ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ফরিদপুরে সংঘর্ষে নিহত ১ ॥ আহত অর্ধশত

প্রকাশিত: ০৭:১৬, ১৭ এপ্রিল ২০১৮

ফরিদপুরে সংঘর্ষে নিহত ১ ॥ আহত অর্ধশত

নিজস্ব সংবাদদাতা, ফরিদপুর, ১৬ এপ্রিল ॥ সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত ও অর্ধশত আহত হয়েছে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটিয়ে ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সোমবার ভোর ৬টা হতে বেলা ১০টা পর্যন্ত সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে কৃষ্ণপুর বাজারসহ আশপাশের এলাকায়। জানা গেছে, ওই এলাকার আধিপত্য নিয়ে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ইউপি আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ফকির বেল্লাল হোসেন এবং সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান চৌধুরী আব্দুল কাইউম হিরুর মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। বর্তমানে সাবেক চেয়ারম্যানের গ্রুপকে নেতৃত্ব দেন ইউনিয়নের নিজ গ্রামের বাসিন্দা আখতারুজ্জামান তিতাস। আখতারুজ্জামান কৃষ্ণপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি। বর্তমান ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের সমর্থকের মধ্যে বিরোধে নতুন মাত্রা পায় ১৪২৫ সালে কৃষ্ণপুর হাটের ইজারা নিয়ে। নতুন বাংলা বছরে কৃষ্ণপুর হাটের ইজারা আখতারুজ্জামানের সমর্থক কুদ্দুস সরদার পান। গতবার এ হাটটি ইজারা নিয়েছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন নিজে। এ বছর বিল্লাল হোসেনের ভাই ইনজামুল হক মিঠুু ওই হাটের ইজারা নেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পূর্বের বিরোধ ও হাটের ইজারার দ্বন্দ্বে গত ১০ এপ্রিল থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা চলে আসছিল। সোমবার সকাল ৬টা থেকে সংঘর্ষ আবার শুরু হয়ে। এ সংঘর্ষে ইউপি চেয়ারম্যানের পক্ষে শৈলডুবি, পশ্চিম ভাষাণচর, উত্তর ভাষাণচর, চাঁদপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের লোক অংশ নেয়। সাবেক চেযারম্যানের পক্ষে রথখোলা, নিজগ্রাম, রামনগর, তালমা, রাধানগর, ভাবুকদিযা, ডাঙ্গিসহ বিভিন্ন গ্রামের লোকজন অংশ নেয়। সংঘর্ষে দুই পক্ষের দুই সহস্র্রাধিক লোক ঢাল, সড়কি, বল্লম, ট্যাটা ও ইটসহ বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র অংশ নেয়। থেমে থেমে প্রায় চার ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষের সময় সকাল ৭টার দিকে কৃষ্ণপুর বাজারে প্রতিপক্ষের কোপে নিহত হন সাবেক চেয়ারম্যানের সমর্থক রাধানগর গ্রামের মান্নান সিকদার (৫৫)। সংঘর্ষে দুই পক্ষের অন্তত অর্ধশত আহত হন। সংঘর্ষের সময় কৃষ্ণপুর বাজারে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের সমর্থকদের ৩০টি দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। পরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ইউপি চেয়ারম্যান ফকির বিল্লাল হোসেন বলেন, রবিবার বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুর শহরে কোর্ট এলাকায় আমার ভাইয়ের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার বিকেলে ও সোমবার সকালে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের সমর্থক আকতারুজ্জামান বলেন, আমার এক সমর্থক বাংলা বছর থেকে কৃষ্ণপুর বাজারের ইজারা পেয়েছেন। বিল্লাল ফকিরের ভাই শিডিউল জমা দিয়েও ইজারা পায়নি। সোমবার ছিল ওই বাজারের প্রথম হাট। আমরা যাতে হাটের ইজারা ঠিকমতো তুলতে না পারি এ জন্য ভাইয়ের ওপর কথিত হামলার গুজব ছড়িয়ে এক অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে ইউপি চেয়ারম্যান।
×