ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ইপিএলে ফেবারিটদের জয়

প্রকাশিত: ০৬:৫১, ১৬ এপ্রিল ২০১৮

ইপিএলে ফেবারিটদের জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের হতাশা কাটিয়ে প্রিমিয়ার লীগে দারুণভাবে ফিরে এসেছে ম্যানচেস্টার সিটি। শনিবার ওয়েম্বলী স্টেডিয়ামে পেপ গার্ডিওলার দল ৩-১ গোলে পরাজিত করেছে টটেনহ্যাম হটস্পারকে। এর ফলে শিরোপা জয়ের আরও কাছাকাছি পৌঁছে যায় সিটিজেনরা। রবিবার যদি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ওয়েস্ট ব্রমউইচের সঙ্গে ড্র করে তাহলেই লীগ শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার কথা ম্যানসিটির। দিনের অন্য ম্যাচে দুই গোলে পিছিয়ে থেকেও সাউদাম্পটনের বিপক্ষে ৩-২ ব্যবধানে নাটকীয় জয় তুলে নেয় চেলসি। স্পারসদের পরাজয়ে চেলসির সামনে আবারও শীর্ষ চারে থেকে আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে সরাসরি খেলার সুযোগ তৈরি হয়েছে। তবে বোর্নমাউথকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে লিভারপুল শীর্ষ চারে ঠিকই তাদের অবস্থান শক্তিশালী করে ফেলেছে। গত সপ্তাহে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে ৩-২ গোলে হেরে শিরোপা জয় থেকে বঞ্চিত হয় ম্যানসিটি। এরপর সপ্তাহের মাঝামাঝিতে লিভারপুলের কাছে হেরে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নেন তারা। তবে শনিবার আবারও প্রমাণ করেছে যে প্রিমিয়ার লীগের আধুনিক যুগে কেন তাদের সর্বকালের অন্যতম সেরা দলগুলোর সঙ্গে তুলনা করা হয়। ডিসেম্বরে ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে সিটিকে লীগের প্রথম পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ দিয়েছিল এই স্পারসরাই। ম্যাচ শেষে গার্ডিওলা বলেন, ‘ম্যাচ শুরুর ১০-১৫ মিনিটের মধ্যেই আমি বলেছি আমরাই চ্যাম্পিয়ন হব। যা কিছুই হোক না কেন এই খেলোয়াড়রা অসাধারণ। সত্যিকার অর্থেই তারা প্রতিভাবান। গত সপ্তাহে তাদের সঙ্গে যা হয়েছে তা দুঃখজনক। কিন্তু লীগে তারা শিরোপার যোগ্য দাবিদার। আর এখন তো শিরোপা হাতে তোলাটা কেবলই সময়ের ব্যাপার। ইউনাইটেডের বিপক্ষে আমাদের প্রথম সুযোগ ছিল। এখন সেই সুযোগ আসছে সোয়ানসি সিটির বিপক্ষে ম্যাচে। এই ম্যাচেই আমরা চ্যাম্পিয়ন হবার চেষ্টা করব।’ ম্যাচ শুরুর ২২ মিনিটের মধ্যে গ্যাব্রিয়েল জেসুসের গোলে এগিয়ে যায় সিটি। তিন মিনিট পরে ইকে গুনদোগান স্পট কিক থেকে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। স্পারস গোলরক্ষক হুগো লোরিসের বিপক্ষে রাহিম স্টার্লিং পেনাল্টি আদায় করে নেন। যদিও রিপ্লেতে দেখা যায় ঘটনাটি গোল এরিয়ার বাইরে ঘটেছে। গত সপ্তাহে ইউনাইটেডের বিপক্ষে বিরতির আগে সিটি ২-০ গোলে এগিয়ে থেকেও পরাজয়বরণ করেছিল। কালকের ম্যাচেও তার পুরনরাবৃত্তির শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। বিরতির ঠিক আগে ক্রিস্টিয়ান এরিকসেন সিটিকে যখন ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন তখন অজানা আশঙ্কায় পেয়ে বসেছিল সিটিজেনদের। যদিও এবার আর কোন অঘটন ঘটেনি। ৭২ মিনিটে সিটির জয় নিশ্চিত করেন স্টার্লিং। এর আগে অবশ্য জেসুস ও স্টার্লিং বেশ কয়েকটি সহজ সুযোগ নষ্ট করেছেন। দিনের অপর ম্যাচে বোর্নমাউথের বিপক্ষে লিভারপুলের জয়ে আরও একবার নিজেকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মোহামদ সালাহ। ম্যাচের ৭ মিনিটে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন সাদিও মানে। ৬৯ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সালাহ। এরপর ৯০ মিনিটে দলের পক্ষে তৃতীয় গোলটি করেন রবার্তো ফিরমিনো। প্রিমিয়ার লীগের শিরোপা হাতছাড়া হয়ে গেছে আরও আগেই। তবে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে এবার দুর্বারগতিতে ছুটছে লিভারপুল। দীর্ঘ ১০ বছর পর ইউরোপ সেরার এই টুর্নামেন্ট থেকে সমিফাইনালের টিকেট কেটেছে তারা। যার পেছনের নায়ক সালাহ। চলতি মৌসুমের শুরু থেকেই অসাধারণ খেলা লিভারপুলের এই মিসরীয় ফরোয়ার্ড। এবার নতুন এক মাইলফলক স্পর্শ করলেন সালাহ। বোর্নমাউথের বিপক্ষে ম্যাচের ৬৯ মিনিটে অলরেডদের হয়ে দ্বিতীয় গোলটি করেন তিনি। আর এই গোলের সৌজন্যেই নতুন রেকর্ড গড়েন পাঁচ ফিট নয় ইঞ্চি উচ্চতার এই তারকা ফুটবলার। দিদিয়ের দ্রগবাকে ছাড়িয়ে আফ্রিকার প্রথম ফুটবলার হিসেবে প্রিমিয়ার লীগে ৩০ গোল করার মাইলফলক স্পর্শ করলেন সালাহ। ২০০৯-১০ মৌসুমে চেলসির হয়ে ২৯ গোল করা দিদিয়ের দ্রগবাকে স্পর্শ করেছিলেন আগেই। এক গোল করে তার সামনে ছিল আইভরিকোস্টের এই কিংবদন্তি ফুটবলারকে ছাড়িয়ে যাওয়ার হাতছানি। বোর্নমাউথের বিপক্ষে সেই কাজটাই করলেন তিনি। এই গোলের সৌজন্যে লিওনেল মেসি এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোদের টপকে চলতি মৌসুমে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লীগের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ৩০ গোল করার কীর্তিটাও এখন সালাহর দখলে। শুধু তাই নয়, বোর্নমাউথের বিপক্ষে ২৫ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ডের গোলটি ছিল চলতি মৌসুমে সবধরনের প্রতিযোগিতায় ৪০তম গোল। ৪৫ ম্যাচে লিভারপুলের প্রতিনিধিত্ব করে ৪০ গোল করেন তিনি। সেই সঙ্গে লিভারপুলের ইতিহাসে এক মৌসুমে তৃতীয় ফুটবলার হিসেবে ৪০ কিংবা তারও বেশি গোল করার রেকর্ডও গড়েন সালাহ। তার আগে এই রেকর্ড গড়া দু’জন হলেন রজার হান্ট (১৯৬১-৬২) ও আয়ান রাশ (১৯৮৩-৮৪ এবং ১৯৮৬-৮৭)।
×