ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রাক-বাজেট আলোচনা

রড সিমেন্ট ও পাথরের দাম কমাতে একগুচ্ছ প্রস্তাব

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ১৮ এপ্রিল ২০১৮

রড সিমেন্ট ও পাথরের দাম কমাতে একগুচ্ছ প্রস্তাব

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আবাসন খাতের নির্মাণ সামগ্রীর দাম সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে আগামী বাজেটে ট্যারিফ কমানোসহ কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছে খাতটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। রডের দাম কমাতে রডসহ এম. এস পণ্য প্রস্তুতকরণ ও সরবরাহ পর্যায়ে ট্যারিফ কমানোর দাবি জানিয়েছে রি-রোলিং এ্যান্ড স্টিল মিলস এ্যাসোসিয়েশন। আর সিমেন্ট ব্যবসায়ীদের সংগঠন ৫ শতাংশ হারে অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেছে। পাথর ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের পাথরই পুনরায় উত্তোলন করার সুযোগ দেয়া হোক। মঙ্গলবার সকালে এনবিআর ভবনে রিহ্যাবের সঙ্গে প্রাক বাজেট আলোচনায় খাতটির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা এসব কথা বলেন। এতে খাতওয়ারি বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা এনবিআরের কাছে তাদের নিজ নিজ প্রস্তাব তুলে ধরেন। এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে এতে বিভিন্ন সংগঠন ও এনবিআরের উর্ধতন কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন। প্রাক বাজেট আলোচনায়, বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারাস এ্যাসোসিয়েশন ৫ শতাংশ হারে অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহারের দাবি জানায়। সংগঠনটির সভাপতি মোস্তফা কামাল বলেন, চাহিদার ৩ কোটি মেট্রিক টন সিমেন্ট দেশেই উৎপাদন হচ্ছে। বিদেশেও রফতানি করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিকভাবে কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি ও ব্যাংক সুদের হার বেড়ে যাওয়ার কারণে খাতটি বর্তমানে হুমকির মুখে পড়েছে। সংগঠনটির পক্ষে সিমেন্ট উৎপাদন খাতে অগ্রিম আয়কর বাতিল করা, ক্লিংকার আমদানির ওপর শুল্ক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা, অন্যান্য সকল মৌলিক কাঁচামালের শুল্কহার ৫ শতাংশ করা, ইনভয়েস মূল্যে শুল্কায়নের ব্যবস্থা নেয়া এবং সরকারে মেগা প্রজেক্ট ব্যবহার হয় বিধায় বাল্ক কেরিয়ারের আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন তিনি। আর স্টিল সেক্টরের পক্ষে প্রস্তাবনা তুলে ধরেন রিলোলিং এ্যান্ড স্টিল মিলস এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শহীদুল্লাহ। তিনি বলেন, রডসহ এম এস পণ্য প্রস্তুতকরণ ও সরবরাহ পর্যায়ে ট্যারিফ কমাতে হবে। গর্দা বা মেলটেবল স্ক্র্যাপ হতে প্রস্তুত হওয়া ইনগট বা বিলেট এবং ইনগট বা বিলেট হতে প্রস্তুতকৃত পণ্যের ট্যারিফ মূল্য ৬ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকায় নামিয়ে আনার প্রস্তাব করছি। এছাড়াও ফেরাস ওয়েস্ট এ্যান্ড স্ক্র্যাপ আমদানির ক্ষেত্রে সিডি ১৫০০ টাকা প্রত্যাহার ও এআইটি ৮০০ থেকে ৪০০ টাকায় নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা হয় এই সংগঠনটির পক্ষে। বাংলাদেশ পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী আবদুল আহাদ বলেন, দেশেই পাথর থাকা সত্ত্বেও পাথর উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। আমরা পুনরায় পাথর উত্তোলনের সুযোগ চাই। এছাড়াও অগ্রিম কর প্রত্যাহারের দাবি করছি। নতুন ভ্যাট আইন অনুযায়ী স্টিল মালিকরা ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট পরিশোধ করছেন বলে জানান সংগঠনের এক নেতা। তিনি এনবিআরের কাছে জমা দেয়া বাড়তি ওই টাকা ফেরত চান। এর জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘যৌক্তিক হার করে দিলে রি-ভ্যাট করার প্রয়োজন নেই। স্টিল সেক্টরের কর নিয়ে আমরা এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে কথা বলব।’ প্রাক বাজেট আলোচনায় বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অফ কনস্ট্রাকশন ও তাদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া তুলে ধরে। তাদের দাবি, দরপত্রের সময়ে অর্থাৎ যে অর্থবছরে তারা কোন প্রকল্পের জন্য চুক্তিতে যাবে, সেই অর্থবছরের হারেই যেন পুরো প্রকল্প চলাকালে তারা ভ্যাট দিতে পারে। অর্থাৎ পরের বছরগুলোতে যেন ভ্যাট বাড়ানো না হয়। প্রকল্পের ব্যয় প্রাক্কলনে কোন কর ধরা থাকে না বলে তাদের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে বলে জানান সংগঠনটির নেতারা। এর জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, সরকারী কনস্ট্রাকশনগুলো খুবই নিম্নমানের হচ্ছে। এগুলো খুব খারাপ হচ্ছে। ভ্যাট বেশি দেখে কী আপনারা কোয়ালিটি খারাপ করেন ? ইটভাঁটি মালিক সমিতির পক্ষে বলা হয়, দুই থেকে তিন বছর পর পর তাদের ওপর ভ্যাট বাড়ানো হয়। চলতি অর্থবছরে যেন কোন ধরনের ভ্যাট বাড়ানো না হয়। এ সময় ইটভাঁটি মালিক সমিতির উদ্দেশে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আপনারা আধুনিক প্রযুক্তিতে চলে আসেন।’ প্রাক বাজেট আলোচনায় এনবিআরের এক কর্মকর্তা জানান, ইটভাঁটি মালিক সমিতির কাছে বড় ধরনের বকেয়া ভ্যাট পাওনা রয়েছে।
×