ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কলকাতাকে সাকিবের মোক্ষম জবাব

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ১৬ এপ্রিল ২০১৮

কলকাতাকে সাকিবের  মোক্ষম জবাব

শাকিল আহমেদ মিরাজ ॥ কলকাতা নাইটরাইডার্সের (কেকেআর) হয়ে খেলেছেন টানা সাত বছর। নিজের দ্বিতীয় বাড়ি বানিয়ে ফেলা ফ্র্যাঞ্চাইজিটির হয়ে দু’দুটি শিরোপা জয়ে সঙ্গী হয়েছেন। পেশাদার লীগে যে কোন দল যে কাউকে ছেড়ে দিতেই পারে। কিন্তু প্রাণের সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়া একজন বাঙালী ক্রিকেটারকে কেকেআর যেভাবে বিদায় করে সেটি ছিল অনেকটাই অপ্রত্যাশিত। সাকিবকে ছেড়ে দিয়ে নিদেনপক্ষে একটা বিবৃতিও দেয়া হয়নি। এবার নতুন দল সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে সেই কেকেআরকে সমুচিত জবাব দিলেন তুখোড় এ অলরাউন্ডার। সোমবার আইপিএল ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কলকাতার ঘরের মাঠ ইডেনে কলকাতাকে ৫ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে হায়দরাবাদ। বোলিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ ২ উইকেট, ফিল্ডিংয়ে দুটি ক্যাচ, ব্যাট হাতে ২ চার ও ১ ছক্কায় ২৭- সাকিব আল হাসান কেন ম্যাচসেরা নন এমন প্রশ্নই ঘুরছিল। তবে মুখে কিছু না বলে মাঠেই জবাবটা দিয়েছেন টাইগার ক্রিকেটের এই প্রাণভোমরা। এ পর্যন্ত তিন ম্যাচের সবকটি জিতে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে হায়দরাবাদ। প্রতিটি ম্যাচেই চমৎকার খেলছেন সাকিব। ম্যাচ বাই ম্যাচ পারফর্মেন্সের উন্নতি দৃশ্যমান। তবে ইডেনে কলকাতার বিপক্ষে ম্যাচে বাড়তি দৃষ্টি ছিল তার ওপর। যদিও ম্যাচের আগে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, পুরনো দলের বিপক্ষে বাড়তি কোন জিদ নেই তার। কেবল মাঠের পারফর্মেন্সে কেকেআরের গায়ে জ্বালা ধরিয়ে দিয়েছেন টাইগার অলরাউন্ডার। উঠে এসেছেন সংবাদ মাধ্যমের আলোচনায়। ক্রিকেটের জনপ্রিয় সাইট ইএসপিএনক্রিকইনফোর শিরোনাম, ‘সাবেক নাইট রাইডার সাকিবের নেতৃত্বে কলকাতায় সানরাইজার্সের প্রথম জয়’। আনন্দবাজার লিখেছে ‘কেকেআরের কাটা প্রাক্তন তিন নাইট’। সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার ও বহুল প্রচারিত পত্রিকাটির নিয়মিত কলাম লেখক অশোক মালহোত্রার বিশ্লেষণে বারবার ঘুরেফিরে এসেছে সাকিবের প্রসঙ্গ। আর ‘এই সময়ে’র শিরোনাম আরও ঝাঁজালো: ‘বাতিল বাঙালীর নববর্ষের প্রতিশোধ’। বল হাতে ক্রিস লিন আর সুনীল নারাইনের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট দুটি নিয়েছেন। নিয়েছেন দুটি ক্যাচ। এরপর ব্যাট হাতে ২১ বলে ২৭ করেছেন, অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের সঙ্গে গড়েছেন ৫৯ রানের জুটি। ব্যাটে-বলে-ফিল্ডিংয়ে আক্ষরিক অর্থেই অলরাউন্ডার সাকিব জয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন এদিন। একটি পত্রিকা তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে, ‘নাইটদের কাঁটা হয়ে বিঁধলেন তিন সাবেক নাইট। সাকিব চার ওভারে ২১ রান দিয়ে দুই উইকেট নেয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতেও ম্যাচ জেতানো জুটি গড়লেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের সঙ্গে। আন্দ্রে রাসেলকে স্কোয়ারকাটে পয়েন্টের ওপর দিয়ে ছক্কা মারলেন সাকিব। শটটা যেন চাবুকের মতো সেইসব কেকেআর কর্তার ওপর আছড়ে পড়ল, যারা তাকে ঢাকার প্রতিবেশী শহর থেকে চলে যেতে দিয়েছেন হায়দরাবাদে।’ এই সময়ের রিপোর্টের শুরুটা এমন, ‘সুযোগ ছিল। কিন্তু নিলামে তাকে ব্রাত্যই করে রেখেছিল কেকেআর। সাকিব সেসব নিয়ে ভাবেননি। তবে নববর্ষের প্রাক্কালে পুরনো টিমকে কাঁদিয়ে ছাড়ার পেছনে বড় ভূমিকা রেখে গেলেন তিনি।’ দ্য টেলিগ্রাফের রিপোর্ট, ‘সাকিব শেষ পর্যন্ত হয়তো ব্যাট করতে পারেননি, কিন্তু তার যা পারফর্মেন্স, প্রথমে বল হাতে, পরে ব্যাট হাতে খুবই প্রয়োজনীয় এক ইনিংস, এটা নিশ্চিত রবিবার বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনটা তিনি দারুণ উপভোগই করেছেন।’ আরেক সাইটে লিখেছে, ‘শনিবার দুপুরে শহরের এক বাঙালী রেস্তরাঁয় বন্ধুদের সঙ্গে বাঙালী খাবার খেয়ে আগাম নববর্ষ পালন করেন সাকিব। ইডেনে রাতেও আরেক দফা উদ্যাপনে ভাসলেন তিনি।’
×