ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আফ্রিকার সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গে মৃদুলা

প্রকাশিত: ০৭:২০, ১৭ এপ্রিল ২০১৮

আফ্রিকার সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গে মৃদুলা

ডিপ্রজন্ম - আপনার সম্পর্কে বলুন। মৃদুলা - ঢাকা কমিউনিটি মেডিক্যাল কলেজে পড়ছি। জন্ম ঢাকায়। বাবা আবু হেনা ও মা ফরিদা আক্তার। বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি)-এর সদস্য ছিলাম। পর্বতারোহণের প্রস্তুতির শুরুটা সেখান থেকেই। ডিপ্রজন্ম - কিলিমাঞ্জারো যাত্রার গল্পটা বলুন। মৃদুলা - পরিকল্পনা ছিল অনেকদিন আগে থেকেই। পৃথিবীর সব মহাদেশের শীর্ষ শৃঙ্গে দেশের পতাকা মেলে ধরার তীব্র ইচ্ছা আর পর্বতারোহণের চ্যালেজ্ঞিং নেশা আমাকে সফল করেছে। যাত্রার প্রথম থেকে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের (বিএনসিসি) সহযোগিতা গতি দিয়েছে আমার প্রস্তুতিতে। এভাবেই যাত্রার প্রস্তুতি ও শুরু। এর আগেও আমি এভারেস্টের ক্যাম্প ২তে গিয়ে ফিরে এসেছি। তাই ইচ্ছাটা আরও তীব্র ছিল আমার। এ সময়ের কিলিমাঞ্জারো কিন্তু একদম অন্যরকম, অন্য সময়ের নয় মোটেই, মার্চের তীব্র বরফে ঢাকা থাকে এ মৌসুমে পর্বতটি। আনন্দটা দ্বিগুণ হয় যখন এ রকম একটি সময়ে অর্জনটি আসে। ডিপ্রজন্ম - দেশের কনিষ্ঠ নারী পর্বতারোহী আপনি। আপনার অর্জনটা বেশ বড়, কিভাবে দেখছেন। মৃদুলা - হ্যাঁ, বাংলাদেশের কনিষ্ঠ নারী পর্বতারোহী হিসেবে এ চূড়ায় আরোহণ করি ৪ মার্চ। ১৯ হাজার ৩৪১ ফুট উচ্চতার এ শৃঙ্গে আরোহণ শেষে যখন ফিরি সত্যি খুব আনন্দ লাগছিল। ডিপ্রজন্ম - পরিবারকে পেয়েছেন পাশে? তাদের অনুভূতি যদি জানাতেন- মৃদুলা - ভারতের একটি পর্বতারোহণের প্রশিক্ষন টিমের ক্যাম্পে ডাক পাওয়ার আগ পর্যন্ত পরিবারের সমর্থন পাওয়াটা কঠিন ছিল। বাবা একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত, মা বাংলাদেশ ব্যাংকে। এমন অবস্থায় তাদের ইচ্ছার বাইরে যেতেও পারিনি, মেডিক্যালে পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের শখটা পূরণে পরিবারকে পাশে পেয়েছি অনেক বেশি। এখন সর্বোচ্চ সমর্থনই করেন তারা। ডিপ্রজন্ম - মাউন্ট এভারেস্টে উঠতে গিয়ে ফিরে আসার গল্পটা যদি জানাতেন। মৃদুলা- হিমালয় পর্বতমালার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয়ের অভিযানে নামি, ২০১৭ সালের ১৫ এপ্রিল হিমালয়ের বহু কাক্সিক্ষত ক্যাম্প-২ তেও পৌঁছাই। ভূমি থেকে ২২ হাজার ফুট ওপরে পৌঁছে গিয়েছিলাম। তবে ভারি তুষারপাতসহ বৈরী আবহাওয়া এবং শেরপাদের পায়ে সমস্যা হলে অভিযান অসমাপ্ত রেখেই চলে আসতে হয়। ডিপ্রজন্ম - বিএনসিসির কথা বলছিলেন... মৃদুলা - আমাকে তৈরি করেছে বিএনসিসি। আমি কলেজে বিএনসিসির সঙ্গে দৃঢ়ভাবে যুক্ত হই। আমার কিলিমাঞ্জারো যাত্রায় পুরো সমর্থন দেন তারা, কলেজ ছাড়ার এতদিন পরেও আমাকে তারা নিজেদের মনে করে যে সমর্থন দিয়েছেন সেটা অসাধারণ। দু’জন মানুষের কাছে আমি অনেক কৃতজ্ঞ, তারা হলেন কর্নেল নওশাদ এবং বিএনসিসির বর্তমান পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এসএম ফেরদৌস। ডিপ্রজন্ম - নতুন যারা পর্বতারোহণে যেতে চায় তাদের জন্য... মৃদুলা - আমার অর্জনটা আমার জন্য অনেক বড়, আমি অনেক কম সময়ে বড় লক্ষ্যে আগাচ্ছি। তাই যারা আগ্রহী তাদের বলব, সাহস নিয়ে এগিয়ে আসুন। এই এগিয়ে আসাটা পর্বত জয়ের কষ্টকে হাসিতে পরিণত করবে।
×