ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

প্রাইম ব্যাংকের তারল্য সঙ্কট নেই

প্রকাশিত: ০৭:০৫, ১৭ এপ্রিল ২০১৮

প্রাইম ব্যাংকের তারল্য সঙ্কট নেই

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ব্যাংকিং খাতে কোন তারল্য সঙ্কট নেই বরং তারল্যর অসামঞ্জস্যতা আছে। এই অসামঞ্জস্য দূর করা গেলে ব্যাংকিং খাতে তারল্য সঙ্কট থাকবে না। সোমবার রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে প্রাইম ব্যাংকের ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে প্রাইম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও রাহেল আহমেদ এসব কথা বলেন। এ সময় ব্যাংকটির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিবুর রহমান, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান চৌধুরী, মোঃ গোলাম রব্বানী, মোঃ তৌহিদুল আলম খান ও সৈয়দ ফরিদুল ইসলামসহ উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। রাহেল আহমেদ বলেন, প্রাইম ব্যাংকে কোন তারল্য সঙ্কট নেই। আমরা এখনও অনেক নতুন গ্রাহককেও বড় অংকের টাকা ঋণ দিচ্ছি। বাস্তবতা থাকলে কোন গ্রাহককে এক শ’ থেকে দেড় শ’ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ দেয়া হচ্ছে। গত তিন মাসে অনেক ব্যাংকে তারল্য নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হলেও প্রাইম ব্যাংকে কোন সঙ্কট হয়নি। এক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সিআরআর কমানোর ফলে ব্যাংকিং খাতে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে কিনা তা বুঝতে কিছুটা সময় লাগবে। সিআরআর কমানোর সঙ্গে সঙ্গে রাতারাতি পরিবর্তন আসবে এটা আশা করা ঠিক না। তবে, আমরা মনে করি যেভাবে ব্যাংকিং খাত নিয়ে কাজ করা হচ্ছে এভাবে চললে আগামী ৬ থেকে ৮ মাসের মধ্যে ব্যাংকিং খাতের পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হবে। প্রাইম ব্যাংকের এমডি বলেন, ব্যাংকিং খাত বিপর্যযের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এটা আমরা মনে করি না। বাংলাদেশের অর্থনীতি একটা বিবর্তনের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। ব্যাংকিং খাতও দেশের অর্থনীতির সঙ্গে সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে ব্যাংকিং খাত কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। এই খাতে কিছুটা চড়াই উৎড়াই সব সময় ছিল, আছে এবং থাকবে। শুধু বাংলাদেশে নয় পৃথিবীর সব জায়গায় এটা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, প্রাইম ব্যাংকের ঋণ আমানতের অনুপাত (এডিআর) কখনও ৮৩ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি ছিল না, এখনও নেই। প্রাইম ব্যাংক কখনও আমানত সংগ্রহের ক্ষেত্রে দুই অঙ্কের ঘরে যায়নি। আমাদের গড় আমানত সংগ্রহের ক্ষেত্রে সুদের হার ৮ শতাংশের কম। তিনি বলেন, আমরা এসএমই ও কনজ্যুমার ব্যাংকিংকে ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করছি। আগামী ৬ মাস থেকে ১ বছরের মধ্যে একটি বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে আমাদের। এই পরিবর্তনের জন্য ব্যাংকের শাখাগুলোকে শক্তিশালীকরণ, জনশক্তির দক্ষতা উন্নয়ন, প্রযুক্তির ব্যবহার, এনপিএল কমিয়ে আনাসহ সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা চাই ২০২১ সালের মধ্যে প্রাইম ব্যাংকের প্রবৃদ্ধিতে এসএমই ও কনজ্যুমার ব্যাংকিংয়ের অবদান ৪০ শতাংশের বেশি থাকবে। তিনি বলেন, এনপিএল (নন পারফরমিং লোন) বাংলাদেশের ব্যাংকিং জগতে বড় সমস্যা। তবে প্রাইম ব্যাংক এই এনপিএলকে একটি পর্যায়ে (৫% এর ওপরে) আনতে পেরেছে। এখন অনেক দেখে শুনে আমরা ঋণ বিতরণ করছি। যাতে নতুন করে আর এনপিএল না বাড়ে। ২০১৮ সাল হবে আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এরপরে আমরা এনপিএলকে একটা ভাল অবস্থানে নিয়ে আসতে পারব। উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সালের ১৭ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক যাত্রা শুরু করে। সর্বশেষ ২০১৭ সালে প্রাইম ব্যাংকের আমানতের পরিমাণ ছিল ১৯ হাজার ৯০১ কোটি টাকা। একই সময়ে ব্যাংকটির বিনিয়োগের পরিমাণ ১৯ হাজার ৮শ’ ৩২ কোটি টাকা।
×