ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকা-সিলেট রুটে গ্রীন লাইনের আধুনিক দ্বিতল বাস সার্ভিস উদ্বোধন

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১৮ এপ্রিল ২০১৮

ঢাকা-সিলেট রুটে গ্রীন লাইনের আধুনিক দ্বিতল বাস সার্ভিস উদ্বোধন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ উন্নতমানের বিলাসবহুল বাস সার্ভিস এখন বাংলাদেশে। সর্বাধুনিক সুযোগ সুবিধা সংবলিত এইসব বাসে থাকছে যাত্রীসেবার সকল আয়োজন। আরামে বসার ব্যবস্থার পাশাপাশি থাকছে ঘুমানোর ব্যবস্থাও। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এসব আধুনিক বাসে রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন ওয়াইফাই এবং সৌজন্যমূলক মানসম্মত বুফে খাবার। ঢাকা-কক্সবাজার, ঢাকা-বেনাপোলসহ দূরপাল্লার বিভিন্ন রুটে চলছে এইসব দ্বিতল বাস। চাহিদা থাকায় বাড়ছে এসব বাসের সংখ্যা। মঙ্গলবার গ্রীন লাইন পরিবহন দ্বিতল আধুনিক বাস দিয়ে উদ্বোধন করেছে তাদের নতুন রুট। এখন থেকে ঢাকা-সিলেট রুটেও চলবে তাদের এই বাস। গ্রীন লাইন পরিবহনের প্রধান কার্যালয়ে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নৌপরিবহনমন্ত্রী মোঃ শাজাহান খান। বাংলাদেশে প্রথম গ্রীন লাইনই নিয়ে আসে এই দূরপাল্লার দ্বিতল বাস সার্ভিস। গত বছরের আগস্ট মাসে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে প্রথমবারের মতো দূরপাল্লার ডাবল ডেকার বাস সার্ভিস চালু করা হয়। সেসময় ১০টি বাস দিয়ে শুরু হয়েছিল তাদের এই সার্ভিস। এখন যুক্ত হয়েছে আরো দশটি বাস। গ্রীন লাইন পরিবহনের কর্মকর্তারা জানান, জার্মানির ‘ম্যান’ ব্র্যান্ডের এসব বাসের সম্পূর্ণ বডি মালয়েশিয়ায় প্রস্তুত। ১২ হাজার ৪০০ সিসির ৪৬০ হর্সপাওয়ারের আট চাকার ‘মাল্টি এক্সেল’ বাসগুলোতে সিটের সংখ্যা ৪৩টি। যার নিচতলায় থাকছে ১১টি আসন। বাকি ৩২টি আসন থাকছে উপরের তলায়। প্রতিটি বাসেই রয়েছে ফ্রি ওয়াইফাই সুবিধাসহ পত্রিকা পড়ার সুযোগও। অত্যাধুনিক সুবিধাসংবলিত ডাবল ডেকার বাসগুলো ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটার গতিতে চলবে। এসব বাসে ‘বিজনেস ক্লাস’ সেবা থাকবে। ঢাকা-সিলেট রুটে প্রতি আসনের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১২০০ এবং ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ২০০০ টাকা। এক পাশে দুটি, আরেক পাশে একটি করে আসনবিন্যাস করা আছে। ডাবল ডেকারের বিভিন্ন রুটে যাতায়াতের ক্ষেত্রে রয়েছে বিভিন্ন সময়সূচী। দূরপাল্লার যাত্রীদের আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য স্লিপার কোচের মাধ্যমেও যাত্রীসেবা দিয়ে যাচ্ছে পরিবহনটি। স্লিপার কোচে মূলত খুব আরামে বাসাবাড়ির বিছানার মতো ঘুমিয়ে গন্তব্যস্থানে যাওয়া যাবে। সিঙ্গেল এবং ডাবল সিটের প্রত্যেকটিতে আলাদা কেবিনের আদলে তৈরি। এসব স্লিপার কোচ চলছে ঢাকা-কক্সবাজার আর ঢাকা-কলকাতা। দেখতে অনেকটা ট্রেনের কেবিনের মতোই। মোট ৩০ সিটের এই কোচের এক সারিতে উপরে নিচে ডাবল স্লিপার সিট রয়েছে ২০টি এবং উপরে নিচে সিঙ্গেল স্লিপার সিট রয়েছে ১০টি। আরামদায়ক এক ঘুমেই পৌঁছে যাওয়া যায় গন্তব্যে। ঢাকা-কক্সবাজার রুটে প্রতি আসনের ভাড়া ২৫০০ টাকা। প্রতি আসনের পাশে মোটা ও মোলায়েম কাপড়ের পর্দা লাগানো রয়েছে। পর্দা দিয়ে ঢেকে দিলে যে কারো মনে হবে এটি একটি আলাদা কক্ষ। ওয়াইফাই সুবিধাতো আছেই। চালকরা বলছেন, আরামদায়ক যাত্রা আর বাসার মতো ঘুমানো যায় বলে এসবেরও চাহিদা প্রচুর। ডাবল ডেকার এবং স্লিপার কোচে আরো একটি বিশেষ সুবিধা রয়েছে তা হলো যাত্রাপথে সকাল, দুপুর বা রাতের বুফে খাবার। নির্দিষ্ট হোটেলে যাত্রাবিরতিতে একাধিক খাবার আইটেম দিয়ে সাজানো মেন্যু যা ভাড়ার সাথেই সংযুক্ত। এজন্য আলাদা কোন টাকা লাগবে না। গ্রীন লাইন পরিবহনের জেনারেল ম্যানেজার আব্দুস সাত্তার বলেন, আগে একটি স্লিপার কোচ দশটায় চলাচল করলেও এখন থেকে দুটি চলবে। যা রাত ৮টা এবং রাত ১০টা। একই রুটে ডাবল ডেকার দুটি চলবে রাত ৯টা ও রাত ১০টার। আর ঢাকা-সিলেট রুটে ৬টা ডাবল ডেকার চলবে। আর ঢাকা-চট্টগ্রাম তো আগে থেকেই আছে বলেও জানান তিনি। দ্বিতল বাস ও স্লিপার কোচ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, উন্নয়নের মহাসড়কে দেশ এগিয়ে চলেছে এবং উড়াল সেতু নির্মাণের পাশাপাশি অত্যাধুনিক বিলাসবহুল গাড়িও আমদানি করা হচ্ছে। সারা বিশ্বে সড়ক পরিবহনে আধুনিক মানসম্মত গাড়ি চলাচল করছে। বাংলাদেশেও যুগের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আধুনিক মানসম্মত গাড়ির প্রয়োজন তাই মানুষের সুবিধার জন্য বিলাসবহুল গাড়ি আমদানি করা হচ্ছে। গ্রীন লাইন পরিবহনের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আলাউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি এবং শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান আক্কাস উদ্দিন মোল্লা প্রমুখ। বাসের টিকিট কার্যক্রম পুরোটাই কম্পিউটারাইজ পদ্ধতিতে করা হয়। অনলাইনেও টিকেটিং সুবিধা চালু রয়েছে।
×