ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্লাস্টিক এ্যাসোসিয়েশনের বাজেট প্রস্তাব

৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ভ্যাটমুক্ত রাখার দাবি

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ১৮ এপ্রিল ২০১৮

৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ভ্যাটমুক্ত রাখার দাবি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বছরে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয় এ রকম ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাটমুক্ত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। বরং ভ্যাটের পরিবর্তে ৩ শতাংশ হারে টার্নওভার করের আওতায় আনা হলে শিল্পপ্রতিষ্ঠান বিকশিত হওয়ার সুযোগ পাবে। ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক এ্যাসোসিয়েশনের (বিপিজিএমইএ) পূর্ণাঙ্গ বাজেট প্রস্তাবনা এসব কথা বলা হয়েছে। বিপিজিএমইএ’র সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, প্লাস্টিক শিল্প দেশের রফতানি বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে রফতানি হচ্ছে বিদেশে। বিপুলসংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে এ খাতে। এটি একটি উদীয়মান শিল্পখাত। সম্ভাবনাময় এ শিল্পখাত বিকাশ ও সম্প্রসারণে কর ও ভ্যাট আরোপ বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন। কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক কমানোসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতে বাজেটে বিশেষ ভূমিকা থাকা প্রয়োজন। এ কারণে বন্ডেড ওয়্যার হাউস লাইসেন্সপ্রাপ্তি সহজ, দ্রুত এবং অটোমেশনের আওতায় আনা প্রয়োজন। শুধু তাই নয়, দেশীয় শিল্পের সুরক্ষায় ও স্বার্থে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করা কোন ক্রমেই সমীচীন হবে না। তবে ভবিষ্যতের জন্য কাউন্টার ভ্যালিং ও এ্যান্টি ডাম্পিং ট্যাক্স আরোপের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে এবং প্রস্তুতি নিতে হবে। জানা গেছে, দেশীয় উৎপাদিত প্লাস্টিক খেলনা সামগ্রী যেমন গাড়ি, প্লেন, বাশি, পুতুল, চশমা, ঘড়ি, খেলনা সেট, খেলনা গেম, ক্রিকেট বল-ব্যাট, রেকেট, পানির গেম, খেলনা ঝুনা, পাউডার দানি, আয়নার ফ্রেম, কলম দানি, কাপড় কাঁচের ব্রাস, কাপড় ক্লিপ, প্লাস্টিক এর রেহাল, প্লাস্টিক এর বৈয়ম। এতে ১৫ ভ্যাট আরোপিত আছে। বর্তমান বাজেটে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ঢাকা চট্টগ্রামে ভ্যাট নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যা সমস্ত প্রতিষ্ঠান উপকরণ কর রেয়াত গ্রহণ করবে তাদের ওপর ১৫ শতাংশ মূসক প্রযোজ্য হবে। আর যে সমস্ত ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উপকরণ রেয়াত গ্রহণ করবে না তাদের জন্য ৩ শতাংশের ভ্যাট ধার্যের প্রস্তাব করা হয়েছে। দেশীয় খেলনার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপিত হওয়ার পর থেকে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। কেননা-দেশীয় খেলনা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ ক্ষুদ্র এদের ভ্যাট দেয়ার ক্ষমতা নেই। ভ্যাটের খাতাপত্র মেইনটেইন করার সামর্থ্য নেই। শুধু তাই নয়, ১৫ শতাংশ ভ্যাটের কারণে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি হওয়ায় বিদেশী নিম্নমানের পণ্য বাজারে আসছে। তবে ক্ষুদ্র শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হলে ভ্যাট প্রত্যাহার আবশ্যক ও প্রজ্ঞাপনটি সংশোধন করার প্রস্তাব করা হলো। ভ্যাট প্রত্যাহার হলে স্বল্পপুঁজি দিয়ে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করার জন্য উৎসাহিত হবেন। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশ ও সুরক্ষার স্বার্থে বার্ষিক বিক্রয়ের পরিমাণ ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যবসা ও শিল্প প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাটের পরিবর্তে ৩ শতাংশ হারে টার্নওভার করের আওতায় আনার প্রস্তাব করা হলো। তাই দেশীয় শিল্প প্রতিরক্ষণের স্বার্থে প্লাস্টিক শিল্পের মৌলিক কাঁচামালের আমদানি শুল্ক প্রস্তাবিত বাজেটে সর্বনিম্ন স্তরে নির্ধারণ করা বাঞ্চনীয়। ভ্যাট রেজিস্টার্ড শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমদানি শুল্ক ২ শতাংশ অথবা সর্বনিম্ন পর্যায়ে নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা যাচ্ছে। প্লাস্টিকের দরজা, জানালা, চৌকাঠ, চেয়ার-টেবিল ইত্যাদিতে ব্যবহৃত হয়। এটি পরিবেশবান্ধব এবং দেশে তৈরি হয় না, সম্পূর্ণ আমদানি নির্ভর।
×