতে খাতা (উত্তরপত্র) ছিল। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে জানানোর পর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের ব্যক্তিগত সহকারী নজরুল ইসলাম গত রবিবার খাতাগুলো উদ্ধার করেন। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র জানান, কী কারণে তিনি খাতা (উত্তরপত্র) নিয়েছেন বিষয়টি তদন্তের পর জানা যাবে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আগে শোকজ করা হয়। তিনি বলেন, তাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। যতক্ষণ তদন্ত কমিটির রিপোর্ট হাতে না আসছে ততক্ষণ রাসেল পান্নার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। তবে তাকে পরীক্ষা সংক্রান্ত সকল কাজ থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। চেয়ারম্যান প্রফেসর মোহাম্মদ আব্দুল আলীম বলেন, রাসেল পান্নার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা বিভাগে খাতা (উত্তরপত্র) নেয়ার ব্যাপারে যদি তদন্ত কমিটি সত্যতা পায় তাহলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। জামালপুরে জরিমানা নিজস্ব সংবাদদাতা জামালপুর থেকে জানান, ইসলামপুর উপজেলায় এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে অতিরিক্ত তিনটি উত্তরপত্র এবং বৃত্তভরাট করা ওএমআর শিট জব্দ করে কেন্দ্র সচিবসহ দু’জনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। সোমবার বিকেলে উপজেলার বেলগাছা উচ্চ বিদ্যালয় এ্যান্ড বিএম কলেজ কেন্দ্রে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অনুসন্ধানে উত্তরপত্র তিনটি পাওয়া যায়। কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মিজানুর রহমান গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার বিকেলে বেলগাছা উচ্চ বিদ্যালয় এ্যান্ড বিএম কলেজ কেন্দ্রে অনুসন্ধান চালান। ওই দিন বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের এইচএসসি (ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা) একাদশ শ্রেণীর হিসাব বিজ্ঞান নীতি প্রয়োগ-১ বিষয়ে অংশ নেয় ৪৬ জন পরীক্ষার্থী। পরীক্ষা শেষে বিকেল পাঁচটার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খাতা গুনে মোট ৪৯টি উত্তরপত্র পান। পরীক্ষার্থীর সংখ্যার চাইতে তিনটি উত্তরপত্র বেশি হওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অনুসন্ধানে অসদুপায় অবল্বম্বনের মাধ্যমে বাড়তি তিনটি উত্তরপত্রের খাতা কেন্দ্রের বাইরে পাঠিয়ে বহিরাগতদের দিয়ে উত্তরপত্রে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে বলে তথ্য বেরিয়ে আসে। অনুসন্ধানে দুটি উত্তরপত্র ও ওএমআর শিটের উপরে ও পেছনের অংশে কলমের কালি দিয়ে তারকা চিহ্ন পাওয়া যায়। তারকা চিহ্নিত ওএমআর শিট দুটি ৬১৪১৫৪ ও ৬১৪১২১ রোলনম্বধারী পরক্ষার্থীর। পরে অতিরিক্ত তিনটি উত্তরপত্র ও ওএমআর শিট জব্দ করে কেন্দ্র সচিব এ কে এম মোস্তাফা কামাল ও অফিস সহায়ক মোঃ রেজাউল করিম বেলালকে আটকের নির্দেশ দেন। কর্তব্যরত পুলিশ তাদেরকে আটক করে উত্তরপত্রসহ থানায় নিয়ে যায়। পরে রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ১৯৮০ সালের পাবলিক পরীক্ষাসমূহ আইনের ১১/খ ধারায় কেন্দ্র সচিব ও অধ্যক্ষ এ কে এম মোস্তাফা কামালকে ৪০ হাজার টাকা এবং অফিস সহায়ক মোঃ রেজাউল করিম বেলালকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। জরিমানার টাকা পরিশোধ করে তারা মুক্তি পান। এ সময় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ রেজাউল করিম ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ গোলাম মোস্তাফা উপস্থিত ছিলেন। ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, ওই কেন্দ্রে উত্তরপত্রের খাতা পরীক্ষা কক্ষের বাইরে পাঠিয়ে বহিরাগতদের দিয়ে উত্তরপত্রে পরীক্ষা নেয়ার অভিযোগ থাকায় আমরা এ অভিযান পরিচালনা করি। পরীক্ষা শেষে উত্তরপত্রের রোল নম্বরধারী পরীক্ষার্থীদের শনাক্ত করা যায়নি।
×