ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ডিবির ব্যাখ্যা

আন্দোলনকারী তিন নেতাকে চোখ বেঁধে আনা হয়নি

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১৮ এপ্রিল ২০১৮

আন্দোলনকারী তিন নেতাকে চোখ বেঁধে আনা হয়নি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী তিন নেতার চোখ বেঁধে আনা হয়নি। এটি নিছক ভুল বোঝাবুঝি। মঙ্গলবার এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোটা আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনে স্মরণকালের ভয়াবহ মামলা এবং লুটপাটের সঙ্গে জড়িত কেউ গ্রেফতার হয়নি। মঙ্গলবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিবির যুগ্ম-কমিশনার আব্দুল বাতেন এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, গাড়িতে উঠিয়ে তিন নেতার মোবাইল ফোন নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের চোখ বাঁধা হয়। আন্দোলনকারী নেতাদের এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। কোটা সংস্কারের আন্দোলনের বিষয়ে ডিবির কোন অবস্থান নেই। ডিবি শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্যের বাসায় হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলাগুলো তদন্ত করছে। তদন্তের স্বার্থে তথ্যের প্রয়োজন। আর সেই তথ্য জানতে প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা নেয়া হবে। তাদের ডিবি কার্যালয়ে ডাকা হবে। হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা নেয়া হবে। সোমবার ডিবির কর্তৃক জিজ্ঞাসাবাদের পর কোটা সংস্কার আন্দোলনের তিন যুগ্ম-আহ্বায়ক এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, তারা বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির তিন যুগ্ম-আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সোমবার বেলা এগারোটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে তারা দুই দিনের মধ্যে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। অন্যথায় তারা আবার রাজপথে নামবেন বলে ঘোষণা দেন। এরপর তারা একটি রিক্সায় করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কোটা আন্দোলনে আহতদের দেখতে যাচ্ছিলেন। হাসপাতালে সামনে যাওয়ার পর তাদের ডিবি পুলিশ একটি কালো কাঁচের মাইক্রোবাসে চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে যায়। তারা তিনজন হচ্ছেন, মুহম্মদ রাশেদ খান, নুরুল হক ও ফারুক হাসান। মাইক্রোবাসে তোলার পর তাদের মোবাইল ফোন নিয়ে যায় ডিবি। পরে দুপুর আড়াইটার দিকে তাদের ছেড়ে দেয় ডিবি পুলিশ। প্রসঙ্গত, গত ৮ এপ্রিল রাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সূত্রধরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। শতাধিক আন্দোলনকারী আহত হন। ওই দিন রাত দেড়টার দিকে অন্তত পাঁচ শতাধিক লোক ভিসির বাসভবনে ঢুকে ভেতরে সব ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়। এক মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষকের গাড়িসহ দুইটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়। ভিসির বাসভবন থেকে টাকা পয়সা স্বর্ণালঙ্কার, মাছ-মাংস লুট হয়ে যায়। পরদিন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান দাবি করেন, হামলাকারীরা প্রাণনাশের জন্য এসেছিল। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে আহ্বায়করা বলেন, হামলার সঙ্গে বহিরাগতরা জড়িত। হামলাকারীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের কোন সম্পর্ক নেই। হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তারা। এমন ঘটনায় গত ১১ এপ্রিল সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষোভ প্রকাশ করে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় শাহবাগ মডেল থানায় চারটি মামলা দায়ের হয়। মামলাগুলো তদন্ত করছে ডিবি পুলিশ।
×