ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আইটি সেক্টরে তারুণ্য

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ১৮ এপ্রিল ২০১৮

আইটি সেক্টরে তারুণ্য

রাজধানীতে সদ্যসমাপ্ত বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (বিপিও) সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন। তরুণদের উদ্দেশে তিনি সরকারী চাকরির দিকে না তাকিয়ে আইটি সেক্টরে মন দেয়ার কথা বলেন। কেননা দেশের তথ্য-প্রযুক্তি খাতে কর্মসংস্থানের অবারিত সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এখন এশিয়া ও আফ্রিকার অনেক দেশ থেকে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে সহায়তা চাওয়া হয়। তাই তরুণরা যাতে নিজেরাই উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারে সেজন্য তাদের তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষতা অর্জনের আহ্বান জানান। বর্তমান সরকার তথ্য-প্রযুক্তিবান্ধব। আউটসোর্র্সিংয়ে বিশেষ প্রণোদনার নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। জনশক্তির তুলনায় দেশে শ্রমবাজার অপর্যাপ্ত থাকায় বেকারত্ব দূর করতে এবং আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকার এখাতে বিশেষ প্রণোদনা দিচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টরে ফ্রিল্যান্সিং করেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক তরুণ ভাল রোজগার করছেন। এখন স্বাধীনচেতা, কর্মঠ এবং উচ্চাভিলাষী তরুণদের মধ্যে আউটসোর্সিং প্রিয় হয়ে উঠছে। কারণ কারও মুখাপেক্ষী না হয়ে ঘরে বসে অর্থোপার্জনের এ কাজটি বর্তমান বিশ্বে সম্মানজনক অবস্থানে চলে এসেছে। আর এ কাজের জন্য কেবল ইন্টারনেট সংযোগবিশিষ্ট একটি ল্যাপটপ থাকলেই হলো। কয়েক বছর হলো বাংলাদেশের তরুণরা সফলভাবে এ কাজে যুক্ত হচ্ছেন। দেশের প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার তরুণ মুক্ত পেশাজীবী (ফ্রি-ল্যান্সার) হিসেবে সক্রিয়ভাবে যুক্ত আউটসোর্সিংয়ে। অনিয়মিতভাবে যুক্ত আছেন আরও অনেকে। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে আইসিটিতে ফ্রি-ল্যান্সারের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ভারত, ফিলিপিন্স, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীরা ব্যাপক আগ্রহের সঙ্গে আউটসোর্সিংয়ে কাজ করছেন। ইন্টারনেটের কল্যাণে তারা এখন উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়েই পথ হাঁটছেন। আগামী দিনে এই তরুণরাই দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করায় বড় ভূমিকা রাখবেন। ইন্টারনেট খুলে দিয়েছে সব বন্ধ দরোজা। এখন বিশ্ব চলে এসেছে হাতের মুঠোয়। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমেই বংালাদেশে উন্নয়ন ঘটবে। বাংলাদেশের আউটসোর্সিং কর্মীদের দক্ষতা অন্য যে কোন দেশের সঙ্গে তুলনা করা যায়। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ক উপদেষ্টা আগেও বলেছিলেন, ‘আউটসোর্সিংয়ে ১৮ থেকে ৩৫ বছরের তরুণদের সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। নিজেদের উদ্যোগে তারা আউটসোর্সিং, ফ্রিল্যান্সিং, আইটি কোম্পানি গড়ে তুলতে পারে। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বা আইনজীবীর বাইরেও যে সম্মানজনক পেশা রয়েছে সেটি খতিয়ে দেখা হয় না।’ বলাবাহুল্য, নতুন জনশক্তির কাজের বিশাল ক্ষেত্র হচ্ছে আউটসোর্সিং। এছাড়া এই সেক্টরের সফটওয়্যার রফতানিও আমাদের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখতে সক্ষম। কিছুদিন আগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতরের উদ্যোগে ইনফো সরকার-৩ প্রকল্পের আওতায় দেশের বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবার উদ্বোধন করা হয়। দ্রুত গতির ইন্টারনেট নিশ্চিত করায় বিপিও খাত থেকে প্রতিবছর ৩০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি আয় করা সম্ভব বলেই প্রতীয়মান হয়। আশা করা যায়, ২০২১ সালের মধ্যে এক লাখ তরুণের কর্মসংস্থান হবে বিপিওতে। তবে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের মধ্যে এখনও আইটি দক্ষতার অভাব রয়েছে। এই কাজেও তরুণদের সম্পৃক্ত করতে পারলে তা দেশের সমৃদ্ধির জন্যে কল্যাণ বয়ে আনতে পারে।
×