ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সরকারের পতন ঘটাতে না পারলে খালেদাকে জীবিত ছাড়বে না ॥ গয়েশ্বর

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ১৮ এপ্রিল ২০১৮

সরকারের পতন ঘটাতে না পারলে খালেদাকে জীবিত ছাড়বে না ॥ গয়েশ্বর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আন্দোলন করে সরকারের পতন ঘটাতে না পারলে খালেদা জিয়াকে জীবিত মুক্তি দিবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। সে ক্ষেত্রে জেলগেটে খালেদা জিয়ার লাশ ফেরত নিতে তাদের অপেক্ষা করতে হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলীর সন্ধ্যান দাবিতে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ‘ইলিয়াস আলী মুক্তি পরিষদ’ এ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। গয়েশ্বর বলেন, আজকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিকে পাশ কাটিয়ে। আমরা যদি নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা আদায় করতে পারি, তাহলে আমাদের নেত্রীও মুক্তি পাবেন। তখন খালেদা জিয়াকে নিয়েই নির্বাচনে যাব। তবে তাকে ছাড়া নির্বাচনে যাব কি না সেই নির্দেশনা খালেদা জিয়াই আমাদের দেবেন। গয়েশ্বর বলেন, আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সেই ঐক্য যেন মান্নান ভূইয়ার মতো না হয়। খালেদা জিয়া আর তারেক রহমানকে বের করে দিয়ে নয়। আমরা আগামী দিনে নির্বাচনে যাব কি যাব না এটা নিয়ে নানা শর্ত আলোচনায় আসতে পারে। কিন্তু আমাদের শর্ত একটাই, নির্বাচন হতে হবে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার অধীনে। গয়েশ্বর রায় বলেন, আমি বেশ কিছুদিন জেলে থেকে সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছি। জেল থেকে বের হওয়ার পর অনেকেই আমাকে পরামর্শ দিয়েছেন কম কথা বলার। কিন্তু কি করব, না বললে তো মনে কথা জমা হয়ে যায়। সে কারণেই বলছি শেখ হাসিনার অধীনে যদি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাই, তাহলে ২০১৪ সালে কেন গেলাম না? বিগত বছরগুলোতে যে এত নির্যাতন হলো নেতাকর্মী ও জনগণের কাছে এখান আমরা কি জবাব দেব? গয়েশ্বর রায় বলেন, খালেদা জিয়াকে যারা জেলে পাঠিয়েছে তাদের ক্ষমতায় রেখে এদেশে গণতন্ত্রের কোন ভবিষ্যত নেই। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে জেলের তালা কিভাবে ভাঙতে হয়, এদেশের জনগণ তা দেখিয়ে দেবে। তিনি বলেন, বিএনপির অনেকেই যুক্তি দেখায় আমরা নির্বাচনে অংশ নেব, নেত্রীর মুক্তির আন্দোলনের অংশ হিসেবে, নির্বাচনে অংশ নিতে চান আন্দোলনের কৌশল হিসেবে। তবে এও কথা আছে সরকার নাকি ৩০ থেকে ৪০টি আসন বিএনপিকে দিতে চায়। আমি জানতে চাই, আসনের মালিক কি শেখ হাসিনা নাকি? যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে আমরা গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলন করছি কেন? গয়েশ্বর রায় বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে সব দলের অংশ গ্রহণে এবং বিএনপিও ওই নির্বাচনে আসবে এ কথা সকাল-বিকেল বলে চলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আমি জেলে থাকা অবস্থায় শুনেছি, এই প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে একটি গ্রুপ আমাকে ম্যানেজ করার জন্য জেলেও যাবেন। গয়েশ্বর বলেন, আন্তর্জাতিক মহল বিরোধী দল বলতে এখনও বিএনপিকে চেনে। তাই আমাদের কৌশল এখন একটাই হওয়া উচিত তা হলো জনগণের রাস্তায় নামা। এর ফলাফল অবশ্যই দৃশ্যমান হবে। অনেকেই খালেদা জিয়ার মুক্তির চেয়ে নির্বাচনকে জরুরী মনে করেন দাবি করে গয়েশ্বর রায় বলেন, আমি যখন জেলে ছিলাম, তখন কালো পতাকা মিছিলসহ নানা কর্মসূচীর কথা পত্রিকায় পড়েছি। আমার কাছে মনে হয়েছে দেশনেত্রীর মুক্তির চেয়ে নির্বাচন বেশি জরুরী। যদি এভাবেই আন্দোলন করে যান, তাহলে সরকার কী কারণে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেবে? প্রতিবাদ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ইনাম আহমেদ চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন জীবন, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, সাবেক সাংসদ শাম্মী আক্তার প্রমুখ।
×